E-Paper

গরমে খনির কাজে সমস্যা, দুপুরে বন্ধ থাকছে বাস

ইসিএল সূত্রে জানা গিয়েছে, তাদের ১৪টি এরিয়ায় ৫০টি ভূগর্ভস্থ ও ৩০টি খোলামুখ খনি আছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ৩০ এপ্রিল ২০২৪ ০৮:২৯
গরমের রাস্তায়। কুলটিতে রবিবার।

গরমের রাস্তায়। কুলটিতে রবিবার। ছবি: পাপন চৌধুরী।

সপ্তাহখানেক ধরে জেলায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নীচে নামেনি। কখনও তা পৌঁছে যাচ্ছে ৪৫ ডিগ্রির উপরে। তার সঙ্গে বইছে গরম হাওয়া। এই পরিবেশে সমস্যা হচ্ছে ইসিএলের খোলামুখ খনিগুলিতে কর্মরত কর্মীদের। অভিযোগ, খনিগুলিতে শ্রমিকদের জন্য উপযুক্ত বিশ্রামাগার নেই। পর্যাপ্ত জলও মেলে না। ইসিএল কর্তৃপক্ষ জানান, বিষয়গুলি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তবে, এখনও পর্যন্ত উৎপাদনে এই গরমের প্রভাব পড়েনি বলে দাবি সংস্থার। এই দাবদাহের প্রভাব পড়ছে জনজীবনেও। সে জন্য চিকিৎসক থেকে দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্যদের তরফে বার বার সচেতনতার বার্তা দেওয়া হচ্ছে।

ইসিএল সূত্রে জানা গিয়েছে, তাদের ১৪টি এরিয়ায় ৫০টি ভূগর্ভস্থ ও ৩০টি খোলামুখ খনি আছে। দৈনিক মোট এক লক্ষ ষাট হাজার টন কয়লার মধ্যে এক লক্ষ দশ হাজার টন উত্তোলন হয় খোলামুখ খনিগুলি থেকেই। খোলামুখ খনিতে যুক্ত কুড়ি হাজারের বেশি কর্মী। মাইনিং সর্দার ও ওভারম্যানদের সংগঠন ‘ইনমোসা’র সম্পাদক অমিতাভ বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, প্রচন্ড গরমে খোলামুখ খনিতে কয়লা পরিবহণের রাস্তায় নিয়মিত জল ছেটাতে হয়। সেটা না হলেই বিপাকে পড়তে হয় কর্মীদের। কারণ, কয়লার গুঁড়োর সঙ্গে ধুলোও ওড়ে। এতে কর্মী ও চালকদের সমস্যা যায়। আইএনটিইউসি অনুমোদিত, কোলিয়ারি মজদুর ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক চণ্ডীচরণ বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, খোলামুখ খনিগুলিতে অ্যাসবেস্টসের ছাদ
বিশিষ্ট বিশ্রামাগার আছে। তাতে গরম থেকে রেহাই মেলে না। পর্যাপ্ত জল থাকে না বলে অভিযোগ। যে সব কর্মীদের খনির সব থেকে নীচে নামতে হয়, গরমকালে তাঁদের প্রতি দু’ঘণ্টা কাজ করার পরে এক ঘণ্টা করে বিশ্রাম দেওয়া ও বিশ্রামাগারে পর্যাপ্ত ঠান্ডা জল রাখা উচিত। বিশ্রামাগারের পরিকাঠামাগত উন্নয়ন জরুরি।

ইসিএলের ডিরেক্টর (টেকনিক্যাল) নীলাদ্রি রায়ের দাবি, খোলামুখ খনিতে কাজ করার জন্য প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা আছে। বিশ্রামাগারের বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে বলে আশ্বাস দেন তিনি।

এ দিকে, আসানসোল মিনিবাস অ্যাসোসিয়েশন সূত্রে জানা গিয়েছে, যাত্রীর অভাবে দুপুরের দিকে ৭৫ শতাংশ বাস বন্ধ থাকছে। আসানসোল মিনিবাস অ্যাসোসিয়েশনের
সম্পাদক সুদীপ রায় জানান, দুপুর ১টা থেকে বিকেল ৪টে পর্যন্ত যাত্রীর অভাবে বেশির ভাগ বাস বন্ধ রাখতে হচ্ছে। জেলা স্বাস্থ্য দফতর থেকে পরিবহণ কর্মীদের জন্য পর্যাপ্ত ওআরএস প্রতিদিন পাঠানো হচ্ছে।

জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক (সিএমওএইচ) শেখ মহম্মদ ইউনুস বলেন, আশাকর্মীদের মাধ্যমে বাড়ি বাড়ি সচেতনতা প্রচার করা হচ্ছে। যাঁরা সরাসরি সূর্যের আলোয়
কাজ করেন, তাঁদের দুপুরে কাজ না করার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। একান্ত বাইরে বেরোতে হলে পর্যাপ্ত জল বা নুন-চিনি মিশ্রিত জল সঙ্গে রাখা, কোনও অসুবিধা হলে নিকটতম স্বাস্থ্যকেন্দ্রে চিকিৎসা করানোর আবেদন জানানো হচ্ছে।” তিনি জানান, জেলা ও মহকুমা হাসপাতাল-সহ প্রতিটি ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে গরমে অসুস্থ হওয়া রোগীদের
জন্য দু’টি করে বাতানুকূল শয্যা
রাখা হয়েছে।

আসানসোল দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার সুবীর মণ্ডল জানান, এই দাবদাহ থেকে রক্ষা পেতে সবার আগে পরিবেশ সচেতনতা বাড়াতে হবে। প্রচুর গাছ লাগানোর পাশাপাশি ‘জল ধরো জল ভরো’ প্রকল্পের উপর জোর দেওয়া, জল অপচয় বন্ধ করতে হবে।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Lok Sabha Election 2024 Raniganj

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy