Advertisement
১০ মে ২০২৪

ব্যবসা বাঁচাতে লোকাল চালুর দাবি

করোনার জন্য গত এপ্রিল মাস থেকে ট্রেন চলাচল পুরোপুরি বন্ধ। ফলে, বিপাকে পড়েছেন রেলের নিত্যযাত্রী থেকে আসানসোল-দুর্গাপুরের ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা। 

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
আসানসোল শেষ আপডেট: ১০ নভেম্বর ২০২০ ০২:০০
Share: Save:

কাল, বুধবার থেকে হাওড়া ও শিয়ালদহ রুটে লোকাল ট্রেনের চাকা গড়বে বলে সিদ্ধান্ত হয়েছে। তাই পশ্চিম বর্ধমানের আসানসোল ডিভিশনে যাতে দ্রুত লোকাল ট্রেন চালু করা হয়, লিখিত ভাবে নিত্য রেলযাত্রী সংগঠন ও বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠনের পক্ষ থেকে ডিভিশন কর্তৃপক্ষ ও রেল বোর্ডের কাছে আবেদন জানানো হয়েছে। প্রত্যেকেরই দাবি, ধানবাদ, চিত্তরঞ্জন, পুরুলিয়ার রেলযাত্রীদের সুবিধার্থে শিয়ালদহ ও হাওড়া ডিভিশনের মতো আসানসোল ডিভিশনেও লোকাল ও স্বল্প দূরত্বের সুপারফাস্ট ট্রেন চালানোর ব্যবস্থা হোক। রেল সূত্রে জানা গিয়েছে, এ বিষয়ে এখনও কোনও নির্দেশ আসেনি। তবে শীঘ্রই এখানে লোকাল ট্রেন চালানোর সম্ভাবনা রয়েছে।

আসানসোল রেল ডিভিশন সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রতিদিন এই ডিভিশনের উপর দিয়ে প্রায় ১০৪টি মেমু লোকাল ট্রেন চলাচল করে। ট্রেনগুলি মূলত আসানসোল থেকে বর্ধমান, আদ্রা, যশিডি, ঝাঝা, গিরিডিহি, গোমো, ধানবাদ পর্যন্ত যাতায়াত করে। সব ট্রেনই আসানসোল ডিভিশনের তত্ত্বাবধানে চলাচল করে। তবে করোনার জন্য গত এপ্রিল মাস থেকে ট্রেন চলাচল পুরোপুরি বন্ধ। ফলে, বিপাকে পড়েছেন রেলের নিত্যযাত্রী থেকে আসানসোল-দুর্গাপুরের ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা।

আসানসোল রেল নিত্যযাত্রী অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক দেবাশিস দাস জানান, প্রতিদিন প্রায় ১৪ হাজার যাত্রী লোকাল ট্রেন অথবা স্বল্প দূরত্বের সুপার ফাস্ট ব্ল্যাকডায়মন্ড, অগ্নিবীণা ও কোলফিল্ড এক্সপ্রেস ধরে যাতায়াত করেন। তাঁরা সকলেই সরকারি ও বেসরকারি সংস্থার কর্মী, আধিকারিক। গত কয়েকমাস ধরে ট্রেন চলাচল বন্ধ থাকায় তাঁদের কর্মস্থলে যেতে আসতে সমস্যা হচ্ছে। দেবাশিসবাবু বলেন, ‘‘হাওড়া ও শিয়ালদহ ডিভিশনের মতো আসানসোল ডিভিশনেও লোকাল ট্রেন চালু করার জন্য আমরা ডিভিশন কর্তৃপক্ষ ও রেল বোর্ডের কাছে আবেদন জানিয়েছি।’’ নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সালানপুর ব্লকের এক পঞ্চায়েতকর্মী জানালেন, তিনি রোজ পুরুলিয়া থেকে ট্রেনে করে সালানপুরে আসেন। কিন্তু ট্রেন বন্ধ থাকায় এখন তাঁকে মেস ভাড়া করে আসানসোলে থাকতে হচ্ছে।

এখনও লোকাল ট্রেন চালু না হওয়ায় ক্ষুব্ধ আসানসোল ও দুর্গাপুর শিল্পাঞ্চলের ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা। বরাকর থেকে বর্ধমান পর্যন্ত তাঁদের সহজে যাতায়াতের মাধ্যমই হল লোকাল ট্রেন। আসানসোল বাজারের এক বস্ত্র ব্যবসায়ী অনিল জয়শওয়াল বলেন, ‘‘অণ্ডাল থেকে আসানসোলে যাতায়াত করি। আসানসোলে ট্রেন থেকে নেমে সহজেই বাজারে পৌঁছতে পারি। ট্রেন বন্ধ থাকায় সমস্যায় পড়েছি।’’ আসানসোল, দুর্গাপুর, বরাকর, রানিগঞ্জ থেকে কয়েক হাজার ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী সকালে অগ্নিবীণা বা কোলফিল্ড এক্সপ্রেস ধরে কলকাতায় যান। সেখানে বিভিন্ন সামগ্রী কেনাকাটা করে, শহরে ফিরে এসে সরবরাহ করেন। সে কাজও বন্ধ রয়েছে। আসানসোলের এমন এক ব্যবসায়ী অপি চন্দ বলেন, ‘‘গত প্রায় আট মাস ধরে ব্যবসা একেবারে বসে রয়েছে। বাসে যাতায়াত করে ব্যবসা কি আর চলে!’’ ইস্টার্ন রেলওয়ে মেনস কংগ্রেসের সভাপতি পিএল মিত্র ও ইস্টার্ন রেলওয়ে মেনস ইউনিয়নের সম্পাদক এমএস মণ্ডল বলেন, ‘‘আসানসোল ডিভিশনে ট্রেন চালানোর জন্য ডিভিশন কর্তৃপক্ষ ও রেল বোর্ডের কাছে লিখিত আবেদন করেছি। আশা করি, দ্রুত এ বিষয়ে ইতিবাচক পদক্ষেপ করা হবে।’’

এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে ডিভিশনের সিনিয়র জনসংয়োগ আধিকারিক একলব্য চক্রবর্তী বলেন, ‘‘ট্রেন চলাচলের বিষয়ে এখনও কোনও সুনির্দিষ্ট নির্দেশ আসেনি। তবে খবর এসেছে, কোন-কোন ট্রেন কত দূর পর্যন্ত কবে-কবে চলবে তার তালিকা তৈরি করা হচ্ছে। হেড কোয়ার্টারের তরফে নির্দেশ এলেই চালু হবে।’’ ডিভিশন সূত্রে জানা গিয়েছে, মেমু কোচগুলি দেখভালের দায়িত্বে থাকা ২৪০ জন কর্মীকে রেকগুলি রক্ষণাবেক্ষণের কাজে লাগানো হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE