Advertisement
E-Paper

পয়লা বৈশাখ ‘ফিকে’, আক্ষেপ ব্যবসায়ীদের

বিপাকে পড়েছেন ক্যালেন্ডার, হালখাতার বরাত পাওয়ার অপেক্ষায় বসে থাকা ব্যবসায়ীরা।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১১ এপ্রিল ২০২০ ০০:০৮
মন্দিরের ফাঁকা গাজনতলাতেই উৎসবের সূচনা, কেতুগ্রামে। ছবি: অসিত বন্দ্যোপাধ্যায়

মন্দিরের ফাঁকা গাজনতলাতেই উৎসবের সূচনা, কেতুগ্রামে। ছবি: অসিত বন্দ্যোপাধ্যায়

দিনকয়েক পরেই বাংলা নববর্ষ। অন্য বার হালখাতা, গণেশ পুজোর তোড়জোড়, খরিদ্দারদের মিষ্টি, নতুন ক্যালেন্ডারের ব্যবস্থা করতে গিয়ে দম ফেলার ফুরসত পান না ব্যবসায়ীরা। এ বার অবশ্য সবই খাঁ-খাঁ করছে। পয়লা বৈশাখের অনুষ্ঠান বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন অনেক ব্যবসায়ী। ক্ষতির মুখে খাতা, ক্যালেন্ডার তৈরির কারিগর, মিষ্টির দোকান, ফল ব্যবসায়ী, মৃৎশিল্পীরাও।

কৃষি-প্রধান কালনা মহকুমায় এ বার আলু, পেঁয়াজ বিক্রি করে লাভজনক দর পেয়েছিলেন চাষিরা। ব্যবসায়ীদের অনুমান ছিল, বকেয়া টাকা আদায় করতে বেগ পেতে হবে না। কিন্তু কীটনাশক, সার, জুতোর দোকান, কাপড়ের দোকানের মালিকেরা বকেয়া তালিকা তৈরি করে পয়লা বৈশাখের আমন্ত্রণ পাঠানোর প্রস্তুতি পর্বেই তালা পড়ে যায় দেশে। থমকে যায় প্রস্তুতি। তার সঙ্গেই বিপাকে পড়েন ক্যালেন্ডার, হালখাতার বরাত পাওয়ার অপেক্ষায় বসে থাকা ব্যবসায়ীরা।

কাটোয়া শহরের স্টেশনারি দোকানের মালিক ধীরেন দত্ত বলেন, ‘‘মূল ব্যবসার সঙ্গে অনেক বছর ধরেই এই সময়ে ক্যালেন্ডারের ব্যবসা করি। ব্যবসায়ীরা মাসখানেক আগে থেকে হাজার, দু’হাজার পিস ক্যালেন্ডারের বরাত দেন। কিন্তু এ বার দোকানপাট, ছাপাখানা, ট্রেন সবই বন্ধ। ক্যালেন্ডারেরও বরাত পাইনি।’’ লাল্টু দাস নামে আর এক ব্যবসায়ীও বলেন, ‘‘চৈত্রের শুরুতেই ক্যাটালগ নিয়ে দোকানে দোকানে ঘুরে ক্যালেন্ডারের বরাত নিই। কেউ প্রাকৃতিক দৃশ্য, কেউ দেব-দেবীর মূর্তি, মনীষীদের ছবি দেওয়া ক্যালেন্ডার চান। সেই মতো কলকাতা থেকে দোকানের নাম, মালিকের নাম ও মোবাইল নম্বর-সহ পছন্দের ক্যালেন্ডার ছাপিয়ে আনি। লাভও হয় ভালই। তবে এ বার ব্যবসাই হল না।’’

কালনাতেও চৈত্রের মাঝামাঝি সময় থেকে ব্যস্ততা দেখা যায় ছাপাখানাগুলোয়। এ বার সবই বন্ধ। শহরের এক খাতার দোকানের মালিকের কথায়, ‘‘পয়লা বৈশাখকে সামনে রেখে লক্ষ লক্ষ টাকার খাতা বিক্রি হয়। মাস দেড়েক আগে থেকেই প্রস্তুতি শুরু হয়ে যায়। এ বার আগাম জিনিস নিয়ে এসেছিলাম। কিন্তু কিছুই প্রায় বিক্রি হল না।’’ কালনা ১ ব্লকের এক কাপড়ের দোকানের মালিকও জানান, এ বার চাষের পরিস্থিতি ভাল থাকায় ধার বাকির টাকা আদায় হয়ে যাওয়ার আশা ছিল। কিন্তু বাড়িতেই কেটে যাবে পয়লা বৈশাখ।

এই দিন পুরনো মূর্তি বিসর্জন দিয়ে নতুন গণেশ মূর্তির পুজো হয় বহু দোকানে। ছোট-বড় গণেশ মূর্তির চাহিদা থাকে জেলা জুড়ে। ‘লকডাউন’-এ ব্যবসায় ধাক্কা লেগেছে মৃৎশিল্পীদেরও। ধাত্রীগ্রামের মৃৎশিল্পী কমল পাল বলেন, ‘‘দোকানে বন্ধ, কে কিনবে মূর্তি! এমন বছর আগে কখনও দেখিনি।’’ মিষ্টি ব্যবসায়ীদেরও দাবি, এই সময়ে বোঁদে, লাড্ডু, মিহিদানার জোগান দিতে রাজ জেগে কাজ করতে হয় কারিগরদের। ব্যবসাও ভাল হয়। কিন্তু এ বার কোনও বরাতই আসেনি, দাবি নিভুজিবাজার মোড় এলাকার মিষ্টি ব্যবসায়ী দেবরাজ বারুইয়ের।

সকলেরই আশা, করোনা সংক্রমণ রোখা গেলে হয়তো অক্ষয় তৃতীয়ায় বাজার ফিরবে।

Covid-19 Kalna Katwa
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy