Advertisement
E-Paper

জট কাটিয়ে চালু হচ্ছে বিস্কুট কারখানা

নোট বাতিলের জেরে কমে গিয়েছে চাহিদা। নগদের অভাবে সমস্যা হয়েছে শ্রমিকদের সাপ্তাহিক বেতন মেটাতে। এমন জোড়া ফাঁসের জেরে তালা ঝোলাতে হয়েছে, দাবি করেছিলেন বর্ধমানের আমড়ার বিস্কুট কারখানা কর্তৃপক্ষ।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১২ ডিসেম্বর ২০১৬ ০২:০৯
কারখানার গেটে শ্রমিকেরা। নিজস্ব চিত্র।

কারখানার গেটে শ্রমিকেরা। নিজস্ব চিত্র।

নোট বাতিলের জেরে কমে গিয়েছে চাহিদা। নগদের অভাবে সমস্যা হয়েছে শ্রমিকদের সাপ্তাহিক বেতন মেটাতে। এমন জোড়া ফাঁসের জেরে তালা ঝোলাতে হয়েছে, দাবি করেছিলেন বর্ধমানের আমড়ার বিস্কুট কারখানা কর্তৃপক্ষ। রবিবার কলকাতা থেকে সংস্থার চেয়ারম্যান সোমনাথ রায় পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে এলে ক্ষোভ জানালেন শ্রমিক-কর্মীরা। তাঁদের সঙ্গে বৈঠকের পরে চেয়ারম্যানের আশ্বাস, মঙ্গলবার থেকে উৎপাদন শুরু হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়ের উপরে বর্ধমান ২ ব্লকের আমড়ায় বছর দু’য়েক আগে কারখানাটি চালু হয়। বিখ্যাত বহুজাতিক সংস্থার দু’টি ব্র্যান্ডের বিস্কুট এই কারখানায় উৎপাদিত হয়। চুক্তিভিত্তিক ও অস্থায়ী মিলিয়ে ৩৪৩ জন ও দৈনিক মজুরিতে ৫৭ জন কাজ করেন। কারখানা সূত্রে জানা গিয়েছে, সমস্ত কর্মীকেই সপ্তাহের শেষে পারিশ্রমিক দেওয়া হয়। ৮ নভেম্বর ৫০০ ও ১০০০ টাকার নোট বাতিল হওয়ার পরে দু’সপ্তাহ পারিশ্রমিক বাবদ পুরনো নোট দেওয়া নিয়ে কারখানা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বচসা হয় শ্রমিকদের। এর পাশাপাশি প্রতিদিন ২৬-২৭ টন বিস্কুট উৎপাদন হলেও বাজারে চাহিদা কমে গিয়েছিল বলে কারখানা সূত্রের খবর। ফলে, উৎপাদিত বিস্কুটের অনেকটা কারখানাতেই মজুত হচ্ছিল। কারখানার অন্যতম কর্তা বিশ্বজিৎ রায় বলেন, “প্রতিদিন ১০ টন বিস্কুট বিক্রি হচ্ছিল। বাকি ১৬-১৭ টন জমা হচ্ছিল কারখানায়। নগদের অভাবে শ্রমিকদের ঠিক মতো পারিশ্রমিকও দেওয়া যাচ্ছিল না। সে জন্য কারখানা কয়েক দিন বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।”

কারখানার শ্রমিক রাজু রায়, শেখ সাদ্দাম, শুভাশিস প্রামাণিকেরা দাবি করেন, পারিশ্রমিক বাবদ পুরনো নোট নেবেন না বলার পরেই আচমকা কারখানার ভিতরের গেটে নোটিস দিয়ে জানিয়ে দেওয়া হয়, নোট বাতিলের জন্য বিস্কুট উৎপাদন বন্ধ রাখা হল। এর পরে কারখানার মূল গেটে তালা পড়ে যায়। শেখ আব্দুল, অচ্যুৎ নন্দরা আবার বলেন, “কর্তৃপক্ষ আমাদের চেক অথবা অনলাইনে মজুরি নেওয়ার জন্য বলেছিলেন। বেশির ভাগ শ্রমিকের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট নেই, সে জন্য ওই দাবি আমরা মানতে রাজি ছিলাম না।”

বিস্কুটের উৎপাদন বন্ধ হয়ে যাওয়ার জন্য শ্রমিকেরা গত দু’সপ্তাহ ধরে বেকার হয়ে গিয়েছেন। সে জন্য এ দিনের আলোচনার টেবিলে স্থানীয় তৃণমূল নেতা রাধাকৃষ্ণ প্রামাণিক দাবি করেন, “কারখানা বন্ধ থাকায় শ্রমিকদের পেটেও তালা পড়ে গিয়েছে। এই ক’দিন শ্রমিকদের দৈনিক অর্ধেক মজুরিও দেওয়া উচিত।” বৈঠকে ওই দাবি বিবেচনা করে দেখার আশ্বাস দেন কর্তৃপক্ষ।

এ দিন চেয়ারম্যান সোমনাথবাবু জানান, বিস্কুটের চাহিদা কমে যাওয়ায় তাঁদের হাতে নগদ আসছে না। আবার নগদের অভাবে শ্রমিকদের সাপ্তাহিক বেতন দেওয়াও সম্ভব হচ্ছিল না। ফলে, টানা বারো দিন কারখানায় উৎপাদন বন্ধ ছিল। বৈঠকের পরে তিনি বলেন, “কারখানা চালানোর স্বার্থে শ্রমিকেরা আমাদের কথা শুনে চেকের মাধ্যমে পারিশ্রমিক নেবেন বলে জানিয়েছেন। একদম নিরুপায় শ্রমিকদের আমরা নগদেই পারিশ্রমিক দেব বলে জানিয়েছি।” রাধাকৃষ্ণবাবু বলেন, “আমরা চাই, মালিক ও শ্রমিকের স্বার্থ বজায় রেখেই কারখানায় আবার উৎপাদন দ্রুত শুরু হোক।”

Biscuit factory Burdwan Reopen
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy