শহরে বসে আর কৃষি-বিজ্ঞান নিয়ে গুরু-গম্ভীর কথা নয়। কৃষির উন্নতিতে এ বার থেকে গ্রামে গিয়ে কৃষকদের সঙ্গে বসেই সেই কাজ করতে হবে আধিকারিকদের। দিতে হবে উন্নত প্রশিক্ষণ-সহ আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারের সুযোগও। খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ ও উদ্যান পালন দফতরের উদ্যোগে সেই কাজ শুরু হতে চলেছে ভাঙড় থেকে। আগামী সোমবার ভাঙড়-২ বিজয়গঞ্জ বাজারে প্রায় হাজার দেড়েক কৃষককে নিয়ে তেমনই একটি প্রশিক্ষণের আসর বসছে। যেখানে আধুনিক প্রযুক্তির মাধ্যমে কী ভাবে উন্নত চাষ করা যায় তা হাতে-কলমে শেখানো হবে।
রেজ্জাক মোল্লা দফতরে মন্ত্রী হওয়ার পরই মাঠে নেমে কৃষকদের প্রশিক্ষণের কথা ভাবতে শুরু করেছেন বলে দাবি করছেন উদ্যানপালন দফতরের কর্তাদের একাংশ। তাঁরা জানিয়েছেন, শহরের আলোচনাগুলিতে কৃষকদের হয়ে মূলত ফোড়েরাই হাজির হতেন। উদ্যানপালন দফতরের বিভিন্ন জেলার আধিকারিকরাও ভিড় জমাতেন। কিন্তু কৃষকদের উপস্থিতি প্রায় চোখেই পড়ত না। ফলে আলোচনার সার-কথা কৃষকদের কানে পৌঁছোত না। যে কারণে কৃষকদের সঙ্গে মাঠে নেমেই প্রযুক্তি প্রশিক্ষণের উদ্যোগ।
মন্ত্রী রেজ্জাক মোল্লা বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী জেলায়-জেলায় গিয়ে প্রশাসনের আধিকারিকদের নিয়ে বিভিন্ন ধরনের সমস্যার সমাধানের সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন। বাস্তবে তার ফলও পাওয়া গিয়েছে। কৃষির উন্নতিতে আমরা মুখ্যমন্ত্রীর সেই পথই অনুসরণ করতে চাইছি।’’ তিনি জানাচ্ছেন, ভাঙড় ব্লকেই কৃষকদের নিজস্ব একটি সংস্থা রয়েছে। প্রায় ১৭০০ কৃষক ওই সংস্থার সঙ্গে সরাসরি যুক্ত রয়েছেন। ওই দিনের সভায় ওই কৃষকদেরই হাতে-কলমে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। পরবর্তী পর্যায়ে বিভিন্ন জেলায় ব্লকে ওই ধরনের কর্মাশালা করা হবে।
দফতরের বিপণন আধিকারিক শিবাজী রায় বলেন, ‘‘দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় ভাঙড়ের রজনীগন্ধা ও গাঁদার প্রচুর চাহিদা রয়েছে। কিন্তু সচেতনতার অভাবে ওই চাষে উন্নত প্রযুক্তির প্রয়োগ প্রায় নেই বললেই চলে। ফলে উৎপাদন অনেকটাই কম হচ্ছে। প্রযুক্তির প্রশিক্ষণ পেলে ভাঙড়ে ফুল চাষে বিপ্লব ঘটে যেতে পারে। যে কারণেই একেবারে কৃষকদের ঘরে গিয়ে প্রশিক্ষণের উদ্যোগ।’’
দফতর সূত্রে খবর, এত দিন নেতাজি ইন্ডোরে বা মিলন মেলাতেই কৃষির উন্নয়নে আলোচনা সভা বসত। কিন্তু মন্ত্রীর নির্দেশে এখন ব্লক স্তরে গিয়েই কথা বলতে হবে। মন্ত্রীর বিধানসভা কেন্দ্র ভাঙড় থেকে সেই কাজটাই শুরু হচ্ছে। আধিকারিকদের কথায়, কলকাতার কাছে সব চেয়ে উর্বর চাষযোগ্য জমি রয়েছে ভাঙড়ে। অধিকাংশ জমিই চার থেকে পাঁচ ফসলি। আনাজ, ফল ও শস্যবীজ-সহ উন্নত প্রজাতির রজনীগন্ধা ও বিভিন্ন ধরনের ফুল চাষ হয়। ভাঙড়ের রজনীগন্ধা বিদেশে রফতানিও হয়। উন্নত প্রশিক্ষণ পেলে উৎপাদন বাড়বে বলেই মনে করছেন আধিকারিকরা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy