Advertisement
E-Paper

আড্ডা দেব কোথায়, পার্কের দাবি শহরে

ঘড়ির কাঁটায় বিকেল ৫টা। সেই কলেজবেলা থেকে কাটোয়ার গৌরাঙ্গপাড়ার বছর সত্তরের শ্যামসুন্দর ভট্টাচার্য লাঠি হাতে বেরিয়ে পড়েন আড্ডার ঠেকের খোঁজে। কিন্তু বসবেন কোথায়, শহরজুড়ে বসার জায়গাটারই তো অভাব।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৯ জুন ২০১৬ ০০:৫৮
নদীর ঘাটে এ ভাবেই চলে আড্ডা। নিজস্ব চিত্র।

নদীর ঘাটে এ ভাবেই চলে আড্ডা। নিজস্ব চিত্র।

ঘড়ির কাঁটায় বিকেল ৫টা। সেই কলেজবেলা থেকে কাটোয়ার গৌরাঙ্গপাড়ার বছর সত্তরের শ্যামসুন্দর ভট্টাচার্য লাঠি হাতে বেরিয়ে পড়েন আড্ডার ঠেকের খোঁজে। কিন্তু বসবেন কোথায়, শহরজুড়ে বসার জায়গাটারই তো অভাব। গাঙ্গার ঘাটে আবার দেদার আবর্জনার স্তূপ। ফি দিন ঘুরতে বেরিয়ে এমনই ছবি দেখাটাই দ্বস্তুর হয়ে দাঁড়িয়েছে কাটোয়াবাসীর। বাসিন্দাদের অভিযোগ, কাটোয়ায় বিভিন্ন ঘাটের সংস্কার বা পার্ক তৈরিতে তেমন কোনও পদক্ষেপ করেনি প্রশাসন।

বাসিন্দারা জানান, এই মুহূর্তে শহরজুড়ে মাত্র তিনটে পার্ক রয়েছে। পুরসভার পাশে, শ্রাবণী লজ ও ভারতী ভবন লাগোয়া এলাকায় রয়েছে এই তিনটি পার্ক। শহরে তেমন ভাবে কোনও শিশু উদ্যান না থাকায় এই পার্কগুলিতেই খান কয়েক দোলনা টাঙিয়ে কাজ সেরেছে প্রশাসন। বাসিন্দারা জানান, পার্কগুলি আকারে তেমন বড় নয়। এমনকী পার্কে আসা সকলে বসার জায়গাটুকুও পান না।

দীর্ঘদিন ধরে ঘাট লাগোয়া এলাকায় পার্ক তৈরির দাবি জানিয়ে আসছেন বাসিন্দারা। কিন্তু অভিযোগ, আবেদনই সার। বাস্তবে জায়গার অভাবে শহর জুড়েই সান্ধ্য আড্ডার আসর বসে কারও বাড়িতে অথবা অজয়, গঙ্গার ঘাটে। অনেকে আবার কোথাও বসার জায়গা না পেয়ে টো-টো করে হেঁটেই বেড়ান। যেমন, কলেজ পড়ুয়া কঙ্কন নাথ। তাঁর আক্ষেপ, ‘‘বিকেলে পড়াশোনার চাপ তেমন থাকে না। কিন্তু এ দিক ও দিক ঘুরে বেড়ানো ছাড়া উপায় থাকে না। বসব কোথায়?’’ বাসিন্দাদের একাংশের আক্ষেপ, কলকাতায় গঙ্গার একাধিক ঘাটের সৌন্দর্যায়নে নজরকাড়া কাজ করেছে রাজ্য সরকার। বাসিন্দাদের আক্ষেপ, ‘‘কাটোয়ায় তেমনটা আর হল কই!’’ কাটোয়ার বাসিন্দা সুমিতা দাস নামে এক বধূও বলেন, ‘‘গঙ্গার পাড়ে পার্ক তৈরি করে অথবা সৌন্দর্যায়ন হলে শহরের চেহারাটাই বদলে যেত।’’

বিকেল হলে অনেকেই ভিড় জমান দেবরাজ ঘাটে। কিন্তু সেই ঘাটের অবস্থাও বেহাল বলে অভিযোগ বাসিন্দাদের। কিন্তু সন্ধ্যা নামলেই ঝুপ করে অন্ধকার নামে ঘাটে। বাসিন্দারা জানান, ঘাটে কোনও রকমে একটা আলো টিমটিম করে জ্বলে। বাসিন্দারা জানান, ঘাটে বসলেই ভেসে আসে আবর্জনার দুর্গন্ধ। অনেকে আবার বিকেলের আড্ডা জমান ছেঁড়াখালিঘাট, হসপিটাল মাঠে। অফিস থেকে বাড়ি ফিরছিলেন মালোপাড়ার সুরজিৎ দাস। তাঁর আক্ষেপ, ‘‘দেবরাজ ঘাট হোক বা হসপিটাল মাঠ, সর্বত্রই লোক গিজগিজ করে। শহরে একটা ভাল পার্ক না হলে চলছে না।’’ অনেকে আবার ভিড়ের ভয়ে বাড়ি থেকে বেরনোই ছেড়ে দিয়েছেন। যেমন, নবীন ধাড়া নামে এক প্রবীণ জানান, তিনি বিকেলটা এখন বাড়ির ছাদেই কাটিয়ে দেন।

শুধু যে আড্ডা দেওয়ার জায়গার অভাব তাই নয়। বাসিন্দাদের অভিযোগ, শহরের বিভিন্ন এলাকায় থাকা মনীষীদের মূর্তিগুলিকে ঘিরে কোনও সবুজায়নও করা হয়নি। তা ছাড়া শহরে ঢোকার মুখে নজরে পড়ে না কোনও ফলকের।

যদিও পুরসভা সূত্রে দাবি করা হয়েছে, মিউনিসিপালিটি মোড় থেকে অজয়বাঁধ পর্যন্ত একশোটি সৌর আলো বসানো হবে। পুরপ্রধান অমর রামের দাবি, ‘‘একটি বেসরকারি ব্যাঙ্ক কাটোয়া ঢোকার মুখে বর্ধমান রোডে ও পাঁচঘড়া মোড়ে ফলক তৈরির প্রস্তাব দিয়েছ পুরসভাকে। সাংসদ কোটা থেকে ৫০ লাখ টাকা করে ফেরিঘাট ও দেবরাজঘাটের উন্নয়নের জন্য দেওয়া হবে বলে জানি। ডাকবাংলো রোড সাজানো ও পার্ক তৈরির পরিকল্পনা রয়েছে।’’

park City
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy