Advertisement
E-Paper

কোথায় ঠাঁই হবে, দুশ্চিন্তায় কর্মীরা

সংস্থার ঠিকা কর্মী গঙ্গা সেনগুপ্ত জানান, আগামী বছর মেয়ে মাধ্যমিক পরীক্ষা দেবে। কারখানায় ঝাঁপ পড়ে গেলে এখান থেকে পাততাড়ি গুটোতে হবে। কী করে মেয়ের লেখাপড়া চালাবেন, ভেবে পাচ্ছেন না তিনি।

সুশান্ত বণিক

শেষ আপডেট: ০৬ এপ্রিল ২০১৮ ০১:০৯
এই স্কুল নিয়েও সংশয়। নিজস্ব চিত্র

এই স্কুল নিয়েও সংশয়। নিজস্ব চিত্র

উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা দিচ্ছে তারা। এর পরে কী নিয়ে পড়াশোনা করবে, সে সব চিন্তাভাবনাও শুরু হয়েছিল। কিন্তু বুধবার রাত থেকে চোখের সামনে যেন অন্ধকার নেমে এসেছে, জানাচ্ছে রিঙ্কি পাশি, শ্রাবন্তী মজুমদারেরা। এর পরে পড়াশোনা কী ভাবে হবে, সংসারই বা চলবে কী করে— চিন্তায় পড়েছেন বার্ন স্ট্যান্ডার্ডের আবাসনের এই বাসিন্দারা।

বুধবার রাতে খবর পাওয়ার পর থেকেই মাথায় হাত পড়েছে কর্মী ও তাদের পরিবারের লোকজনের। বৃহস্পতিবার সকালে এক কর্মীর মেয়ে, উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী সরিতাকুমারী মাল্লা বলে, ‘‘পড়াশোনা করে স্বনির্ভর হওয়ার স্বপ্ন ছিল। এখন তো মনে হচ্ছে পড়াশোনাই শেষ হবে না!’’ শ্রাবন্তীর কথায়, ‘‘বাবার কারখানা বন্ধ হয়ে যাচ্ছে শুনে বুধবার সারা রাত ঘুমোতে পারিনি। আমাদের ভবিষ্যৎ কী হবে জানি না!’’ সংস্থার ঠিকা কর্মী গঙ্গা সেনগুপ্ত জানান, আগামী বছর মেয়ে মাধ্যমিক পরীক্ষা দেবে। কারখানায় ঝাঁপ পড়ে গেলে এখান থেকে পাততাড়ি গুটোতে হবে। কী করে মেয়ের লেখাপড়া চালাবেন, ভেবে পাচ্ছেন না তিনি।

বছর দুয়েক আগে কর্মরত অবস্থায় শিখা শ্রীবাস্তবের স্বামীর মৃত্যু হয়। কিন্তু এখনও তাঁর বকেয়া মেটাননি কারখানা কর্তৃপক্ষ। কারখানা বন্ধের খবর শুনে প্রমাদ গুনতে শুরু করেছেন শিখাদেবী। তিনি বলেন, ‘‘কর্তৃপক্ষকে অনেক বার বকেয়া দেওয়ার আর্জি জানিয়েছি। কিন্তু কেউ কথা শুনছেন না।’’ কারখানা বন্ধ হয়ে গেলে কী ভাবে দরবার করবেন, বুঝতে পারছেন না তিনি। বছর তিনেক আগে অবসর নিয়েছেন মুকদেও সিংহ। কিছু অবসরকালীন ভাতা পেয়েছেন। তিনি জানান, এখনও প্রায় পাঁচ লক্ষ টাকা পাওনা রয়েছে। তা কবে মিলবে জানা নেই। তিনি বলেন, ‘‘শুনছি কারখানা বন্ধ হচ্ছে। পাওনা মিটিয়ে দিলে এলাকা ছেড়ে চলে যেতাম।’’

কর্মীদের সন্তানদের পড়াশোনার জন্য ১৯৬৫ সালে এলাকায় একটি প্রাথমিক স্কুল তৈরি করেন কারখানা কর্তৃপক্ষ। বৃহস্পতিবার সেই স্কুলে পড়াচ্ছিলেন সুস্মিতা সিংহ। তিনি জানান, শুধু শ্রমিক-কর্মীদের ছেলেমেয়েরা নয়, দূরদূরান্ত থেকে অন্য পড়ুয়ারাও আসে। স্কুলটির সরকারি অনুমোদন নেই। তবে জল, বিদ্যুৎ-সহ নানা ব্যবস্থা করে কারখানাই। সুস্মিতাদেবী বলেন, ‘‘এ বার মাঝপথে হয়তো স্কুলও গুটিয়ে দিতে হবে।’’ শ্রমিক-কর্মীদের আশঙ্কা, কলোনির জল-বিদ্যুৎও হয়তো এ বার ছিন্ন করে দেওয়া হবে। সেক্ষেত্রে নিরাপত্তাও বিঘ্নিত হবে। কোথায় গিয়ে দাঁড়াবেন তাঁরা, সেটাই এখন বড় চিন্তা কর্মীদের।

Burn Standard Company বার্ন স্ট্যান্ডার্ড
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy