দুর্গাপুরের সেই কারখানা। নিজস্ব চিত্র।
স্থানীয়দের নিয়োগের দাবিতে আন্দোলনের জেরে কাজ বন্ধ করে দিল দুর্গাপুরের একটি বেসরকারি কারখানায়। ডিএসপি থেকে রেলের চাকা এনে তা ঘষামাজা করে ঝকঝকে করে তোলার কাজ হয় ওই কারখানায়। শনিবার সকালে স্থানীয় বাসিন্দারা এসে তাঁদের কাজ দেওয়ার দাবি জানান। এর পরেই কাজ বন্ধ করে দেন কর্তৃপক্ষ। কারখানার ম্যানেজার আনন্দ অগ্রবাল জানান, আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা মেটানোর ব্যাপারে তাঁরা আশাবাদী। তাই আপাতত কোথাও কোনও অভিযোগ করেননি।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বছর পনেরো আগে দুর্গাপুরের ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের নঈমনগরে কারখানাটি গড়ে ওঠে। ডিএসপি থেকে রেলের চাকা এনে তা ঘষামাজা করা হয় সেখানে। কর্মীর সংখ্যা জনা ৪০। কারখানা সূত্রে জানা গিয়েছে, শনিবার সকালে স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশ কারখানায় গিয়ে কাজের দাবি জানান। তাঁদের দাবি, ওই কারখানায় বাইরের অনেকে কাজ করেন। স্থানীয়দের নেওয়া হয় না। অভিযোগ, এ দিন তাঁরা কারখানায় ঢুকে কর্মীদের কাজে বাধা দেন। এর পরেই কাজ বন্ধ হয়ে যায়। কারখানার ম্যানেজার আনন্দবাবু বলেন, ‘‘কাজের দাবিতে স্থানীয় বাসিন্দারা এসে আমাদের কর্মীদের চাপ দেওয়ায় কাজ বন্ধ করে দেন তাঁরা। আমাদের ছোট কারখানা। কাজ বেশি নেই। নতুন নিয়োগের সুযোগ আপাতত নেই। সে কথা আন্দোলনকারীদের জানিয়েছি। আশা করছি, আলোচনার মাধ্যমে সমস্যার সুরাহা হবে।’’
এ দিন দাবি জানাতে যাঁরা গিয়েছিলেন, তাঁদের মধ্যে ছিলেন তৃণমূলের স্থানীয় ওয়ার্ড কমিটির সভাপতি রাজু সিংহ। তিনি জানান, স্থানীয়দের কাজের দাবিকে তিনি সমর্থন করেন। তবে এ দিনের আন্দোলনের সঙ্গে দলের কোনও যোগ নেই। তিনি বলেন, ‘‘আমরা ম্যানেজারকে বলব যাতে স্থানীয়দের নিয়োগ করা হয়।’’ তবে আন্দোলনকারীদের অনেকেই শাসকদলের পরিচিত মুখ বলে স্থানীয় সূত্রের খবর। কারখানা কর্তৃপক্ষ প্রশাসন বা কোনও শ্রমিক সংগঠনের কাছে এ ব্যাপারে আপাতত কোনও অভিযোগ জানাননি। তবে প্রয়োজন হলে আইএনটিটিইউসি-র জেলা সভাপতি প্রভাত চট্টোপাধ্যায়কে বিষয়টি জানাবেন বলে জানান ম্যানেজার আনন্দবাবু।
কারখানা সূত্রে জানা গিয়েছে, ডিএসপি থেকে আপাতত কয়েক মাস বরাত মিলবে না। শেষ বরাতে পাওয়া কাজ চলছে। তা-ও শেষের দিকে। ফলে, আগামি কয়েক মাস কারখানায় এমনিতেই কাজ থাকবে না। এই অবস্থায় বাড়তি লোক নিয়োগের জন্য চাপ এলে কারখানা চালানোই মুশকিল হয়ে পড়বে বলে জানান কারখানা কর্তৃপক্ষ। আইএনটিটিইউসি জেলা সভাপতি প্রভাতবাবু জানান, কাজের দাবিতে কারখানার কাজে বাধা দেওয়া তাঁরা সমর্থন করেন না। তিনি বলেন, ‘‘দাবি-দাওয়া থাকতে পারে। কিন্তু তা কথাবার্তার মাধ্যমে মেটাতে হবে। কোনও অবস্থাতেই শ্রমিক আন্দোলনের নামে জঙ্গিপনা সমর্থন করা যাবে না।’’ কারখানা কর্তৃপক্ষ চাইলে তিনি সহযোগিতা করবেন বলে আশ্বাস প্রভাতবাবুর।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy