Advertisement
E-Paper

ইঞ্জিন থেকে ধোঁয়া, ফের প্রশ্ন পুলকারে

শহরের পুলকারগুলির নিরাপত্তা খতিয়ে দেখতে শুক্রবার পুলকার মালিকদের সঙ্গে বৈঠকে বসেছিল দুর্গাপুরের মহকুমা প্রশাসন। চব্বিশ ঘণ্টা কাটতে না কাটতে শহরে একটি পুলকারের ইঞ্জিন থেকে ধোঁয়া বেরনোয় আতঙ্ক তৈরি হল পড়ুয়া ও অভিভাবকদের মধ্যে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৩ অক্টোবর ২০১৬ ০১:৪০
পডুয়া নিয়ে যাওয়া এই গাড়ি থেকেই ধোঁয়া বেরোয় শনিবার। —নিজস্ব চিত্র।

পডুয়া নিয়ে যাওয়া এই গাড়ি থেকেই ধোঁয়া বেরোয় শনিবার। —নিজস্ব চিত্র।

শহরের পুলকারগুলির নিরাপত্তা খতিয়ে দেখতে শুক্রবার পুলকার মালিকদের সঙ্গে বৈঠকে বসেছিল দুর্গাপুরের মহকুমা প্রশাসন। চব্বিশ ঘণ্টা কাটতে না কাটতে শহরে একটি পুলকারের ইঞ্জিন থেকে ধোঁয়া বেরনোয় আতঙ্ক তৈরি হল পড়ুয়া ও অভিভাবকদের মধ্যে। শেষে অন্য একটি গাড়িতে করে পড়ুয়াদের বাড়ি পাঠানো হয়। মহকুমাশাসক শঙ্খ সাঁতরা জানান, ওই পুলকারের যাবতীয় কাগজপত্র চেয়ে পাঠানো হয়েছে। খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ডিএসপি টাউনশিপের মধ্যশিক্ষা পর্ষদ অনুমোদিত একটি ইংরেজি মাধ্যম স্কুল থেকে শনিবার প্রাথমিক বিভাগের জনা পনেরো পড়ুয়াকে নিয়ে ফিরছিল ওই পুলকারটি। ডেভিড হেয়ার মোড়ের কাছে পৌঁছতেই পুলকারের ইঞ্জিন থেকে ধোঁয়া বেরোতে শুরু করে। ধোঁয়ার তীব্রতা বাড়ার আগেই অবশ্য পড়ুয়াদের গাড়ি থেকে নামিয়ে নেওয়া হয়। আশপাশের মানুষজন ছুটে গিয়ে জল দিয়ে ধোঁয়া নিভিয়ে ফেলেন। পরে অন্য একটি গাড়িতে করে পড়ুয়াদের বাড়ি পাঠানোর ব্যবস্থা করা হয়। এই ঘটনায় রীতিমতো আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে পড়ুয়াদের মধ্যে। অভিভাবকেরাও ক্ষোভ জানাতে থাকেন। তাঁদেরই এক জনের কথায়, ‘‘বেশ কিছু পুলকারের অবস্থা খুব খারাপ। মালিকদের বারবার বলেও কোনও হেলদোল দেখা যায় না।’’

দুর্গাপুরে পুলকার নিয়ে বারবার নানা অভিযোগ ওঠে। রক্ষণাবেক্ষণের অভাব থেকে শুরু করে অতিরিক্ত পড়ুয়া বহন, অভিযোগের শেষ নেই। তাছাড়া দ্রুত গতিতে গাড়ি চালানোয় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে দুর্ঘটনায় পড়ার ঘটনাও আগে ঘটেছে। জুলাইয়ের শেষ দিকে অভিযান চালিয়ে এক দিনে প্রায় ৫৫টি পুলকারে গাফিলতির হদিস পান প্রশাসনের কর্তারা। এর পরেই মহকুমাশাসক পুলকার নিয়ে নির্দিষ্ট নিয়মনীতি তৈরি করতে পুলকার মালিক ও স্কুল কর্তৃপক্ষকে বৈঠকে ডাকেন। সেখানে ঠিক হয়, এক মাসের মধ্যে সব পুলকারের ‘ফিটনেস’ নিশ্চিত করা হবে। সব পুলকারে একটি নির্দিষ্ট রং করার ব্যবস্থা করা হবে। ১২ বছর পর্যন্ত পড়ুয়াদের ক্ষেত্রে আসনের তুলনায় দেড়গুণের বেশি পড়ুয়া বহন করা যাবে না। যে সমস্ত ব্যক্তিগত গাড়ি পুলকার হিসেবে ব্যবহার করা হয়, সেগুলির বাণিজ্যিক অনুমোদনের ব্যবস্থা করার জন্য চার মাস পর্যন্ত সময় দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

শুক্রবার পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে মহকুমাশাসক পরিবহণ দফতর, পুলিশ, পুলকার মালিক ও স্কুল কর্তৃপক্ষদের নিয়ে ফের বৈঠকে বসেন। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, কমবেশি ১০ শতাংশ গাড়ি সব নিয়ম চালু করতে পেরেছে। বাকিগুলিকে নভেম্বর পর্যন্ত সময় দেওয়া হয়। মহকুমাশাসক জানান, ডিসেম্বরের প্রথম দিন থেকে পুলিশ, পরিবহণ দফতরকে অভিযানে নামতে বলা হয়েছে। স্কুল কর্তৃপক্ষকে কড়া নজরদারি চালাতে বলা হয়েছে। বহু স্কুলে এখন অটো, টোটোয় চড়িয়ে পড়ুয়াদের পৌঁছে দেওয়া হয়। তা বন্ধ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

পুলকার মালিকদের দাবি, ভাড়া না বাড়ানো হলে যথাযথ পরিষেবা দেওয়া মুশকিল। বহু অভিভাবকই ভাড়া বাড়ানোর বিপক্ষে। মহকুমাশাসকের সঙ্গে বৈঠকে তাঁরা বিষয়টি নিয়ে ইতিমধ্যে আলোচনা করেছেন। পুলকার মালিকদের সংগঠনের পক্ষে ছোটন দাস জানান, পুলকার নিয়ে যাতে কোনও অভিযোগ না থাকে তা তাঁরাও নিশ্চিত করতে চান।

শনিবার ইঞ্জিন দিয়ে ধোঁয়া বেরনো পুলকারটির যাবতীয় কাগজপত্র সোমবারের মধ্যে চেয়ে পাঠিয়েছে মহকুমা প্রশাসন। যে গাড়িটি পুলকার হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছিল সেটির দেওয়ালে ধাতব চাদর বলে কিছু নেই। লোহার রডের রেলিং ও পলিথিন দিয়ে ঘেরা সেটি। মহকুমাশাসক জানান, কোনও গাফিলতে ধরা পড়লে পরিবহণ দফতর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে।

pool car security
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy