Advertisement
০৫ মে ২০২৪
CID investigation

বাজি উদ্ধারে মামলা দায়ের, এল সিআইডি

বার্নপুরের রামবাঁধ অঞ্চলে মঙ্গলবার সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত দু’টি গুদামে অভিযান চালিয়ে প্রচুর পরিমাণে ‘নিষিদ্ধ’ বাজি বাজেয়াপ্ত করে পুলিশ।

ঘটনাস্থলে সিআইডি ও জেলা পুলিশের দল।

ঘটনাস্থলে সিআইডি ও জেলা পুলিশের দল। নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
বার্নপুর  শেষ আপডেট: ৩১ অগস্ট ২০২৩ ০৯:৩০
Share: Save:

হিরাপুর থানার বার্নপুরে ‘নিষিদ্ধ’ বাজি উদ্ধারের ঘটনায় এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করল পুলিশ। অভিযুক্ত কৃষ্ণ আগরওয়াল ওই এলাকারই বাসিন্দা। এ দিকে, মঙ্গলবার রাতে ঘটনাস্থলে গিয়ে সিআইডি অফিসারেরাও বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহ করেন বলে পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে। তবে এখনও পর্যন্ত হিরাপুর থানার পুলিশই এই মামলার তদন্ত করছে বলে জানা গিয়েছে। বুধবারও এলাকার বাসিন্দাদের মধ্যে আতঙ্ক রয়েছে।

বার্নপুরের রামবাঁধ অঞ্চলে মঙ্গলবার সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত দু’টি গুদামে অভিযান চালিয়ে প্রচুর পরিমাণে ‘নিষিদ্ধ’ বাজি বাজেয়াপ্ত করে পুলিশ। সাত বার ট্রাক্টরে চাপিয়েও মজুত বাজি শেষ না হওয়ায়, অবশিষ্ট বাজি গুদামেই নিরাপদে রেখে তা ‘সিল’ করতে হয়েছে পুলিশকে। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়ায়। বিশেষ করে দত্তপুকুর-কাণ্ডের মাঝে আসানসোল শিল্পাঞ্চলের অত্যন্ত জনবহুল এলাকায় এই বিপুল পরিমাণ নিষিদ্ধ বাজি উদ্ধার হওয়ায়, বাসিন্দারা আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। মঙ্গলবার রাতে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে আসানসোল-দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের ডিসিপি (পশ্চিম) অভিষেক মোদী-সহ পুলিশ আধিকারিকদের একটি দল। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই দলে সিআইডি অফিসারেরাও ছিলেন। উদ্ধার হওয়া বাজি ও অভিযুক্তের বিষয়ে যাবতীয় তথ্য সংগ্রহ করেছেন সিআইডি অফিসারেরা। এ প্রসঙ্গে ডিসিপি অভিষেক মোদী বলেন, “নিষিদ্ধ বাজি মজুতের ঘটনায় কৃষ্ণ আগরওয়াল নামে এক ব্যক্তির নাম পাওয়া গিয়েছে। পুলিশ আইনি পদক্ষেপ করছে।” পুলিশ জানায়, কৃষ্ণের বিরুদ্ধে নির্দিষ্ট ধারায় মামলা রুজু করা হয়েছে। তবে তিনি এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যাওয়ায়, তাঁকে বুধবার সন্ধ্যা পর্যন্ত গ্রেফতার করা যায়নি। কিন্তু তাঁর গা ঢাকা দেওয়ার সম্ভাব্য জায়গাগুলিতে তল্লাশি চলছে।

এ দিকে, বুধবারও এলাকায় গিয়ে বোঝা গেল, স্থানীয়েরা বেশ আতঙ্কের মধ্যেই রয়েছেন। বাসিন্দাদের দাবি, যে গুদাম থেকে বাজিগুলি উদ্ধার করা হয়েছে, তার দোতলার ঘরেই পরিবার নিয়ে বসবাস করেন কৃষ্ণ। কিন্তু বার বার ডেকেও এ দিন পরিবারের সদস্যদের দেখা মেলেনি।

প্রাথমিক তদন্তের পরে পুলিশ জানতে পেরেছে, ওই কারবারি বহু বছর ধরে বার্নপুরে বসবাস করছেন। বার্নপুর স্টেশনরোডে তাঁর আরও একটি খুচরো বাজি কারবারের দোকান রয়েছে। সেখানেও বাচ্চাদের খেলনা ও মহিলাদের পোশাক, প্রসাধনী সামগ্রীর কেনাবেচা হয়। তবে, এ সবের আড়ালেও সেখান থেকে নিয়মিত নিষিদ্ধ বাজির কেনাবেচা হত বলে স্থানীয় সূত্রে পুলিশ জানতে পেরেছে। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ আরও জেনেছে, এ সব বাজি মূলত ঝাড়খণ্ডের ঝরিয়া ও তামিলনাড়ুর শিবকাশি এলাকা থেকে এনে মজুত করা হয়েছিল। মঙ্গলবার বাজি উদ্ধারের পরেই আসানসোল-দুর্গাপুরের পুলিশ কমিশনার সুনীল চৌধুরী মন্তব্য করেছিলেন, অভিযান লাগাতার চলবে।

বুধবার কমিশনারেটের পুলিশ আধিকারিকেরা জানান, রানিগঞ্জ ও বরাকর এলাকাতেও বাজি মজুত করে রাখার খবর রয়েছে। সাধারণত উৎসবের মরসুম শুরু হওয়ার মাস দুই আগে থেকে বাজি মজুতের উদ্যোগ শুরু হয়।
মহালয়া থেকে শুরু হয় কেনাবেচা। পশ্চিমবঙ্গ-ঝড়খণ্ড সীমানার বরাকর ও ডুবুরডিহি পেরিয়ে ঝরিয়া থেকে চোরা পথে বাজির আমদানি করা হয়। তবে এ বার প্রথম থেকেই এই দুই সীমানায় কড়া পুলিশি
নজরদারি রাখা হচ্ছে বলে ডিসিপি অভিষেক জানিয়েছেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

burnpur
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE