Advertisement
E-Paper

জোট রেখেও কংগ্রেস সতর্ক বাম-করণ নিয়ে

জোট থাকবে। কিন্তু তার বাইরেও নিজেদের আলাদা ভাবে তুলে ধরতে চাইছে কংগ্রেস। বামেদের সঙ্গে পথ চলেও কংগ্রেসের ‘বাম-করণ’ যাতে না হয়, দলের বিধায়কদের সেই বিষয়ে সতর্ক করে দিয়েছেন অধীর চৌধুরী।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৮ জুন ২০১৬ ০৯:২৫

জোট থাকবে। কিন্তু তার বাইরেও নিজেদের আলাদা ভাবে তুলে ধরতে চাইছে কংগ্রেস।

বামেদের সঙ্গে পথ চলেও কংগ্রেসের ‘বাম-করণ’ যাতে না হয়, দলের বিধায়কদের সেই বিষয়ে সতর্ক করে দিয়েছেন অধীর চৌধুরী। শুক্রবার বিধানসভা অধিবেশনের প্রথম দিনে কংগ্রেসের পরিষদীয় দলের বৈঠক ছিল। সেখানেই বিধায়কদের সামনে অধীরবাবুর ব্যাখ্যা, জোট অটুট থাকবে। কিন্তু রাজ্য রাজনীতিতে কংগ্রেসের স্বাতন্ত্র্যও ধরে রাখতে হবে। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতির মন্তব্য, ‘‘বামেদের সঙ্গে জোট করে ভোটে লড়েছি। বিধানসভাতে কক্ষ সমন্বয় করছি। শাসকের হাতে আক্রান্তদের দেখতেও যাচ্ছি। ভবিষ্যতে এই জোট বজায় থাকবে, তা নিয়েও সংশয় নেই। তবু কংগ্রেস স্বতন্ত্র হবে। কংগ্রেসের যেন বাম-করণ না হয়।’’

কংগ্রেসের অনেকেই মনে করছেন, পশ্চিমবঙ্গে বামেদের সঙ্গে পথ চলতে চলতে নিজস্বতা হারানোর আশঙ্কা থাকছে। তবে রাজ্যে এখন প্রধান বিরোধী দল হিসেবে উঠে এসেছে তারা। স্বাভাবিক ভাবেই রাজ্য রাজনীতিতে বিরোধী দল হিসেবে নিজেদের স্বতন্ত্র লড়াকু চেহারাকে তুলে ধরতে হবে।

গত রবিবার বিধান ভবনে কংগ্রেস বিধায়ক মানস ভুঁইয়াও এমনই কথা বলেছিলেন। তিনি মন্তব্য করেছিলেন, ‘‘জোটের যদি একটি কর্মসূচি নেওয়া হয়, কংগ্রেস যেন দশটি কর্মসূচি নেয়। তবেই সংগঠন বাড়বে।’’ এ বার দক্ষিণবঙ্গেও কংগ্রেস বেশ কয়েকটি আসন জিতেছে। প্রদেশ কংগ্রেসের নেতারা জানেন, সিপিএমের সাহায্য ছাড়া ওই আসন গুলিতে জেতা অসম্ভব ছিল। কিন্তু তাঁরা মনে করছেন, এখন পরিস্থিতিকে কাজে লাগিয়ে রাজ্যে সংগঠন বাড়ানো উচিত। আর সেই কারণেই দলের নিজস্ব আন্দোলন গড়ে তোলার উপরে বিশেষ জোর দিয়েছেন অধীরবাবু।

একই রকম ভাবনা রয়েছে সিপিএমেও। বাম পরিষদীয় দলনেতা সুজন চক্রবর্তীর কথায়, ‘‘জোট জোটের জায়গায় থাকবে। কংগ্রেসের সঙ্গে একজোট হয়ে আন্দোলন হবে। আবার বামেদের পৃথক লড়াইও চলবে।’’ দু’দলই পৃথক ও যৌথ আন্দোলনের করবে, এখন এটাই কৌশল। অধীরবাবুর কথায়, ‘‘আমরা দু’টি ধারার দু’টি দল। এটাই তো স্বাভাবিক।’’

জ্যোতি বসু যখন বিধানসভায় অবিভক্ত কমিউনিস্ট পার্টির নেতা ছিলেন, তাঁদের সদস্য ছিল মাত্র দু’জন। ১৯৮২ সালে সংসদে বিজেপিরও দু’জন সাংসদই ছিলেন। এই উদাহরণ টেনে অধীরবাবু বলেন, ‘‘সংখ্যাটা বড় কথা নয়। বিধায়ক বা সাংসদের গুণগত মানটাই জরুরি। কংগ্রেসের এখন ৪৪ জন বিধায়ক। আমরা বিরোধী দল। সেই সুযোগ কাজে লাগাতে হবে। তৃণমূলও বিরোধী দল হিসেবে সেই কাজটাই করেছিল।’’ কংগ্রেস নেতাদের মতে, গত পাঁচ বছর কলকাতা-সহ জেলাতে বিভিন্ন দাবি নিয়ে বামেদের আন্দোলনই ছিল প্রধান। আগামী দিনে কংগ্রেসকে সেই জায়গা নিতে হবে।

বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নান থেকে মানসবাবু, শঙ্কর সিংহের মতো নেতাদের কথা উল্লেখ করে অধীরবাবু এ দিন বলেন, ‘‘সকলকে সম্মান দিয়ে মিলেমিশে কাজ করতে হবে। রাজ্যে আপনারা দাপিয়ে বেড়ান।’’ কংগ্রেসের পৃথক আন্দোলন গড়ে তুলতে জেলা সভাপতি ও বিধায়কের সমন্বয় রাখার উপরেও অধীরবাবু জোর দেন। এই প্রস্তাবে সমর্থন করেন মানসবাবু, কংগ্রেসের চিফ হুইপ মনোজ চক্রবর্তী, শঙ্কর সিংহ প্রমুখ।

পুলিশ প্রশাসনকে কাজে লাগিয়ে কী ভাবে সবংয়ে তাঁর বিরুদ্ধে খুনের মিথ্যা মামলা করা হয়েছে, পরিষদীয় দলের সামনে সেই অভিযোগ তুলে ধরেন মানস ভুঁইয়া। তবে গোটা দলই যে সবংয়ের বিধায়কের পাশে রয়েছে, তা বোঝাতে মনোজবাবু বলেন, ‘‘ওঁর গায়ে হাত পড়া মানে কংগ্রেসের গায়ে হাত দেওয়া। মানসবাবুর কিছু হলে গোটা বাংলায় কংগ্রেস একসঙ্গে ঝাঁপিয়ে পড়বে।’’

Congress Alliance
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy