কাজোড়ায় অর্জুন গাছের বাগান। —নিজস্ব চিত্র।
কেউ পরিত্যক্ত জমিতে ইকোপার্ক গড়েছে, কেউ বা খনি এলাকায় অর্জুন গাছ লাগিয়ে ধস রুখেছে, বিকল্প আয়ের ব্যবস্থা করেছে। পঞ্চায়েতের এই ব্যতিক্রমী ভাবনা এনেছে সাফল্য।
ব্যতিক্রমী কাজের স্বীকৃতি দিতে বেছে নেওয়া হয়েছে রাজ্যের দশটি ব্লককে। তার মধ্যে রয়েছে বর্ধমানের অন্ডাল ও দুর্গাপুর-ফরিদপুর ব্লক। আজ, শুক্রবার পঞ্চায়েত সম্মেলন থেকে তাদের পুরস্কার দেওয়ার কথা। অনুষ্ঠানে হাজির থাকবেন জেলাশাসক সৌমিত্র মোহন, একশো দিনের প্রকল্পের নোডাল অফিসার বিশ্বজিৎ ভট্টাচার্য প্রমুখ।
কেন পথে এসেছে সাফল্য? জানা গিয়েছে, দুর্গাপুর-ফরিদপুর ব্লকের গৌড়বাজার পঞ্চায়েতের ৪ নম্বর গ্রাম সংসদ এলাকার বেশ কিছুটা অংশ পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়েছিল। বলা যায়, আশপাশের গ্রামের শৌচাগার, আবর্জনার স্তুপ হয়ে গিয়েছিল। পরিবেশ দূষণ রুখে, পরিস্থিতি পাল্টাতে পুরো এলাকা জুড়ে ইকোপার্ক তৈরির পরিকল্পনা করে পঞ্চায়েত। ১৭-১৮ রকম প্রজাতির গাছ লাগানো হয়। দিঘি সংস্কার করা হয়। দিঘির চারপাশে নানারকম ফল, বেশ কিছু প্রজাতির মশলার গাছ লাগানো হয়। এ ছাড়া বর্জ্য থেকে জৈব সার তৈরিরও পরিকল্পনা করা হয়েছে। ওই পঞ্চায়েতের কর্তাদের দাবি, ফল, মশলা বিক্রি করে প্রতি বছর তিন লক্ষ টাকা আয় করা সম্ভব। সেই টাকা পুরোটাই স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সদস্যদের দেওয়া হবে। জানা গিয়েছে, ওই পার্ক তৈরিতে খরচ হয়েছে ৭ লক্ষ ৪৮ হাজার টাকা। এর সঙ্গে ওই ব্লকের গোবরাদিঘিতে একশো দিনের কাজের সঙ্গে শিশুকল্যাণ প্রকল্প মিলে শিশুবান্ধব অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র গড়ে তোলা হয়েছে। রাজ্যের মধ্যে এমন উদ্যোগ প্রথম বলেও পঞ্চায়েতের দাবি। এর জন্য খরচ হয়েছে ৬ লক্ষ ৮০ হাজার টাকা।
পিছিয়ে নেই অন্ডালও। কাজোড়ায় বহু বছরের পরিত্যক্ত কয়লাখনি সংস্কার করে অর্জুন গাছ লাগিয়েছে ওই পঞ্চায়েত। কাজোড়া পঞ্চায়েত কর্তাদের দাবি, এলাকায় প্রায়ই ধস নামত। দুর্ঘটনাও ঘটত। সাধারণ মানুষের কথা ভেবে ২০০৭-০৮ সাল থেকে ১৩ একর জায়গার উপর অর্জুন গাছ লাগাতে শুরু করেন তারা। এই গাছ থেকে রেশম গুটি তৈরি করে বিক্রি করা হয়। দিগন্ত নামে একটি স্বনির্ভর গোষ্ঠী তা দেখভাল ও বিক্রির দায়িত্ব নিয়েছে। গোষ্ঠীর আট মহিলা ও তিন পুরুষ প্রতি মরসুমে ত্রিশ হাজার টাকা আয় করছেন বলেও রিপোর্টে দাবি করেছে পঞ্চায়েত। এর পাশাপাশি গাছ দেখভালের জন্যও একশো দিনের কাজে টাকা পাচ্ছেন তাঁরা। পঞ্চায়েতের দাবি, এর ফলে কয়লা চুরি কমেছে। বিকল্প রোজগারের সম্ভাবনা বাড়ছে। এর সঙ্গে অন্ডালের একটি বৃদ্ধাশ্রমের পুকুর, বাগান সংস্কার করে মশলা ও ফলের বাগান করা হয়েছে পঞ্চায়েতের উদ্যোগে।
একশো দিনের প্রকল্পের নোডাল অফিসার বিশ্বজিৎবাবু বলেন, ‘‘জেলার অন্য ব্লকগুলিও এর থেকে উৎসাহ পাবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy