Advertisement
E-Paper

বাবা-ছেলের বিরুদ্ধে টাকা নয়ছয়ের নালিশ, শুরু তদন্ত

নিয়োগ-সংক্রান্ত অভিযোগ ছিলই। এ বার আর্থিক অনিয়মেরও অভিযোগ উঠল বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ে।

সৌমেন দত্ত

শেষ আপডেট: ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ ০১:৩০

নিয়োগ-সংক্রান্ত অভিযোগ ছিলই। এ বার আর্থিক অনিয়মেরও অভিযোগ উঠল বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ে।

শিক্ষামন্ত্রীর কাছে লিখিত অভিযোগে জানানো হয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের বিদ্যুৎ বিভাগের অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার হিতেন্দ্রনাথ ঘোষের বাবা গোপালচন্দ্র ঘোষ বিদ্যুতের ঠিকাদার। সেই সুযোগে কোনও নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে বিদ্যুৎ বিভাগে ছেলে-বাবা মিলে বেআইনি লেনদেন চালিয়ে যাচ্ছে। শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে অভিযোগের প্রতিলিপি দেওয়া হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, রেজিস্ট্রার থেকে স্থানীয় বিধায়ক ও চেয়ারম্যান ইন কাউন্সিলের এক সদস্যকে।

শিক্ষামন্ত্রী জানিয়েছেন, আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগটি উচ্চশিক্ষা দফতর খতিয়ে দেখছে।

উচ্চশিক্ষা দফতর সূত্রে জানা যায়, নিয়োগ সংক্রান্ত অভিযোগের ভিত্তিতে গত ২৬ ডিসেম্বর পুরুলিয়ার সিধো কানহু বীরসা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য দীপকরঞ্জন মণ্ডলের নেতৃত্বে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। ওই কমিটিকেই এ বিষয়টি নিয়ে তদন্ত করে দু’মাসের মধ্যে রিপোর্ট জমা দিতে বলা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে খবর, অভিযোগের সাপেক্ষে সুনির্দিষ্ট তথ্য সংগ্রহ করে তদন্তকারী দলের কাছে জমা দেওয়া হয়েছে।

মাস দেড়েক আগে শ্যামল রায় নামে এক ব্যক্তি লিখিত ভাবে অভিযোগ করেন, হাওড়ার লিলুয়ার মীরপাড়া রোডের বাসিন্দা গোপালচন্দ্র ঘোষ একটি ঠিকাদার সংস্থা তৈরি করে বিশ্ববিদ্যালয়ে বিদ্যুৎ-সংক্রান্ত কাজ করছেন এবং তাঁর ছেলে হিতেন্দ্রনাথ ঘোষ ওই দফতরেরই অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়র। সঙ্গে বরাত পাওয়া কাজের দেখভালের দায়িত্বও তাঁর। শ্যামলবাবুর অভিযোগ, “বাবার বরাত পাওয়া কাজের বিল সই করে টাকা ছাড়ার নির্দেশ দিচ্ছে ছেলে। ইঞ্জিনিয়ারিং দফতরের নিয়ম অনুযায়ী, যা সম্পূর্ণ অনৈতিক।” চিঠিতে তাঁর আরও অভিযোগ, গত চার-পাঁচ বছরে বিশ্ববিদ্যালয়ের পুরনো ভবন সংস্কার করার নামে আর্থিক অনিয়ম হয়েছে। দরপত্র না ডেকে সরাসরি কাজের বরাত দেওয়া হয়েছে ওই অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়রের বাবার ঠিকাদারি সংস্থাকে। শুধু তাই নয়, বিশ্ববিদ্যালয়ে দরপত্র বা টেন্ডার কমিটি থাকলেও গত ৬ মাস ধরে তার কোনও বৈঠকই হয়নি।

চিঠির সঙ্গে নির্দিষ্ট ভাবে ৯টি তথ্যও দেওয়া হয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে, গোলাপবাগ ক্যাম্পাসে বিদ্যুৎ ব্যবস্থা ঢেলে সাজার জন্য ২ কোটি ২৭ লক্ষ ৯০ হাজার ৫৭৩ কোটি টাকার দরপত্র ডাকা হয়। কাজটির বরাত পান হিতেন্দ্রনাথবাবুর বাবা। আবার কাজটি দেখভালের দায়িত্বও তাঁরই ছিল। এর সঙ্গে বড় অঙ্কের টাকার কাজ করার মতো ‘ক্রেডেন্সিয়াল’ না থাকা সত্ত্বেও কাজের বরাত দেওয়া হয়েছিল বলে অভিযোগ। বিশ্ববিদ্যালয়ের দু’টি ক্যাম্পাস ছাড়াও ছাত্রাবাসগুলির বিদ্যুৎ ব্যবস্থা রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব পেয়েছিল একটি সংস্থা। অভিযোগ, ওই সংস্থাকেও সরাসরি কাজের বরাত দেওয়া হয়।

যদিও অভিযোগ উড়িয়ে হিতেনবাবুর দাবি, “এ রকম কোনও ব্যাপার নেই।” বিশ্ববিদ্যালয়ের টেন্ডার কমিটির আহ্বায়ক পার্থনারায়ণ ঘোষ বলেন, “দরপত্র ছাড়া কোনও কাজের বরাত দেওয়া হয় না।” রেজিস্ট্রার দেবকুমার পাঁজা বলেন, “ওই ইঞ্জিনিয়রের বাবা তাঁরই দফতরের ঠিকাদার, এটা বিশ্ববিদ্যালয়কে জানানো উচিত ছিল। এটা নৈতিকতার প্রশ্ন। বিষয়টি নিয়ে তদন্ত চলছে।”

Burdwan University Money Laundering Act
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy