মহকুমাশাসকের অফিস চত্বরে দলের লোকজনের উপরে হামলার এফআইআর পুলিশ নিতে চায়নি, এই অভিযোগে সরব হল বিজেপি। রবিবার দুপুরে দুর্গাপুর থানায় অভিযোগ করতে গিয়েছিলেন বিজেপি-র জেলা সভাপতি লক্ষ্মণ ঘোড়ুই-সহ নেতা-কর্মীরা। কিন্তু থানা থেকে বেরিয়ে লক্ষ্মণবাবু দাবি করেন, ‘‘অভিযোগ নিলেন না থানার আধিকারিক। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ নেবেন বলে জানালেন। কিন্তু ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ কখন আসবেন, সেই সদুত্তর দিতে পারেননি।’’ তিনি অভিযোগ করেন, এফআইআর থেকে তৃণমূল নেতা তথা আসানসোলের মেয়র জিতেন্দ্র তিওয়ারি-সহ কয়েকজনের নাম বাদ দিতে চাপ দেওয়া হচ্ছে।
আসানসোল-দুর্গাপুরের পুলিশ কমিশনার লক্ষ্মীনারায়ণ মিনা বলেন, ‘‘এমন কোনও ঘটনার কথা জানা নেই। খোঁজ নিয়ে দেখব।’’ তৃণমূলের জেলা কার্যকরী সভাপতি উত্তম মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘বিরোধীরা ঠিক ভাবেই মনোনয়ন জমা দিচ্ছেন। কোথাও বাধা দেওয়া হচ্ছে না। হার নিশ্চিত বুঝে আগে থেকে সন্ত্রাসের ধুয়ো তুলছে ওরা।’’
শনিবার দুপুরে দুর্গাপুরে মহকুমাশাসকের অফিসের উল্টো দিকে গাছের তলায় মনোনয়নের কাগজপত্র পূরণ করছিলেন বিজেপি প্রার্থী ও প্রস্তাবকেরা। দলের নেতাদের অভিযোগ, জিতেন্দ্রবাবুর ইন্ধনে আচমকা কিছু তৃণমূল কর্মী চড়াও হয়ে চেয়ার-টেবিল উল্টে মনোনয়নের কাগজপত্র তছনছ করে দেয়। দলের এক প্রবীণ কর্মীকে মারধর, জেলা সভাপতি লক্ষ্মণবাবুর হাতে ছুরি মারা হয় বলেও অভিযোগ।
এ দিন দুপুরে জিতেন্দ্রবাবু, দুর্গাপুরের ২ নম্বর বরো চেয়ারম্যান রমাপ্রসাদ হালদার-সহ মোট ১২ জনের নামে লিখিত অভিযোগ করতে থানায় যান লক্ষ্মণবাবু। কিছুক্ষণ পরে বেরিয়ে এসে তাঁরা দাবি করেন, অভিযোগ নেয়নি পুলিশ। লক্ষ্মণবাবুর অভিযোগ, ‘‘জিতেন্দ্র তিওয়ারি-সহ কয়েকজনের নাম বাদ দিতে নানা ভাবে চাপ দেওয়া হচ্ছে।’’ তাঁদের দাবি, দুর্গাপুরে সে দিন সকাল থেকে মনোনয়ন পর্ব শান্তিতেই চলছিল। কিন্তু জিতেন্দ্রবাবু আসার পরেই গোলমাল বাধে। লক্ষ্মণবাবুর অভিযোগ, ‘‘আসানসোল থেকে দুষ্কৃতীদের এনে আমাদের উপরে হামলা চালানো হয়। শনিবারও অভিযোগ দায়ের করতে এসে ফিরে যেতে হয়।’’ জিতেন্দ্রবাবু অবশ্য গোটা ঘটনায় তাঁর কোনও ভূমিকার কথা মানতে চাননি।
বিজেপি-র অভিযোগ, ১৪৪ ধারা জারি থাকায় বিরোধীদের বের করে দেওয়া হয়েছিস। অথচ, তৃণমূল নেতারা পুরো চত্বর দাপিয়ে বেড়ালেও পুলিশ-প্রশাসন ব্যবস্থা নেয়নি। বিষয়টি দলের রাজ্য ও কেন্দ্রীয় নেতৃত্বকে জানাবেন বলে লক্ষ্মণবাবু জানান। সেই সঙ্গে তাঁর হুঁশিয়ারি, ‘‘সোমবার বিজেপি প্রার্থীরা ফের মনোনয়ন জমা দিতে যাবেন। ভয় দেখিয়ে দমিয়ে রাখা যাবে না। আমরা অশান্তি চাই না। তবে ফের আক্রমণ হলে উপযুক্ত জবাব দেওয়া হবে। আমরা তৈরি আছি।’’