বন্যা নিয়ে রাজ্য সরকারের সর্বদল বৈঠকের আগের দিন শেষ পর্যন্ত আমন্ত্রণের চিঠি এসে পৌঁছল বিরোধীদের ঘরে! বিধানসভায় যে সব দলের প্রতিনিধিত্ব আছে, তাদের এক জন করে বিধায়ককে আজ, শনিবার বিকালে নবান্নের বৈঠকে ডাকা হয়েছে। বৈঠক যখন রাজ্যের বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে, সেখানে স্বীকৃত সব রাজনৈতিক দলকে কেন ডাকা হল না, সেই প্রশ্ন তুলছে বিরোধীরা। পরিষদীয় দলগুলির এমন বৈঠক থেকে খুব কার্যকর কোনও সূত্র বেরোবে কি না, তা নিয়েও সংশয়ে আছেন বিরোধী নেতারা। তবে মুখ্যমন্ত্রীর আহ্বানে সাড়া দিয়ে সব দলই আজ বৈঠকে যাবে।
সিপিএম-সহ বামফ্রন্টের বিভিন্ন শরিক দল, কংগ্রেস, বিজেপি, এসইউসি-র মতো দলগুলির কাছে শুক্রবারই সর্বদল বৈঠকের চিঠি পৌঁছেছে। বন্যা পরিস্থিতি ও ত্রাণের ব্যবস্থা নিয়ে একেবারে তৃণমূল স্তরের প্রশাসন পর্যন্ত সর্বদল বৈঠক ডাকার দাবি জানিয়ে মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি দিয়েছিলেন বিরোধী দলনেতা সূর্যকান্ত মিশ্র এবং কংগ্রেসের পরিষদীয় দলনেতা মহম্মদ সোহরাব। সরকার যে হেতু প্রতি পরিষদীয় দল থেকে এক জন করে প্রতিনিধিকেই বৈঠকে আমন্ত্রণ জানিয়েছে, তাই সূর্যবাবু ও সোহরাব নিজেরাই নবান্নে যাবেন। যদিও সূর্যবাবু এ দিন বলেছেন, ‘‘আমরা রাজ্য থেকে ব্লক পর্যন্ত সর্বস্তরে সর্বদল বৈঠক ডাকার কথা বলেছিলাম। যাতে ত্রাণে সুবিধা হয়। কিন্তু নবান্নে কেবল পরিষদীয় দলগুলির বৈঠক ডাকা হয়েছে। এতে সমস্যার সমাধান হবে না। বন্যা ত্রাণ নিয়ে সরকারের সদিচ্ছা থাকলে সর্বদল বৈঠক ডাকা উচিত ছিল।’’
মুখ্যমন্ত্রী চাইলে তিনি কি ত্রাণের দাবিতে দিল্লি যাবেন? জবাবে সূর্যবাবু বলেন, ‘‘উনি নিজের পরিত্রাণের জন্য দিল্লি যাচ্ছেন, না দুর্গতদের ত্রাণ চাইতে, সেটা আগে বুঝতে হবে!’’ ত্রাণ নিয়ে এ দিনও রাজ্য সরকারের কড়া সমালোচনা করেছেন বামফ্রন্টের চেয়ারম্যান বিমান বসু। তাঁর বক্তব্য, ‘‘এরা ত্রাণ নিয়ে হেলাফেলা করছে! কেন্দ্রের কাছে মৌজা ভিত্তিক ত্রাণের দাবি করেনি রাজ্য। কেন্দ্রের বিজেপি সরকারও বন্যা নিয়ে উদাসীন।’’
বিজেপি-র রাজ্য সভাপতি রাহুল সিংহ এবং কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের তরফে এ রাজ্যে দলের পর্যবেক্ষক কৈলাস বিজয়বর্গীয় দু’জনেই বলেছেন, নবান্নে আজকের সর্বদল বৈঠক থেকে খুব কাজের কাজ হবে বলে তাঁরা মনে করেন না। তবু রাজ্য সরকারের মনোভাব জানতে বিজেপি বিধায়ক শমীক ভট্টাচার্য বৈঠকে থাকবেন। রাহুলবাবুদের দাবি, জেলায় জেলায় ত্রাণের তত্ত্বাবধান করার জন্য সরকার বরং পাঁচ জন মন্ত্রীর নেতৃত্বে পাঁচটি সর্বদল কমিটি গড়ে দিক।
শুধু পরিষদীয় দলের নেতৃত্বকে না ডেকে সব রাজনৈতিক দলকে নিয়ে বৈঠক করলেই যে ভাল হতো, সে কথা জানিয়ে এ দিনই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে চিঠি পাঠিয়েছেন ফরওয়ার্ড ব্লকের বর্ষীয়ান রাজ্য সম্পাদক অশোক ঘোষ। বন্যাবিধ্বস্ত মৌজা ধরে ধরে ক্ষয়ক্ষতির হিসাব করা উচিত বলেও মুখ্যমন্ত্রীকে লিখেছেন তিনি। অশোকবাবুর জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানাতে এসে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বলে গিয়েছিলেন, সরকারের কাজের ভুল-ভ্রান্তি দেখলে ধরিয়ে দিতে। অশোকবাবু এ দিন সেই ‘অধিকার’ই প্রয়োগ করেছেন!
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy