এমনই হাল এই সেতুর। নিজস্ব চিত্র।
সেতুর উপর দিয়ে ভারী গাড়ি চললেই কাঁপুনিটা রীতিমতো টের পাওয়া যায়। এ ছাড়া সেতুর দু’ধারে গার্ডওয়ালগুলিও নষ্ঠ হয়ে গিয়েছে। এমনই হাল মন্তেশ্বরে খড়ি নদীর উপরে থাকা মালডাঙা সেতুর।
বাসিন্দারা জানান, ১৯৭০ সালের আগে পর্যন্ত নদীর এক পাড় থেকে অন্য পাড়ে যেতে ভরসা ছিল একমাত্র খেয়া পারাপার। কিন্তু বর্ষা এলেই নদীতে জল বাড়ায় বাড়ত বিপদের সম্ভাবনা। সমস্যা সমাধানে তৈরি হয় কংক্রিটের তৈরি দীর্ঘ সেতুটি। প্রশাসনের সূত্রে জানা গিয়েছে, সেতুটি মূলত কয়েকটি শক্তিশালী বিমের কাঠামোর উপরে দাঁড়িয়ে রয়েছে। সেতুটি লম্বায় ৬০ ফুট ও চওড়ায় ২২ ফুট।
এই সেতুটি দিয়েই মেমারি, কাটোয়া, বর্ধমান, বোলপুর, কালনা, নাদনঘাট-সহ জেলার বিভিন্ন রুটের বাস চলাচল করে। এ ছাড়াও রাতভর চলে পণ্যবাহী ভারী লরি, ট্রাক। বাসিন্দাদের দাবি, নামী সংস্থাকে দিয়ে সেতুটি তৈরি করানো হয়। কিন্তু তারপরে আর সেতু সংস্কারে কোনও কাজ করা হয়নি। প্রশাসনের এই উদাসীনতার জেরেই সেতুটি বেহাল বলে দাবি বাসিন্দাদের। বাসিন্দারা জানান, সেতুর উপরে অন্তত তিনটি অংশে চওড়া ফাটল দেখা দিয়েছে। ফাটল বাড়তে বাড়তে নীচের লোহার রডও উঁকি মারছে। দীর্ঘ সেতুটির বেশির ভাগ জায়গাতেই গার্ডওয়াল ভেঙে গিয়েছে বলে জানান গাড়ির চালকেরা। শুধু তাই নয়, সেতুর উপরে রাস্তাজোড়া খন্দ তৈরি হয়েছে। বিপদ এড়াতে বালির বস্তা-সহ বিভিন্ন সরঞ্জাম দিয়ে খন্দটি অস্থায়ী ভাবে পূরণ করা হয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, অন্তত বছর তিনেক ধরে সেতুটির উপরে কোনও ভারী যানবাহন চলাচল করলেই কাঁপুনি টের পাওয়া যাচ্ছে।
সেতু বেহাল হওয়ায় যে কোনও মুহূর্তে বড় দুর্ঘটনা ঘটে বিপত্তি হতে পারে বলে আশঙ্কা নিত্যযাত্রীদের। কালনা-মালডাঙা রোডে বাস নিয়ে যাচ্ছিলেন বাবু সাহা নামে এক চালক। তিনি বলেন, ‘‘ওই সেতুর উপরে গাড়ি নিয়ে গেলেই গা ছমছম করে। মনে হয় এই বুঝি ভেঙে পড়ল সেতু।’’ এই রুটেরই পরিবহণ কর্মী হাজু ঘোষ। তিনিও বলেন, ‘‘সেতুতে গাড়ি উঠলেই মনে হয়, কখন পেরবো।’’ এলাকার প্রাক্তন শিক্ষক দেবনারায়ণ মণ্ডলের দাবি, ‘‘সেতুটি বহু পুরনো। সেতুটি সংস্কার করার জন্য প্রশাসনের দ্রুত পদক্ষেপ করা দরকার।’’
সমস্যার কথা স্বীকার করে নিয়েছেন এলাকার বিধায়ক সজল পাঁজাও। তাঁর দাবি, ‘‘সেতুর সমস্যার কথা সম্প্রতি আমার নজরে এসেছে। বিষয়টি জেলা পরিষদের নজরে আনা হয়েছে।’’ জেলা সভাধিপতি দেবু টুডুর আশ্বাস, ‘‘সেতু সংস্কারে আমরা দ্রুত পদক্ষেপ করছি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy