Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

‘মিশ্র পাঠ’ শুরু এ বার স্নাতক স্তরে

‘চয়েস বেসড ক্রেডিট সিস্টেম’-র (সিবিসিএস) মাধ্যমে স্নাতকস্তরে পড়ুয়াদের জন্য এমন পছন্দসই মিশ্র পাঠ্যক্রম চালু করছে বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়।

নিজস্ব সংবাদদাতা
বর্ধমান শেষ আপডেট: ০২ জুন ২০১৭ ০১:৪৫
Share: Save:

ইংরেজির ছাত্রটির ভীষণ পছন্দ ‘ওয়েলফেয়ার ইকোনমিক্স’। ইতিহাসের এক ছাত্রীটির পছন্দ ইয়েটসের কবিতা। ‘চয়েস বেসড ক্রেডিট সিস্টেম’-র (সিবিসিএস) মাধ্যমে স্নাতকস্তরে পড়ুয়াদের জন্য এমন পছন্দসই মিশ্র পাঠ্যক্রম চালু করছে বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়।

বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) প্রস্তাব মেনে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাণিজ্য শাখায় এবং কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয় সিবিএসসি পাঠ্যক্রম চালু করেছে। বর্ধমান ছাড়াও রাজ্যে বাঁকুড়া, সিধো-কানহো-বীরসা, গৌড়বঙ্গ, পঞ্চানন বর্মা ও ডায়মন্ডহারবার বিশ্ববিদ্যালয়ে এই পদ্ধতিতে পড়াশোনা চালু করতে চলেছে। বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের সিবিসিএস-সংক্রান্ত কমিটির প্রধান তথা সহ-উপাচার্য ষোড়শীমোহন দাঁ বলেন, “সংশ্লিষ্ট ছাত্র যে মূল বিষয়টি নিয়ে ভর্তি হবেন, সেই বিষয়টি যে শাখার সেখান থেকে তাঁরা পছন্দের বিষয় নিতে পারবেন।’’

কিন্তু এই নতুন পদ্ধতিতে কী ভাবে পড়াশোনা হবে? ষোড়শীমোহনবাবু জানান, নতুন পদ্ধতিতে পড়াশোনা হবে ক্লাস নির্ভর, যাকে ক্রেডিট বলা হচ্ছে। এক ঘণ্টা ক্লাস করলে এক ক্রেডিট যোগ হবে। প্র্যাকটিক্যালের ক্ষেত্রে দু’ঘণ্টা ক্লাস করতে হবে। নতুন পদ্ধতিতে তিন বছরে ছ’টি সেমেস্টারে মোট ১৮৫০ নম্বরে (১৪০ ক্রেডিট পয়েন্ট) পরীক্ষা দেবেন পড়ুয়ারা। অনার্সের পড়ুয়াদের প্রথম দু’টি সেমেস্টারে মূল বিষয় ও একটি ‘জেনেরিক ইলেকটিভ’ বিষয় নিয়ে পড়তে হবে। পরের দু’টি সেমেস্টারে ওই দু’টি বিষয়ের সঙ্গে যুক্ত হবে বাধ্যতামূলক বিষয়। শেষ দু’টি সেমেস্টারে মূল বিষয়ের দু’টি ‘স্পেশ্যাল পেপার’-র সঙ্গে থাকছে দক্ষতা বৃদ্ধিকারী (স্কিল এনহেন্সমেন্ট) বিষয়। পাস কোর্সে বিজ্ঞান শাখায় প্রথম চারটে সেমেস্টারে তিনটি করে পছন্দমতো বিষয় এবং শেষ দু’টি সেমেস্টারে মূল তিনটে বিষয়ের মধ্যে দু’টি বিষয়কে ‘স্পেশ্যাল’ ভাবে পড়তে হবে পড়ুয়াদের। বাণিজ্য ও কলা বিভাগের ক্ষেত্রে পড়ুয়ারা প্রথম চারটে সেমেস্টারে দু’টি করে বিষয়ের সঙ্গে বাধ্যতামূলক ভাবে ইংরেজি ও একটি ভাষা পড়বেন। শেষ দু’টি ধাপে মূল বিষয়ের ‘স্পেশ্যাল পেপার’ ও অন্য বিষয় নিয়ে পড়ার সুযোগ পাবেন পড়ুয়ারা। তিন বছরে পাস কোর্সের পড়ুয়ারা ১৬৫০ বা ১২০ ক্রেডিট পয়েন্টের পরীক্ষা দেবেন।

তবে নতুন পদ্ধতি নিয়ে প্রশ্নও উঠেছে শিক্ষামহলে। বিভিন্ন কলেজের শিক্ষকদের অভিযোগ, প্রতি ছ’মাস অন্তর পরীক্ষা নেওয়া, ফল প্রকাশ করা, নতুন সিলেবাস দ্রুত পৌঁছনো-সহ নানা বিষয়ে প্রশ্ন উঠেছে। আরও অভিযোগ, এই পরিস্থিতিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের বেশ কিছু কলেজে ভর্তি প্রক্রিয়া কী ভাবে হবে, তা নিয়ে জটিলতা তৈরি হয়েছে। কাটোয়া কলেজের অধ্যক্ষ নির্মলেন্দু সরকার বলেন, ‘‘নতুন পদ্ধতিতে প্রযুক্তিগত পরিবর্তন হওয়ায় সমস্যা হচ্ছে। তাই উচ্চমাধ্যমিকের ফল বেরনোর পরের দিন থেকেই ফর্ম বিলি করতে পারিনি।’’ তবে সূত্রের খবর, রাজ কলেজ, কাটোয়া কলেজ শনি-রবিবার অনলাইনে ফর্ম দেওয়া শুরু করবে।

যদিও বিশ্ববিদ্যালয়ের এক আধিকারিক বলেন, “কোনও সমস্যা হবে না। সিলেবাসও তৈরি হয়ে গিয়েছে।’’ নতুন পদ্ধতিতে ধারাবাহিক মূল্যায়ণ, ক্লাসে উপস্থিতি বাড়বে বলেই আশা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE