Advertisement
৩০ এপ্রিল ২০২৪
কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায় বার্ন স্ট্যান্ডার্ড গোটানোর সিদ্ধান্তে হতাশ কর্মীরা

কারখানা বন্ধ সাহসী সিদ্ধান্ত, দাবি বাবুলের

বুধবার রাতেই খবর পেয়ে গিয়েছিলেন শ্রমিক-কর্মীরা। বৃহস্পতিবার দিনভর কেন্দ্রের সিদ্ধান্ত নিয়ে সরগরম ছিল বার্নপুরের বার্ন স্ট্যান্ডার্ড কারখানা চত্বর। হতাশ শ্রমিক-কর্মীরা ছোট-বড় জটলা করে দফায়-দফায় ক্ষোভ উগরে দেন।

বৃহস্পতিবার সকালে কারখানায় জটলা কর্মীদের। নিজস্ব চিত্র

বৃহস্পতিবার সকালে কারখানায় জটলা কর্মীদের। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
আসানসোল শেষ আপডেট: ০৬ এপ্রিল ২০১৮ ০১:১৫
Share: Save:

কেন্দ্রের বার্ন স্ট্যান্ডার্ড গোটানোর সিদ্ধান্তকে ‘সাহসী পদক্ষেপ’ বলে দাবি করলেন আসানসোলের বিজেপি সাংসদ তথা কেন্দ্রীয় ভারী শিল্প প্রতিমন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়। বুধবার ওই কারখানা বন্ধের সিদ্ধান্তে সিলমোহর দিয়েছে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা। বৃহস্পতিবার সে প্রসঙ্গে বাবুল বলেন, ‘‘প্রায় ১০ বছর ধরে এই সংস্থা লোকসানে চলছে। লোকসানে চলা সংস্থার পিছনে জনগণের টাকা ব্যয় না করে সেটি বন্ধ করে সরকার সাহসী পদক্ষেপই করেছে।’’ তবে কেন্দ্রের এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে ঐক্যবদ্ধ শ্রমিক আন্দোলনের ডাক দিয়েছেন রাজ্যের শ্রমমন্ত্রী তথা আসানসোলের বিধায়ক মলয় ঘটক।

বুধবার রাতেই খবর পেয়ে গিয়েছিলেন শ্রমিক-কর্মীরা। বৃহস্পতিবার দিনভর কেন্দ্রের সিদ্ধান্ত নিয়ে সরগরম ছিল বার্নপুরের বার্ন স্ট্যান্ডার্ড কারখানা চত্বর। হতাশ শ্রমিক-কর্মীরা ছোট-বড় জটলা করে দফায়-দফায় ক্ষোভ উগরে দেন। আর্থিক নিরাপত্তা কী মিলবে, সে নিয়ে চিন্তিত তাঁরা। কারখানা গুটিয়ে নিতে ৪১৭ কোটি টাকা দেবে কেন্দ্র। কিন্তু শ্রমিক-কর্মীদের দাবি, কী ভাবে আর্থিক ক্ষতিপূরণ মিলবে, তা এখনও তাঁরা জানেন না। তাই কিছুটা ধন্দে রয়েছেন তাঁরা।

বাবুল অভিযোগ করেন, বছর দশেক ধরে এই সংস্থা লোকসানে চলেছে। ইউপিএ জমানায় এই রকম অনেক লোকসানে চলা সংস্থার ভবিষ্যত ঝুলিয়ে রেখে দেশের অর্থনীতির ক্ষতি করা হয়েছে। মন্ত্রীর দাবি, তিনি এ ব্যাপারে বহু আলোচনা করলেও শেষ পর্যন্ত এই সংস্থা চালানো সম্ভব হয়নি। শ্রমিক-কর্মীরা যাতে কোনও ভাবে আর্থিক ক্ষতির মুখে না পড়েন, সরকার তা গুরুত্ব দিয়ে দেখেছে।

স্থায়ী শ্রমিক-কর্মীরা কিছুটা আর্থিক সুবিধা পেলেও অথৈ জলে পড়ছেন কারখানার শ’দে়ড়েক ঠিকা শ্রমিক। কারণ, ক্ষতিপূরণ বাবদ কেন্দ্রের আর্থিক অনুদানে ঠিকা শ্রমিকদের জন্য কিছু বরাদ্দ হয়নি। তাই কার্যত মাথায় আকাশ ভেঙে পড়েছে তাঁদের। মন্ত্রী বাবুলের অবশ্য বক্তব্য, ‘‘এ ব্যাপারে কিছু করার নেই। তাঁদের অন্যত্র চাকরি খুঁজে নিতে হবে।’’

শ্রমমন্ত্রী মলয়বাবু অবশ্য এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে আন্দোলনে নামার ডাক দিয়েছেন। তাঁর অভিযোগ, ‘‘একের পর এক সংস্থা বন্ধ হচ্ছে। একাধিক কোলিয়ারি বন্ধের সিদ্ধান্ত হচ্ছে। চাকরি দেওয়ার পরিবর্তে মোদী সরকার কেড়ে নিচ্ছে। এ সব রুখতে ঐক্যবদ্ধ শ্রমিক আন্দোলন করতে হবে।’’ সংস্থা বাঁচাতে ঐক্যবদ্ধ শ্রমিক আন্দোলনের ডাক দিয়েছেন এলাকার প্রাক্তন সাংসদ তথা সিটু নেতা বংশগোপাল চৌধুরীও। তাঁর আরও অভিযোগ, ‘‘বার্ন স্ট্যান্ডার্ড বাঁচাতে রাজ্য সরকারের যে সদর্থক ভূমিকা নেওয়া উচিত ছিল, তা নেওয়া হয়নি। তাই কেন্দ্র একতরফা ভাবে সংস্থা গোটানোর সাহস দেখিয়েছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE