Advertisement
০৫ মে ২০২৪

‘ফণী’ নিয়ে চিন্তায় চাষিরা

কালেখাঁতলার এক চাষি গৌরব ঘোষের দাবি, ‘‘বড় ঝড় হলেই আনাজের মাচা ভেঙে খান খান হয়ে যাবে। নষ্ট হয়ে যাবে গাছ। ফলে দু’দিক থেকে লোকসানের মুখে পড়তে হবে।’’

কাটোয়ার গোয়াইয়ে জমি থেকে ধান তুলে নিচ্ছেন চাষি। বৃহস্পতিবার। ছবি: অসিত বন্দ্যোপাধ্যায়

কাটোয়ার গোয়াইয়ে জমি থেকে ধান তুলে নিচ্ছেন চাষি। বৃহস্পতিবার। ছবি: অসিত বন্দ্যোপাধ্যায়

নিজস্ব সংবাদদাতা
কালনা ও বর্ধমান শেষ আপডেট: ০৩ মে ২০১৯ ০২:১৩
Share: Save:

‘ফণী’র আতঙ্কে ধান, আনাজ নিয়ে চিন্তায় পড়েছেন চাষিরা। মাস দেড়েক আগেই জমি থেকে আলু, পেঁয়াজ তোলার ঠিক আগে নিম্নচাপের বৃষ্টিতে ক্ষতির মুখে পড়তে হয়েছিল চাষিদের। জমিতে পচে নষ্ট হয়ে যায় বহু ফসল। এ বার ধান ছাড়াও মাচায় চাষ করা হয় এমন আনাজ নিয়ে মুশকিলে পড়েছেন চাষিরা।

কৃষি দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, এখন মাঠে রয়েছে বোরো ধান, তিল এবং ঝিঙে, পটল, উচ্ছে, করলা, লাউয়ের মতো আনাজ। গাছে পুষ্ট হয়ে গিয়েছে আম, লিচুও। এই পরস্থিতিতে ‘ফণী’ মধ্যবঙ্গে খুব বেশি দাপট দেখালে বা টানা ঝড়বৃষ্টি হলে ফসল ঝরে ক্ষতির সম্ভাবনা রয়েছে। এই মুহূর্তে বেশির ভাগ জমিতেই বোরো ধান পেকে গিয়েছে। ঝড়ে ধান গাছ লুটিয়ে পড়তে পারে। তার সঙ্গে বৃষ্টি হলে ধান পুরোপুরি নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা করছেন চাষিরা।

জেলা কৃষি দফতর সূত্রে জানা যায়, সেচের জলের অভাবে অন্তত ৫০ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো চাষ কম হয়েছে এ বার। কয়েক দিন আগে ভাতার, মঙ্গলকোট ও মন্তেশ্বরের একাংশেও শিলাবৃষ্টির জন্যে ধানে ক্ষতি হয়েছে। জেলা কৃষি দফতরের উপ-অধিকর্তা (প্রশাসন) জগন্নাথ চট্টোপাধ্যায় বলেন, “সম্প্রতি শিলাবৃষ্টির জন্যে জেলার কয়েকটি ব্লকের সাড়ে ৭ হাজার হেক্টর জমির ধান ক্ষতির মুখে পড়েছিল। ধান কাটার মুখে ঘুর্ণিঝড় ও বৃষ্টি হলে অনেক ক্ষতি হয়ে যাবে। সে জন্যে চাষিদের কাছে আগাম সতর্কবার্তা পৌঁছানো হয়েছে।’’

দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

এলাকার চাহিদা মিটিয়ে পূর্বস্থলীর দুটি ব্লকের বিভিন্ন পাইকারি বাজার থেকে সারা বছর আনাজ যায় দেশের নানা জায়গায়। গরমে বহু চাষি মাচায় চাষ করেন আনাজ। কালেখাঁতলার এক চাষি গৌরব ঘোষের দাবি, ‘‘বড় ঝড় হলেই আনাজের মাচা ভেঙে খান খান হয়ে যাবে। নষ্ট হয়ে যাবে গাছ। ফলে দু’দিক থেকে লোকসানের মুখে পড়তে হবে।’’ আর এক আনাজ চাষি বলাই সরকার জানান, এ বছর আনাজের ভাল ফলন নেই। এই পরস্থিতিতে ঝড় বৃষ্টিতে গাছ নষ্ট হয়ে গেলে ফের চারা তৈরি করে ফলন পেতে অনেক সময় লেগে যাবে। তাঁর দাবি, বৃষ্টি ভারী হলে গোঁড়া পচা রোগের সংক্রমণ দেখা দেবে। জোগান কমে গেলে বাড়বে আনাজের দাম। আগের বছর রাজ্য আম উৎসবে সুনাম কুড়িয়েছিল পূর্বস্থলী ১ ব্লকের আম। এ বার দুর্যোগ নিয়ে চিন্তায় আম চাষিরাও।

কৃষি দফতরের দাবি, জোরকদমে চাষিদের সতর্ক করার কাজ শুরু হয়েছে। জেলার এক সহ কৃষি অধিকর্তা পার্থ ঘোষ বলেন, ‘‘যাঁদের জমিতে ধান পেকে গিয়েছে তাঁদের দ্রুত ধান কেটে খামারে তুলে নেওয়ার কথা বলা হচ্ছে। আনাজ চাষিদের মাচা শক্ত করার ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।’’ এ ছাড়াও লিফলেট এবং ভিডিয়োর মাধ্যমে প্রচার চালানো হচ্ছে বলেও তাঁর দাবি। লতানো আনাজ ও পানের ক্ষেত্রে মাচার সঙ্গে মোটা দড়ি দিয়ে বেঁধে রাখার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Cyclone Fani ফণী Cyclone Fani
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE