পঞ্চায়েত বা পঞ্চায়েত সমিতির বেশির ভাগ আসনেই লড়াই নেই। তবে পশ্চিম বর্ধমানে জেলা পরিষদ স্তরে ছবিটা সেই রকম নয়। ১৭টি আসনের মধ্যে ১৬টিতেই লড়াই হচ্ছে সেখানে। তা সত্ত্বেও জেলা পরিষদের দু’টি আসনে কোনও প্রার্থী দিতে পারেনি বামেরা। ওই দুই আসনে কাকে সমর্থন করবেন, সে নিয়ে বিভ্রান্ত দলের কর্মী-সমর্থকেরা।
জেলা পরিষদে পাণ্ডবেশ্বরের একটি আসন ইতিমধ্যে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জিতেছে তৃণমূল। সিপিএম ১৫টি এবং সিপিআই একটি আসনে মনোনয়ন জমা দিলেও অণ্ডালে সিপিআই এবং দুর্গাপুর-ফরিদপুরের একটি আসন থেকে সিপিএম মনোনয়ন তুলে নেয়। বামেদের অভিযোগ, শাসক দল জোর করে প্রার্থীদের মনোনয় প্রত্যাহার করিয়েছে। তৃণমূল যদিও সে কথা উড়িয়ে দিয়েছে।
এর ফলে, অণ্ডালের ৭ নম্বর জেলা পরিষদ আসনে বামেদের কোনও প্রার্থী নেই। সেখানে লড়াই হবে কংগ্রেসের আব্দুল নঈম ও তৃণমূলের কালোবরণ মণ্ডলের মধ্যে। দুর্গাপুর-ফরিদপুরের ৫ নম্বর আসনটিতে তৃণমূল প্রার্থী সুজিত মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে সরাসরি লড়াই হবে বিজেপির অনুপ সাঁইয়ের।
এই দুই আসনে কাকে সমর্থন করবেন, সে নিয়েই এখন ধোঁয়াশায় রয়েছেন বলে দাবি এলাকার সিপিএম কর্মীদের। তাঁরা জানান, সম্প্রতি দলের পার্টি কংগ্রেসে সিদ্ধান্ত হয়েছে, বিজেপিকে রোখাই প্রধান লক্ষ্য। সাম্প্রদায়িকতার মতো বিপদ রুখতে ধর্মনিরপেক্ষ গণতান্ত্রিক দলের সঙ্গে সমঝোতা হবে। অণ্ডাল ও ফরিদপুরের সিপিএম কর্মী-সমর্থকদের একাংশের মতে, সেক্ষেত্রে অণ্ডালে কংগ্রেস প্রার্থীকে সমর্থন করা যেতে পারে। সিপিএম নেতৃত্বেরও দাবি, বিজেপি-তৃণমূলকে রুখতে স্থানীয় স্তরে দলের কর্মীরা কংগ্রেস প্রার্থীর পাশে থাকলে আপত্তি নেই। কিন্তু সঙ্কট তৈরি হয়েছে দুর্গাপুর-ফরিদপুরের আসনটি নিয়ে। সেখানে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় এক দিকে তৃণমূল, অন্য দিকে বিজেপি। কর্মীরা জানান, দলের তরফে কোনও নির্দেশিকা আসেনি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক প্রবীণ সিপিএম কর্মী বলেন, ‘‘সাধারণ কর্মী-সমর্থকদের পাশাপাশি এই ব্লকে বহু পার্টি সদস্য রয়েছেন। সবাই অনিশ্চয়তার মধ্যে আছি।’’ দলের জেলা সম্পাদক গৌরাঙ্গ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘তৃণমূল এবং বিজেপি, দুই দলই আমাদের রাজনৈতিক শত্রু। তাই দলের কর্মী-সমর্থকদের আমরা কোনও দলকে ভোট দেওয়ার কথাই বলতে পারি না।’’
অণ্ডালে বাম কর্মীরা তাঁদের পাশে থাকবেন কি না, সে প্রশ্নে কংগ্রেসের জেলা (শিল্পাঞ্চল) সভাপতি দেবেশ চক্রবর্তীর বক্তব্য, ‘‘এখনও কিছু চূড়ান্ত হয়নি। তবে ওখানে স্থানীয় স্তরে বাম কর্মী-সমর্থকদের সঙ্গে আমাদের স্থানীয় নেতৃত্ব যোগাযোগ করছেন।’’
গোটা বিষয়টি নিয়ে তৃণমূলের জেলা কার্যকরী সভাপতি উত্তম মুখোপাধ্যায়ের প্রতিক্রিয়া, ‘‘সিপিএমের পায়ের তলায় মাটি নেই। তাই তারা কী বলছে, কার পাশে থাকছে, সে সব অর্থহীন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy