Advertisement
E-Paper

আদালত চলল রাতভর, শুনানি তিনশো মামলার

রাত গড়িয়ে সূর্যের আলো ফুটছে। তখনও চলছে শুনানি। বর্ধমান আদালতে শনিবার ভোরে দেখা গেল এই ছবিই। শুক্রবার সকাল সাড়ে ১০টা থেকে শুরু হয়েছিল আদালত।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ৩০ অক্টোবর ২০১৬ ০১:২২

রাত গড়িয়ে সূর্যের আলো ফুটছে। তখনও চলছে শুনানি। বর্ধমান আদালতে শনিবার ভোরে দেখা গেল এই ছবিই। শুক্রবার সকাল সাড়ে ১০টা থেকে শুরু হয়েছিল আদালত। শেষ হল শনিবার সকাল ৬টা নাগাদ। প্রায় সাড়ে একুশ ঘণ্টায় ৩০২টি মামলার জামিন ও আগাম জামিনের আবেদনের শুনানি হল আদালতের অবকাশকালীন বেঞ্চ বা ‘ভ্যাকেশনাল বেঞ্চ’-এ।

বর্ধমান জেলা আদালত ছাড়াও প্রতি বছর আসানসোল ও দুর্গাপুরে এই অবকাশকালীন বেঞ্চ বসে। অনেক সময়ে এই বেঞ্চের শুনানি শেষ হতে রাত গড়িয়ে যায়। ২০১২ সালে পুজোর ছুটির সময়ে দুর্গাপুরে অবকাশকালীন বেঞ্চ চলেছিল ভোর পর্যন্ত। টানা ১৭ ঘণ্টায় দেড়শোর বেশি মামলার শুনানি হয়েছিল। এ বার রাত গড়িয়ে সকাল পর্যন্ত কাজকর্ম চলল বর্ধমানে। খোলা থাকল আশেপাশের হোটেল, দোকানপাট। বিচারক, আইনজীবী, আদালতের কর্মী, বাদী-বিবাদী পক্ষের লোকজন— সব মিলিয়ে রাতভর গমগম করল আদালত চত্বর।

বর্ধমান জেলা বার অ্যাসোসিয়েশন সূত্রে জানা যায়, এ বার পুজোর ছুটিতেই এর আগে তিন দিন অবকাশকালীন বেঞ্চ বসেছিল। তবে ওই তিন দিন মামলা কম থাকায় রাত ৮টার মধ্যে কাজকর্ম শেষ হয়ে গিয়েছিল। রাজ্যের প্রাক্তন আইনমন্ত্রী তথা আইনজীবী নিশীথ অধিকারী বলেন, “এই ধরনের বেঞ্চ গভীর রাত পর্যন্ত হয়েছে, এমন দৃষ্টান্তও রয়েছে। কিন্তু রাত গড়িয়ে পরের দিন সকাল পর্যন্ত শুনানি চলছে, এটা নজিরবিহীন ও ইতিবাচক।”

ম্যাজিস্ট্রেট কোর্ট চালু থাকলেও মহালায় থেকে ভাইফোঁটা পর্যন্ত জেলা জজ কোর্ট টানা ছুটি থাকে। পুজোর মধ্যে নানা থানায় অনেক অভিযোগ দায়ের হয়ে থাকে। গ্রেফতারের পরে ম্যাজিস্ট্রেট কোর্টে জামিনের আবেদন খারিজ হয়ে গেলে উচ্চ আদালতে আবেদনের সুযোগ মেলে না অভিযুক্তদের। সেই সুযোগ করে দিতেই বর্ধমান জেলায় সাত দিন অবকাশকালীন বেঞ্চ বসে। জেলা বার অ্যাসোসিয়েশনের সঙ্গে আলোচনার পরে এ বছর বর্ধমানে চার দিন, আসানসোলে দু’দিন ও দুর্গাপুরে এক দিন এই বেঞ্চ বসেছিল। শুক্রবার বাদ দিয়ে কোনও ক্ষেত্রেই অবশ্য রাত পর্যন্ত বেঞ্চের কাজকর্ম এগোয়নি।

শুক্রবার আদালতের এই বেঞ্চের বিচারক ছিলেন শুভায়ু মুখোপাধ্যায়। ২১৮টি মামলা শুনানি হবে বলে আগে থেকে ঠিক ছিল। এ দিন আরও ৮৪টি মামলা জমা পড়ে। বর্ধমানের নানা আদালত থেকে এসেছিলেন আইনজীবীরা। সরকারি আইনজীবী বিশ্বজিৎ দাস বলেন, “১৯ জন সরকারি আইনজীবী-সহ মোট ৬৫ জন আইনজীবী হাজির ছিলেন। বিচারক বাদী-বিবাদী, সব পক্ষের প্রত্যেক আইনজীবীর কথা শুনেছেন। ১৭০টি মামলায় জামিন মঞ্জুর করেছেন।”

বর্ধমান বার অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক সদন তা বলেন, “সব মিলিয়ে শুনানি শেষ হতে সকাল ৬টা পেরিয়ে যায়। এর পরে আরও তিন-সাড়ে তিন ঘণ্টা কর্মীরা আদালতে ছিলেন। অর্থাৎ, টানা ২৪ ঘণ্টা ধরে আদালত খোলা ছিল। বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ মামলারও শুনানি হয়েছে।” সরকারকে ধান না দেওয়ায় অভিযুক্ত খণ্ডঘোষের পিয়াস আলি খান ও তাঁর স্ত্রী নাসলি বেগম খানের শর্তাধীন জামিন মঞ্জুর করেন অবকাশকালীন বেঞ্চের বিচারক। ওই চালকল মালিককে ১৪ দিনের মধ্যে সরকারের কাছে ১০ লক্ষ টাকা জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। তাঁদের মতোই জামিন মঞ্জুর হল আরও অনেকের।

আইনজীবীরা ছাড়াও রাতে প্রায় শ’দুয়েক লোক ছিলেন আদালতে। বিচারক, আইনজীবী, বিচারপ্রার্থী সকলে মিলে ফানুস উড়িয়ে দীপাবলিও উদযাপন করেন।

Court 300 cases hearing
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy