উৎসবের মরসুমে বিপজ্জনক ভাবে বাজি পোড়ানোয় রাশ টানতে উদ্যোগী হল প্রশাসন। বুধবার পূর্বস্থলী ১ ব্লকের নসরতপুর পঞ্চায়েত এলাকায় এ নিয়ে একটি প্রশাসনিক বৈঠক হয়। সেখানে ফাঁকা মাঠে প্রদর্শনী, ক্লাবগুলিকে যথেষ্ট ভলেন্টিয়ার রাখার কথা বলা হয়।
ওই পঞ্চায়েত এলাকার বেশ কিছু ক্লাব প্রতি বছরই দুর্গাপুজোয় আতসবাজি প্রদর্শনীর আয়োজন করে। কোনও বছর বিজয়া দশমী, আবার কোনও বছর একাদশীতে বাজি প্রদর্শনী দেখতে হাজার হাজার মানুষ ভিড় করেন। পুজোর মাসখানেক আগে থেকেই তাই নানা ধরণের বাজি তৈরিতে ব্যস্ত হয়ে পড়েন শিল্পীরা। মহকুমা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, এই সমস্ত আতসবাজির মধ্যে প্রচুর বারুদ ও নানা বিপজ্জনক জিনিস থাকে। ফলে প্রকাশ্যে প্রদর্শনী চলাকালীন বিপদের আশঙ্কা রয়েই যায়। দেড় দশক আগে একটি দুর্ঘটনায় বেশ কয়েকজনের মৃত্যুও হয়েছিল। তারপর বছর তিনেক বাজি প্রদর্শনী বন্ধও ছিল। পরে অবশ্য আবার তা শুরু হয়।
তবে আতসবাজি প্রদর্শনীর সঙ্গে সাধারণ মানুষের আনন্দ, আবেগ জড়িয়ে থাকায় তা সরাসরি বন্ধের নির্দেশ না দিয়ে নিয়ন্ত্রণের পথে নেমেছে প্রশাসন। এ দিনেক বৈঠকে পুলিশ ও প্রশাসনের আধিকারিকেরা ছাড়াও হাজির ছিলেন নসরতপুর পঞ্চায়েতের প্রতিনিধি এবং বিভিন্ন ক্লাবের সদস্যরা। বৈঠকে প্রশাসনের তরফে স্পষ্ট জানানো হয়, বিপজ্জনক বাজি প্রদর্শনীতে তাদের সায় নেই। কারণ যে কোনও সময় অগ্নিকাণ্ড ঘটতে পারে। ভিড়ের চাপে পিষ্ট হয়ে যাওয়ার ঘটনা ঘটতে পারে। আলোচনায় উঠে আসে ঘিঞ্জি জায়গায় বাজি প্রদর্শনীর বিষয়টিও। বৈঠকের পরে মহকুমাশাসক জানান, দুর্ঘটনা এড়াতে ওই এলাকার প্রত্যেক ক্লাবকে তাদের সভাপতি, সম্পাদকের নাম আগেভাগে জানাতে হবে পুলিশকে। পাশাপাশি সাধারণ মানুষকে যাতে নিয়ন্ত্রন করা যায় তার জন্য ক্লাবগুলিকে পর্যাপ্ত ভলেন্টিয়ার মজুত রাখতে হবে। এর সঙ্গেই ফাঁকা জায়গায় বাজি প্রদর্শনী করার কথাও বলা হয়েছে। এক্ষেত্রে কাছাকাছি রেল মাঠকে ব্যবহারের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। মহকুমাশাসক সব্যসাচী ঘোষ বলেন, “ওই এলাকার মানুষের কথা মাথায় রেখে বাজি প্রদর্শনী বন্ধ করা হয় নি। তবে নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে।” মহকুমা পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, পুজো এলেই এলাকার নানা জায়গায় অবৈধ বাজি কারখানা গজিয়ে ওঠে। গত বছর পুজোর কয়েকদিন আগে কালনা ২ ব্লকের একটি বাড়িতে অবৈধ ভাবে বাজি বানাতে গিয়ে মৃত্যু হয় এক দম্পতির। এ বার পুলিশ সে ব্যাপারে বাড়তি সতর্ক রয়েছে। পুজোর আগে অভিযানও চালানো হচ্ছে বলে পুলিশের দাবি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy