(বাঁ দিকে) এই বাড়িটিরই ছাদের একাংশ ভেঙে গিয়েছে। (ডান দিকে) ইকরা গ্রামের এই উঠোনেই এসে পড়ে একটি গোলক। —নিজস্ব চিত্র।
আকাশ থেকে এসে বাড়ির ছাদ ভেঙে মাটি ফুঁড়ে ঢুকে গেল ধাতব গোলক! এমন ঘটনাতেই হইচই পড়েছে পশ্চিম বর্ধমানের আসানসোলের জামুড়িয়া থানার অন্তর্গত ইকরা এবং যাদুডাঙা গ্রামে। সকাল ৯টা নাগাদ ঘটনাটি ঘটে। গ্রামবাসীদের একাংশের দাবি, এই ঘটনা ‘মহাজাগতিক’। অনেকে দাবি করেছেন, কোনও উল্কাপিণ্ড এসে পড়েছে তাঁদের গ্রামে। যদিও পুলিশের অনুমান, স্থানীয় কারখানার মেশিন ঘুরতে ঘুরতে প্রচণ্ড গতিতে ছিটকে যাওয়ার কারণেই এই বিপত্তি।
ইকরা গ্রামের স্থানীয়দের একাংশের দাবি, সকাল ৯টা নাগাদ তাঁরা আকাশ থেকে দু’টি গোলাকার ধাতব বস্তুকে তীব্র গতিতে নীচের দিকে ধেয়ে আসতে দেখেন। এর মধ্যে একটি গোলক গ্রামের বাসিন্দা অনিল বাদ্যকরের দোতলা বাড়ির ছাদের একাংশ ভেঙে দেয়। এর পর মাটির ভিতরে ঢুকে যায় সেটি। অন্য গোলকটি গিয়ে পড়ে মাগারাম বাদ্যকর নামে এক বাসিন্দার উঠোনে। সেটি ছিটকে এসে লাগে বাড়ির কন্যা ঝুলন বাদ্যকরের গায়ে। আহত হন তিনি। তাঁর শরীরের বেশ কিছু অংশ পুড়ে গিয়েছে। এর পর ওই গোলকটি মাটির ভিতরে ঢুকে যায়। ঝুলনকে বর্তমানে স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। ধাতব গোলক পড়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে মঙ্গল মুর্মু এবং অনিল বাউড়ি নামে যাদুডাঙা গ্রামের দুই বাসিন্দার বাড়িও। এর পরেই দুই গ্রামে হইচই পড়ে যায়। ঘটনাস্থলে এসে তদন্ত শুরু করে জামুড়িয়া থানার পুলিশ। ধাতব গোলকটি কী, তা নিয়েও জল্পনা ছড়িয়ে পড়ে গ্রামবাসীদের মধ্যে।
তবে গোলকটি ‘মহাজাগতিক’ হওয়ার তত্ত্ব উড়িয়ে পুলিশের প্রাথমিক অনুমান, যাদুডাঙ্গার একটি লোহা কারখানার মোটর ভেঙে এই ঘটনা ঘটেছে। মোটরটি প্রচণ্ড গতিতে ঘুরছিল। সেই সময় সেটি ভেঙে যাওয়ায় মোটরটি খুলে চার ভাগে বেরিয়ে আসে। প্রচণ্ড গতিতে ছিটকে যায় চারটি টুকরো। বিষয়টি প্রকাশ্যে আসতেই কারখানার গেটের সামনে বিক্ষোভ দেখান উত্তেজিত জনতা। কারখানায় ভাঙচুর চালানো হয়। জামুড়িয়া-রানিগঞ্জ মুখ্য সড়ক অবরোধ করেও বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন অনেকে।
গ্রামবাসীদের দাবি, যে কারণেই ঘটনাটি ঘটুক না কেন, তার পূর্ণাঙ্গ তদন্ত করুক প্রশাসন। পাশাপাশি ক্ষতিগ্রস্ত গ্রামের বাড়িগুলি মেরামতি এবং আহতদের চিকিৎসার দায়িত্বও প্রশাসনকেও নিতে হবে বলে দাবি জানিয়েছেন তাঁরা।
ইকরা গ্রামের বাসিন্দা ভৈরব চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘সকালে বন্ধুদের সঙ্গে বেরিয়েছিলাম। দেখলাম আকাশ থেকে কিছু একটা উড়ে এসে পড়ল সামনের বাড়িতে। প্রচণ্ড আওয়াজ করে মাটিতে ঢুকে গেল। আমার মনে হচ্ছে মহাজাগতিক কিছু। পুরো বিষয়টি তদন্ত করে দেখা উচিত।’’ অন্য এক বাসিন্দা অরিজিৎ চট্টোপাধ্যায়ের কথায়, ‘‘মনে হচ্ছে গরমে উল্কাপিণ্ড এসে পড়েছে। বাদ্যকর পরিবারের এক জন মেয়ে আহত হয়েছে। ওর শরীর পুড়ে গিয়েছে। প্রশাসনের উচিত বিষয়টি তদন্ত করে দেখা।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy