Advertisement
০৬ মে ২০২৪
মেমারি কলেজে বিতর্ক

বিশৃঙ্খলা রোধে ব্যবস্থা, বিতর্ক ফ্লেক্সে

বিশৃঙ্খলা বন্ধে কড়া পদক্ষেপ করেছেন কলেজ কর্তৃপক্ষ। কিন্তু, সে জন্য টাঙানো বিজ্ঞপ্তিতে কলেজ কর্তৃপক্ষ মিটিং-মিছিল-ঘেরাও করলে বহিষ্কার করা হতে পারে জানানোয় বিতর্ক তৈরি হয়েছে মেমারিতে।

কলেজে সেই নোটিস। নিজস্ব চিত্র

কলেজে সেই নোটিস। নিজস্ব চিত্র

সৌমেন দত্ত
মেমারি শেষ আপডেট: ০৫ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০২:১০
Share: Save:

বিশৃঙ্খলা বন্ধে কড়া পদক্ষেপ করেছেন কলেজ কর্তৃপক্ষ। কিন্তু, সে জন্য টাঙানো বিজ্ঞপ্তিতে কলেজ কর্তৃপক্ষ মিটিং-মিছিল-ঘেরাও করলে বহিষ্কার করা হতে পারে জানানোয় বিতর্ক তৈরি হয়েছে মেমারিতে।

ছাত্র সংগঠনগুলির দাবি, ন্যায্য দাবিতে কোনও আন্দোলন করতেই পারেন পড়ুয়ারা। তা এ ভাবে বন্ধ করা যায় না। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষও জানান, শান্তিপূর্ণ ভাবে ছাত্রছাত্রীরা কলেজ কর্তৃপক্ষের কাছে দাবিদাওয়া জানাতে পারেন। মেমারি কলেজ কর্তৃপক্ষ অবশ্য জানান, কলেজে শৃঙ্খলা ফেরাতে কঠিন পদক্ষেপ হিসেবে এমন বিজ্ঞপ্তি দিতে হয়েছে। চলতি সপ্তাহেই তা খুলে দেওয়া হবে।

শনিবার মেমারি কলেজের অধ্যক্ষ দেবাশিস চক্রবর্তী বিজ্ঞপ্তি দিয়ে শিক্ষক-শিক্ষিকাদের সঙ্গে অশালীন আচরণ-সহ নানা অভিযোগে ১১ জন পড়ুয়াকে বহিষ্কারের কথা ঘোষণা করেন। বহিষ্কৃতদের মধ্যে রয়েছেন কলেজের ছাত্র সংসদের প্রাক্তন সাধারণ সম্পাদক প্রদীপ বাগ, কলেজের শিক্ষাকর্মী তথা মেমারি ১ তৃণমূল ছাত্র পরিষদ (টিএমসিপি) সভাপতি মুকেশ শর্মার স্ত্রী রিম্পা শিকদারেরা। এর পরেই দিন দুয়েক ধরে কলেজের দু’টি জায়গায় ফ্লেক্সে বিজ্ঞপ্তি দেখা যায়। তাতে লেখা রয়েছে, ‘যে সমস্ত ছাত্রছাত্রী কলেজ প্রাঙ্গণে মিছিল, মিটিং, ঘেরাও এবং শিক্ষক, শিক্ষিকা ও শিক্ষাকর্মীদের সঙ্গে অছাত্রছাত্রী সুলভ আচরণে লিপ্ত হবে, তাদেরকে কলেজ থেকে বহিষ্কার করতে কলেজ কর্তৃপক্ষ বাধ্য থাকবে’।

কলেজের বিজ্ঞপ্তি নিয়ে টিএমসিপি-র জেলা কার্যকরী সভাপতি রাসবিহারী হালদারের বক্তব্য, ‘‘কেউ অন্যায় করে থাকলে কলেজ কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা নিলে আমাদের কিছু বলার নেই। ব্যক্তিস্বার্থ চরিতার্থ করে আন্দোলনও ঠিক নয়। কিন্তু ন্যায্য দাবিতে পড়ুয়াদের আন্দোলন বন্ধ করাও অনুচিত।’’ এসএফআইয়ের জেলা সম্পাদক অনির্বাণ রায়চৌধুরীও বলেন, ‘‘একটি ঘটনাকে সামনে রেখে ছাত্র আন্দোলন বন্ধ করা উচিত নয়।’’ বিশ্ববিদ্যালয়ের কলেজসমূহের পরিদর্শক সুজিত চৌধুরী বলেন, ‘‘কোনও কলেজেই ছাত্র সংসদের অস্তিত্ব নেই। পড়ুয়াদের ন্যায্য দাবি নিয়ে মিটিং-মিছিলের উপরে নিষেধাজ্ঞা জারি করা যায় না।’’

অধ্যক্ষ দেবাশিসবাবু অবশ্য বলেন, ‘‘কলেজে পরীক্ষা চলছে। বিশৃঙ্খলা আটকাতেই ওই বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়েছে। শনিবার ওই ফ্লেক্স খুলে নেওয়া হবে।’’ ওই কলেজের প্রশাসক তথা মহকুমাশাসক (বর্ধমান দক্ষিণ) অনির্বাণ কোলে বলেন, “বিশৃঙ্খলা আটকাতে কড়া ব্যবস্থা নিতেই হবে।’’

প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, কলেজ থেকে বহিষ্কৃত পড়ুয়ারা জেলাশাসক অনুরাগ শ্রীবাস্তবের কাছে ক্ষমা চেয়ে সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার অনুরোধ জানিয়েছেন। জেলা তৃণমূলের একাংশের দাবি, কলেজ মুকেশ শর্মা ও তাঁর সঙ্গীদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করলেও তাঁরা সংগঠনের জেলা সভাপতি বাপ্পাদিত্য বন্দ্যোপাধ্যায়ের অনুগামী হওয়ার কারণে টিএমসিপি কোনও ব্যবস্থা নেয়নি। সে জন্য মেমারিতে সংগঠনের মুখ পুড়ছে। মুকেশ শুধু বলেন, ‘‘সংগঠনের নির্দেশ মতো চলব।’’ মঙ্গলবার বাপ্পাদিত্যকে ফোন করা হলেও তিনি এ বিষয়ে কোনও জবাব দেননি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Memari College Education Notice
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE