Advertisement
E-Paper

স্বনির্ভরতায় জোর মুখ্যমন্ত্রীর

সভামঞ্চের পাশেই স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলাদের উৎপাদিত হস্তশিল্পের প্রদর্শনী ব্যবস্থা ছিল। হেলিকপ্টার থেকে নেমে সেখানে গিয়ে তাঁদের সঙ্গে কথা বলেন মমতা।

সৌমেন দত্ত

শেষ আপডেট: ০৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ০৯:৪৭
West Bengal Chief Minister Mamata Banerjee at Bardhaman

বর্ধমানে প্রশাসনিক সভায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নিজস্ব চিত্র

মেয়েদের বিয়ে নয়, বরং স্বনির্ভর হতে শেখানোর বার্তা দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। করোনা-পর্বে স্কুলছুট বেড়েছে। অভাবের কারণে বহু ছেলেমেয়ে পড়াশোনা থেকে সরে গিয়েছে। বৃহস্পতিবার বর্ধমানের গোদায় প্রশাসনিক সভা থেকে সমস্ত ছেলেমেয়েকে হার না মেনে লড়াইয়ের কথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর কথায়, ‘‘মেয়েদের বিয়ে নিয়ে চিন্তা করবেন না। নিজের পায়ে দাঁড়াতে দিন। দরকারে ওরাই একশো জনের বিয়ে দেবে।’’

সভামঞ্চের পাশেই স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলাদের উৎপাদিত হস্তশিল্পের প্রদর্শনী ব্যবস্থা ছিল। হেলিকপ্টার থেকে নেমে সেখানে গিয়ে তাঁদের সঙ্গে কথা বলেন মমতা। দু’জনের কাছ থেকে ব্যাগ ও টুকিটাকি জিনিসও কেনেন। ভাতারের বামসোরের নুরন্নেসা বেগম বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী হাত দিয়ে উৎপাদিত সামগ্রীগুলি দেখেছেন। আমাদের নিজের পায়ে দাঁড়ানোর পরামর্শও দিয়েছেন।’’ পাশেই ছিলেন উজ্জ্বলা সরকার। তিনি বলেন, ‘‘আমার কাছ থেকে ব্যাগ কিনলেন উনি। আমি নিজেই ব্যাগ তৈরি করি জানার পরে স্বনির্ভর হওয়ার কথাও বললেন।’’ আউশগ্রামের মাফরুজা বেগম, দেওয়ানদিঘির সাবিনা খাতুনেরাও মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলার সুযোগ পেয়ে খুশি।

এ দিনের সভায় বিভিন্ন স্কুলের ছাত্রছাত্রী, শিক্ষক-শিক্ষিকা থেকে স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলাদের হাজির করেছিল জেলা প্রশাসন। মঞ্চের সামনেই তাঁরা ছিলেন। তাঁদের উদ্দেশ্যে মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্য, ‘‘আমাদের রাজ্যে এক লক্ষ স্বনির্ভর গোষ্ঠী ছিল। সেখান থেকে আমরা ১১ লক্ষ স্বনির্ভর গোষ্ঠী তৈরি করেছি। আমি চাই, তারা নিজের পায়ে এগিয়ে চলুক, আয় করুক।’’ পূর্ব বর্ধমানে স্বনির্ভর গোষ্ঠী রয়েছে ৫৫,০১১টি। এর মধ্যে ৩৮,৩৩৪টি গোষ্ঠী সরাসরি সরকারের আর্থিক সাহায্য পেয়ে স্বনির্ভর হয়ে উঠেছে। গত কয়েক বছরে প্রায় ২০ কোটি টাকা সাহায্য করেছে রাজ্য সরকার। তবে শুধু গোষ্ঠী নয়, ছেলেমেয়েদের পড়াশোনাতেও জোর দেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘‘শুধু পুঁথিগত শিক্ষা শিক্ষা নয়। শান্তিনিকেতন তৈরি করেছিলেন রবীন্দ্রনাথ। প্রকৃতির কোলে ছেলেমেয়েরা হাসবে, তারা পড়াশোনা করবে। মনে রাখবেন ছেলেমেয়েদের এগিয়ে যেতে বলতে হবে।’’ কৃষক, শ্রমিক পরিবারের ছেলেমেয়েদের নিজের পায়ে দাঁড়ানোর কথা বলেন তিনি।

পূর্ব বর্ধমানের অনেকে পরিযায়ী শ্রমিক হিসেবে বাইরে যান। আবার, বিভিন্ন সংস্থায় চাকরির জন্যও অনেকে ভিন্‌ রাজ্যে যান। এ দিন মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘চাকরির জন্য বাইরে যাবেন না, জীবন নষ্ট করবেন না। দু’বছরের মধ্যে দেউচা-পাঁচামি হয়ে যাবে। বীরভূমের পাশেই বর্ধমান। শিল্প-করিডর গড়ে উঠবে। ৭২ হাজার কোটি বিনিয়োগ করা হচ্ছে। প্রচুরচাকরি হবে।’’

সিপিএমের জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য অপূর্ব চট্টোপাধ্যায়ের কটাক্ষ, ‘‘স্বনির্ভর হতে গেলেও অর্থনীতির ভিত্তি থাকা দরকার। এ রাজ্যে তো অর্থনীতির কাঠামোটাই ভেঙে পড়েছে। সেখানে স্বনির্ভর কথাটাই বাতুলতা!’’ বিজেপির জেলা (বর্ধমান সদর সাংগঠনিক) মুখপাত্র সৌম্যরাজ বন্দ্যোপাধ্যায়ের দাবি, ‘‘যাঁরা ন্যায্য ডিএ দিতে পারে না, তাঁদের কাছে লোকভোলানো গল্প শুনে খিদে মিটবে না। চাকরি দিতে পারছে না বলে স্বনির্ভরতার গল্প শোনাচ্ছে।’’

Mamata Banerjee Self reliance
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy