আলিপুর থানায় হামলা থেকে গিরিশ পার্ক এলাকায় সাব-ইনস্পেক্টরের গুলিবিদ্ধ হওয়া পর্যন্ত নানা ঘটনায় ক্ষোভ ধূমায়িত হচ্ছিল পুলিশের নিচু তলায়। গিরিশ পার্কের ঘটনায় অবশেষে সেই নিচু তলার চাপেই নড়েচড়ে বসল লালবাজার। কলকাতা পুরসভার ভোটের দিন পুলিশ অফিসারের গুলিবিদ্ধ হওয়ার ঘটনায় অভিযুক্ত গোপাল তিওয়ারি বিরুদ্ধে আইনি প্রক্রিয়া শুরু করলেন গোয়েন্দারা।
লালবাজার সূত্রের খবর, গোয়েন্দাদের আবেদনের ভিত্তিতে গিরিশ পার্ক কাণ্ডে মূল অভিযুক্ত গোপাল-সহ ছ’জনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছে আদালত। সোমবার ওই গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে ব্যাঙ্কশাল আদালত। অন্য পাঁচ অভিযুক্ত হল রাজা শর্মা ওরফে মোটা রাজা, রাজু সোনকার ওরফে রামুয়া, রবি শ্রীবাস্তব, পাপ্পু ঠাকুর ও অজয় সোনকার। মোটা রাজু ছাড়া বাকি চার জনই বড়বাজারের ত্রাস গোপালের শাগরেদ বলে পুলিশের দাবি।
গিরিশ পার্কে হামলার পর থেকে অভিযুক্তেরা পলাতক। পুলিশ জানাচ্ছে, গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির পরেও গোপাল-সহ পলাতক অভিযুক্তেরা আত্মসমর্পণ না-করলে অথবা গ্রেফতার না-হলে তাদের বিরুদ্ধে ফের আদালতের দ্বারস্থ হবেন গোয়েন্দারা। এবং বিচারকের কাছে পলাতকদের বিরুদ্ধে হুলিয়া জারির আবেদন করা হবে। তাতেও যদিও ওই অভিযুক্তদের হদিস না-মেলে, তা হলে গোপালদের সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করার জন্য আদালতে আর্জি জানানো হবে বলে জানান গোয়েন্দারা।
কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দা-প্রধান পল্লবকান্তি ঘোষ বলেন, ‘‘গিরিশ পার্ক কাণ্ডের তদন্তে নেমে ওই ঘটনায় গোপাল তিওয়ারির যুক্ত থাকার প্রত্যক্ষ প্রমাণ মেলার পরেই আমরা আদালতে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির আবেদন করি।’’ লালবাজারের নিচু তলার একাংশের অভিযোগ, গোপালের সঙ্গে লালবাজারের অনেক পুলিশ অফিসারেরই সুসম্পর্ক রয়েছে। ওই ঘটনায় গোপালের নাম উঠে আসার পরেই গোয়েন্দা বিভাগের কয়েক জন অফিসার তাকে বাঁচানোর জন্য নানা ভাবে চেষ্টা শুরু করে দেন।
এই প্রসঙ্গে উঠছে আলিপুর থানায় ঢুকে হামলা ও ভাঙচুরের বিষয়টিও। পুলিশ-নিগ্রহের সেই ঘটনায় অভিযুক্ত তৃণমূল নেতা প্রতাপ সাহাকে পুলিশেরই একাংশ আগাম জামিন পেতে সাহায্য করেছে বলে অভিযোগ তুলেছিল কলকাতা পুলিশের নিচু তলা। তাদের আশঙ্কা, একই ভাবে গোপালকেও আদালতে আত্মসমর্পণ করানোর চেষ্টা হচ্ছে। অথবা নিম্ন আদালতে তার আগাম জামিনের আর্জির ব্যবস্থা করা হচ্ছে।
লালবাজার শেষ পর্যন্ত গোপালের বিরুদ্ধে নড়েচড়ে বসায় পুলিশের নিচু তলার একাংশ খুশি ঠিকই। তবে তাঁরা প্রশ্ন তুলছেন, বড়বাজারে একটি গুলি চালানোর ঘটনায় অভিযুক্ত গোপাল তিওয়ারি সুপ্রিম কোর্ট থেকে পাওয়া জামিনের শর্ত ভাঙলেও সেই নির্দেশ খারিজ করতে কলকাতা পুলিশ এখনও উদ্যোগী হল না কেন?
পুলিশের নিচু তলার ওই অংশের বক্তব্য, গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করার পাশাপাশি গোপালের জামিন খারিজ করার জন্য লালবাজার আদালতের দ্বারস্থ হলে গোপাল আরও চাপে পড়ে যেত। এবং তাতে সুবিধে হত তদন্তকারীদেরই।
জামিন আরাবুলের
গ্রেফতারের প্রায় ১৫ দিন পরে জামিন পেলেন তৃণমূল নেতা আরাবুল ইসলাম। মঙ্গলবার আরাবুল এবং তাঁর দুই সঙ্গী শেখ সুলেমান ও লক্ষ্মণ ঘোষকে ২০ হাজার টাকার ব্যক্তিগত বন্ডে জামিন দেয় বারাসত আদালত। ২৬ এপ্রিল রাজারহাটের একটি সংস্থার অফিসে তোলাবাজি, হুমকি ও বোমাবাজির অভিযোগে ভাঙড় (২) পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি আরাবুল এবং তাঁর সঙ্গীদের গ্রেফতার করেছিল পুলিশ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy