Advertisement
০৩ মে ২০২৪

বন্যপ্রাণ পাচারে ঘাঁটি বাংলাদেশ

কেন্দ্রীয় বন্যপ্রাণ অপরাধ ব্যুরো (ডব্লিউসিসিবি) সূত্রের খবর, সিংহ শাবক ও বিরল প্রজাতির বাঁদরগুলিকে  (হোয়াইট হে়ডেড লাঙুর) দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া থেকে বাংলাদেশে আনা হয়েছিল। বাংলাদেশ থেকে চোরাপথে তা ভারতে আনা হয়।

বেলঘরিয়া এক্সপ্রেসওয়ে থেকে উদ্ধারের পরে সল্টলেকের বন্যপ্রাণী উদ্ধার কেন্দ্রে। শনিবার। ছবি: স্নেহাশিস ভট্টাচার্য

বেলঘরিয়া এক্সপ্রেসওয়ে থেকে উদ্ধারের পরে সল্টলেকের বন্যপ্রাণী উদ্ধার কেন্দ্রে। শনিবার। ছবি: স্নেহাশিস ভট্টাচার্য

কুন্তক চট্টোপাধ্যায়
শেষ আপডেট: ০২ জুন ২০১৯ ০৪:৩৬
Share: Save:

পাঁচ দিন আগেই বনকর্তাদের যৌথ বৈঠকে বাংলাদেশে বন্যপ্রাণ পাচারকারীদের ঘাঁটি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছিলেন এ দেশের বনকর্তারা। সে আশঙ্কা যে অমূলক নয়, তা প্রমাণ হয়ে গেল শুক্রবার রাতে। কলকাতার উপকণ্ঠে বেলঘরিয়া এক্সপ্রেসওয়ে থেকে সিংহশাবক এবং তিনটি বিরল প্রজাতির বাঁদর উদ্ধারের ঘটনায়।

কেন্দ্রীয় বন্যপ্রাণ অপরাধ ব্যুরো (ডব্লিউসিসিবি) সূত্রের খবর, সিংহ শাবক ও বিরল প্রজাতির বাঁদরগুলিকে (হোয়াইট হে়ডেড লাঙুর) দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া থেকে বাংলাদেশে আনা হয়েছিল। বাংলাদেশ থেকে চোরাপথে তা ভারতে আনা হয়। বস্তুত, ২০১৭ সালের নভেম্বরে ঢাকার উত্তরা থেকে যশোরে পাচারের সময় একটি এসইউভি থেকে দু’টি সিংহশাবক এবং দু’টি চিতাবাঘের ছানাকে উদ্ধার করেছিল বাংলাদেশ পুলিশ। সে সময় জানা গিয়েছিল, ওই সিংহ ও চিতাবাঘের ছানাগুলিকে বনগাঁ সীমান্ত দিয়ে ভারতে পাঠানোর ছক ছিল।ডব্লিউসিসিবি-র পূর্বাঞ্চলীয় অধিকর্তা অগ্নি মিত্র বলেন, ‘‘গত ২৭ মে যৌথ বৈঠকে বন্যপ্রাণ পাচার নিয়ে বাংলাদেশকে সতর্ক করা হয়েছিল।’’

একটি সূত্রের দাবি, যশোরে এক কুখ্যাত পাচারকারী রয়েছে। সেই সে দেশে এই চক্রের চাঁই। কিন্তু কোনও এক ‘অজানা’ কারণে সে বাংলাদেশ পুলিশ ও বন দফতরের নাগালের বাইরে রয়েছে। দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার সঙ্গে পশ্চিম এশিয়ার চোরাকারবারিদের যোগসূত্র সে। বন মন্ত্রকের একটি সূত্রের দাবি, আগেও বাংলাদেশ থেকে কলকাতা হয়ে পশ্চিম ভারতে একাধিক বার বন্যপ্রাণী পাচার করেছে সে। এর পাশাপাশি বাংলাদেশ থেকে এ দেশে একাধিক বার সাপের বিষও ঢুকেছে এবং তা এ দেশের বন বিভাগের হাতে ধরাও পড়েছে।

বাংলাদেশের জঙ্গলে কোনও সিংহ নেই। ‘হোয়াইট হেডেড লাঙুর’ মূলত চিন ও ভিয়েতনামে মেলে। কিন্তু গোটা দুনিয়ায় অতি-বিপন্ন প্রাণী হিসেবে পরিচিত এই বাঁদরেরা। তবে তাইল্যান্ড-সহ দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় এই ধরনের প্রাণীগুলিকে পোষ্য হিসেবে রেখে প্রজনন করা হয় এবং তা চোরাবাজারে বিক্রি হয়। তা দেখেই গোয়েন্দাদের অনুমান, এগুলি দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া থেকে বাংলাদেশে আনা হয়েছিল।

বন মন্ত্রকের এক আধিকারিকের দাবি, ধনী এবং প্রভাবশালীদের অনেকেই এই ধরনের প্রাণীকে নিজেরে বাড়ি বা বাগানবাড়িতে লুকিয়ে পোষেন। বাংলাদেশের পাচারকারীরা এ দেশের পাচারকারীদের সঙ্গে মিশে সেগুলি রফতানি করেন। মূলত পশ্চিম ভারত দিয়ে সমুদ্রপথে সেগুলি আরব দুনিয়ায় পাচার হয়। আরবের দেশগুলিতে এই ধরনের পোষ্যের চল রয়েছে। ‘‘তবে এ দেশেও কিছু ধনীরা এই ধরনের পোষ্যের দিকে ঝুঁকছেন,’’ মন্তব্য ওই আধিকারিকের।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Crime Bangladesh Wildlife Trafficking
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE