শহর কলকাতাকে আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে রেখেছে বাংলা ভাষা। যে ভাষার মাধুর্যে মোহিত গোটা দুনিয়া। যে সাহিত্য, যে সংস্কৃতি বিশ্বকে উপহার দিয়েছে একের পর এক স্বর্ণোজ্জ্বল উপাখ্যান। যার মধ্যে লুকিয়ে রয়েছে অগুণতি অবিনশ্বর গাঁথা। সেই ভাষাকেই নতুন করে নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরতে কলকাতার অক্সফোর্ড বুকস্টোরে অনুষ্ঠিত হল এপিজে বাংলা সাহিত্য উৎসবের অষ্টম অধ্যায়।
২০১৫-তে শুরু। তার পরে পায়ে পায়ে কেটে গিয়েছে ৭টি বছর। নিজগুণেই মাথা তুলে স্বমহিমায় দাঁড়িয়েছে এপিজে বাংলা সাহিত্য উৎসব। বিগত দু’ বছর অতিমারির কারণে অনলাইনেই আয়োজন করা হয়েছিল এই উৎসবের। তবে এই বছর পরিস্থিতি বদলেছে। সেই কারণেই বাংলার তাবড় তাবড় সাহিত্যিক, লেখক, ভাষাবিদ, তর্কবিদ, কবি, সমালোচকদের নিয়ে মহাসমারোহে শুরু হয়েছে অষ্টম বাংলা সাহিত্য উৎসব।
অনুষ্ঠান চলবে তিন দিন ধরে। অর্থাৎ রবিবার শেষ। এ দিন অষ্টম বর্ষের এই অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ পবিত্র সরকার। তাঁর কণ্ঠে উঠে আসে বাংলার ভাষার ইতিহাসের বিভিন্ন কাহিনি। তাঁর মতে, “এই সময়ে দাঁড়িয়ে বাংলা ভাষা নিয়ে এমন অনুষ্ঠান সত্যিই অনস্বীকার্য। বাংলার মতো এমন মধুর ভাষার নেপথ্যেও রয়েছে বিভিন্ন অজানা গল্প। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সেই ভাষা নিজের মতো করে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়েছে। আমাদের প্রত্যেকের দায়িত্ব সেই ভাষাকে আরও এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার।”
ইতিমধ্যেই শতবর্ষ পূর্ণ করেছে অক্সফোর্ড বুকস্টোর। সেই কারণেই অষ্টম বর্ষেও এই বুকস্টোরকেই বেছে নেওয়া হয়েছে বাংলা সাহিত্য উৎসবের আখড়া হিসেবে। তবে শুধুমাত্র আগত দর্শক-শ্রোতাদের জন্যেই নয়, বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা অনুরাগীদের কথা ভেবেই সমাজমাধ্যমেও লাইভ স্ট্রিমিং চলছে প্রতিটি সেশনের।
অনুষ্ঠানের প্রসঙ্গ তুলে সাহিত্য উৎসবের ডিরেক্টর স্বাগত সেনগুপ্ত বলেন, “বিগত সাত বছর ধরে ধীরে ধীরে এপিজে বাংলা সাহিত্য উৎসব ক্রমশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। বিবিধ দিকপাল ব্যক্তিত্বদের সান্নিধ্যে বর্তমানে এই উৎসবের খ্যাতি বিশ্বজনীন। এমনকি প্রবাসী বাংলা সাহিত্য ও সংস্কৃতির অনুরাগীরাও প্রতি বছর এই উৎসবের জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করে থাকেন।”
প্রতি বছরের মতোই বাংলা সাহিত্য উৎসবের অষ্টম অধ্যায়ে উপস্থিত থাকতে চলেছেন বিভিন্ন ক্ষেত্রের দিকপাল ব্যক্তিত্বরা। এঁদের মধ্যে রয়েছেন — হিমাদ্রিকিশোর দাশগুপ্ত, অশোক বিশ্বনাথন, শমীক বন্দ্যোপাধ্যায়, আবুল বাশার, রূপম ইসলাম, বিনোদ ঘোষাল, খেয়ালি দস্তিদার, রাহুল বন্দ্যোপাধ্যায়, বিশ্বনাথ বসু, জয়ন্ত ঘোষাল, স্নেহাশিস সুর, তিলোত্তমা মজুমদার, দেবাশিস দেব, মন্দাক্রান্তা সেন, উল্লাস মল্লিক, কৃষ্ণেন্দু মুখোপাধ্যায়, রাজা ভট্টাচার্য, দীপান্বিতা রায়ের মতো স্বনামধন্য ব্যক্তিত্বরা। গোটা অনুষ্ঠানের মুখ্য সঞ্চালকের ভূমিকায় রয়েছেন প্রাক্তন রেডিয়ো জকি রয় চৌধুরী।
এই অনুষ্ঠানেই বাংলা লিটল ম্যাগাজিনগুলি নিয়ে এক অনন্য উদ্যোগ নিয়েছে অক্সফোর্ড বুক স্টোর। পরিসংখ্যান বলছে, বর্তমানে বাংলা ভাষায় ২০০০টিরও বেশি লিটল ম্যাগাজিন প্রকাশিত হয়। এই লিটল ম্যাগাজিনগুলিকে অক্সফোর্ড বুকস্টোরে সাধ্য মতো আলাদা জায়গা দেওয়া হবে। পাশাপাশি, এই ম্যাগাজিনগুলিকে অনলাইনেও বিক্রি করার পরিকল্পনা রয়েছে অক্সফোর্ড বুকস্টোরের।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy