Advertisement
০২ মে ২০২৪
Ancient Temple

ধ্বংসের মুখে কাঁকসার প্রাচীন মন্দির

উত্তর ও দক্ষিণ দিকে অজয় ও দামোদর কাঁকসা ব্লকের সীমানা নির্ধারণ করেছে। মূলত চাষাবাদ, কিছু শিল্পের সঙ্গে এই ব্লকের গুরুত্ব তার পুরাতাত্ত্বিক নিদর্শনের জন্য।

অযোধ্যার ঘটকপাড়ার মন্দির। নিজস্ব চিত্র

অযোধ্যার ঘটকপাড়ার মন্দির। নিজস্ব চিত্র

বিপ্লব ভট্টাচার্য
কাঁকসা শেষ আপডেট: ২৯ জানুয়ারি ২০২৩ ০৮:২৪
Share: Save:

পশ্চিম বর্ধমানের আঞ্চলিক ও লোক-ইতিহাস চর্চার ক্ষেত্রে কাঁকসা ব্লক একটি গুরুত্বপূর্ণ জায়গা। আর সে ব্লকের মূলত অযোধ্যা ও বনকাটি গ্রামে থাকা বিভিন্ন পুরনো মন্দিরগুলির সঙ্গে লগ্ন রয়েছে বহু যুগের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য। কিন্তু সময়ের সঙ্গে-সঙ্গে বেশ কিছু মন্দিরই এখন ধ্বংসের পথে, জানাচ্ছেন বাসিন্দাদের একাংশ। দ্রুত এ বিষয়ে পদক্ষেপ করার দাবি জানাচ্ছেন তাঁরা।

উত্তর ও দক্ষিণ দিকে অজয় ও দামোদর কাঁকসা ব্লকের সীমানা নির্ধারণ করেছে। মূলত চাষাবাদ, কিছু শিল্পের সঙ্গে এই ব্লকের গুরুত্ব তার পুরাতাত্ত্বিক নিদর্শনের জন্য। একটি অসমর্থিত হিসাবে, পুরো ব্লকে একশোটিরও বেশি ছোট-বড় মন্দির রয়েছে। দু’শো-তিনশো বছরের পুরনো মন্দিরের সংখ্যাও কম নয়। মন্দিরগুলির বেশির ভাগই রয়েছে ব্যক্তিগত মালিকানায়। তবে বহু পরিবারই এখন সে সব মন্দিরের রক্ষণাবেক্ষণ করতে সমস্যায় পড়ছে।

স্থানীয় বাসিন্দা রামপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় জানান, বনকাটি গ্রামের রায় পরিবারের কালীমন্দির প্রাঙ্গণে রয়েছে তিনটি সুউচ্চ মন্দির। মন্দির গাত্রে থাকা লিপি থেকেই জানা যায়, সেগুলি ১৭০৪ শকাব্দে তৈরি। মন্দির জুড়ে রয়েছে টেরাকোটার কাজ। অদূরেই রয়েছে আরও পাঁচটি ভগ্নপ্রায় শিব মন্দির। মন্দিরের দেওয়ালের টেরাকোটার কাজ প্রায় নষ্ট হয়ে গিয়েছে বলে জানান রামপ্রসাদ।

এ ছাড়া, অযোধ্যা গ্রামের ঘটকপাড়ার শিবমন্দিরটিও নষ্ট হতে বসেছে। কর্মকারপাড়ায় পর পর চারটি বিশালাকার মন্দির রয়েছে। সেগুলির একাংশ নষ্ট হয়ে গিয়েছে।

স্থানীয় বাসিন্দা প্রণব ভট্টাচার্য আঞ্চলিক ইতিহাসচর্চার সঙ্গে যুক্ত। তিনি বলেন, “দু’টি গ্রামেই মন্দিরগুলির আমূল সংস্কার দরকার। প্রয়োজনে সরকার এগুলি সংরক্ষণ করা হোক।” এলাকাবাসীর দাবি, ইছাই ঘোষের দেউল বা রাঢ়েশ্বর শিবমন্দির যে ভাবে সংরক্ষণ করা হচ্ছে, বাকি মন্দিরগুলিও সে ভাবেই সংরক্ষণ করা দরকার। কাঁকসার গোপালপুর, পানাগড় গ্রামেও রয়েছে প্রাচীন মন্দির। কাঁকসার বাসিন্দা অম্বরীশ মণ্ডল, স্বাধীন ভট্টাচার্যেরা বলেন, “এলাকার ঐতিহ্যকে ধরে রেখেছে এ সব মন্দির। ফলে, সেগুলিকে রক্ষা হলে, এলাকার ইতিহাসও টিকে থাকবে।”

বিষয়টি নিয়ে পশ্চিম বর্ধমান জেলা পরিষদের সহ-সভাধিপতি সমীর বিশ্বাস বলেন, “স্থানীয়দের দাবির কথা শুনেছি। সংস্কারের বিষয়ে কিছু করা যায় কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।” এ দিকে, বিষয়টি নিয়ে প্রতিক্রিয়ার জন্য যোগাযোগ করা হলে, তিনি ফোনে কিছু বলবেন না বলে জানান বিডিও (কাঁকসা) পর্ণা দে। তবে মহকুমাশাসক (দুর্গাপুর) সৌরভ চট্টোপাধ্যায়ের বক্তব্য, “বিষয়টি খতিয়ে দেখে, প্রয়োজনে পুরাতত্ত্ব দফতরের সঙ্গে যোগাযোগ করা হবে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Ancient Temple Kanksha
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE