শহরে রেলকর্মীদের জন্য আবাসন রয়েছে হাজার চারেক। এ ছাড়াও শহর ও লাগোয়া এলাকায় বাড়ি করে বসবাস করছেন আরও কয়েক হাজার প্রাক্তন রেলকর্মী। অসুখ-বিসুখে তাঁদের অনেকেরই ভরসা অন্ডাল রেল হাসপাতাল। কিন্তু কর্তৃপক্ষের উদাসীনতায় ক্রমেই বেহাল হয়ে পড়ছে সেই হাসপাতাল, অভিযোগ অন্ডালের বাসিন্দাদের।
রেলশহর হিসেবে গড়ে ওঠার পরে অন্ডালে এই হাসপাতাল তৈরি করা হয় রেলের তরফে। কিন্তু সেখানে এখন পরিষেবা ঠিক মতো মেলে না বলে অভিযোগ উঠেছে। হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, আগে চিফ মেডিক্যাল অফিসার পদ ছিল। এখন তার পরিবর্তে তৈরি হয়েছে মেডিক্যাল সুপারিন্টেন্ডেন্টের পদ।
হাসপাতালে এখন এক সার্জেন-সহ সাত জন চিকিৎসক রয়েছেন। তাঁদের মধ্যে এক জন চুক্তির ভিত্তিতে নিযুক্ত। দুই মহিলা চিকিৎসকের মধ্যে এক জন এখন মাতৃত্বকালীন ছুটিতে রয়েছেন, অন্য জনও শীঘ্রই ছুটিতে যাওয়ার আবেদন করেছেন। এক জন ডাক্তারকে পানাগড় স্বাস্থ্যকেন্দ্রেও চিকিৎসা করাতে যেতে হয়। ফলে, তিনি পুরো সময় দিতে পারেন না এই হাসপাতালে। আর দু’জন চিকিৎসক নিয়মিত আসেন না বলে অভিযোগ।
হাসপাতালে ইন্ডোর এবং আউটডোর, দু’বিভাগেই চিকিৎসার ব্যবস্থা রয়েছে। ইআরএমইউ-এর অন্ডাল শাখা সম্পাদক সমীরণ ঘোষ, ইআরএমসি-র অন্ডাল শাখা সম্পাদক অশোক কুমারেরা অভিযোগ করেন, আউটডোরে এক জন চিকিৎসক থাকার কথা, কিন্তু অনেক সময়েই তাঁর দেখা মেলে না। ইউএসজি করার যন্ত্র রয়েছে, সেটিতে পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য আসানসোল থেকে এক জন চিকিৎসক আসেন। তবে সব দিন তিনি আসতে পারেন না। এলাকাবাসীর অভিযোগ, পরিকাঠামো না থাকায় কোনও রোগীর সামান্য বাড়াবাড়ি হলেই এই হাসপাতাল থেকে আসানসোল বা দুর্গাপুরে ‘রেফার’ করে দেওয়া হয়। এই হাসপাতালটির অধীনে রয়েছে অন্ডাল ১২ নম্বর রেল কলোনি উপস্বাস্থ্যকেন্দ্রটি। সেখানেও চিকিৎসক নেই। কেন্দ্রটি চালান এক জন ফার্মাসিস্ট।
ঠিক মতো পরিষেবার জন্য কমপক্ষে দু’জন চিকিৎসক বাড়ানো দরকার বলে সমীরণবাবুদের দাবি। তাঁরা দাবি করেন, রেলকর্মীদের স্বার্থে এই হাসপাতালের উন্নয়ন খুবই জরুরি। কিন্তু এ ভাবে সঙ্কট তেরি করে এটি তুলে দেওয়ার চেষ্টা চলছে বলে তাঁদের সন্দেহ। যদিও রেলের আসানসোল ডিভিশনের জনসংযোগ আধিকারিক বিশ্বনাথ মুর্মু বলেন, ‘‘হাসপাতালের এই রকম পরিস্থিতির কথা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে কেউ জানাননি। জানানো হলে পদক্ষেপ করা হবে।’’