দুর্গাপুরের রাস্তায়। ছবি: বিকাশ মশান।
বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে কোনও দিন ভ্যাপসা গরম। কোনও দিন আবার রোদের তেজের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে গরম হাওয়া। যত দিন গড়াচ্ছে, গরমে অস্থির শিল্পাঞ্চল। স্কুল ছুটির পরে বাড়ি ফিরতে নাজেহাল দশা পড়ুয়াদের। শিশুকে সুস্থ রাখা অভিভাবকদের কাছে যেন রীতিমতো চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। পরিস্থিতি সামলাতে স্বাস্থ্যবিধি ঠিক ভাবে মানার উপরে জোর দিয়েছেন চিকিৎসকেরা।
মার্চ-এপ্রিল পেরিয়ে গিয়েছিল খানিকটা নির্বিঘ্নে। কিন্তু মে মাসের শুরু থেকেই শিল্পাঞ্চলে দাবদাহ বেড়ে গিয়েছে। দু’একটি স্কুলে গ্রীষ্মের ছুটিও পড়ে গিয়েছে। কিন্তু অধিকাংশ স্কুলই এখনও খোলা। ও দিকে আবার সকাল ১০টা বাজতে না বাজতেই রোদের তাপের চোটে বাইরে বেরোনো মুশকিল হয়ে পড়ছে। কিন্তু স্কুলগুলিতে তো তার আগে ছুটি হয় না। ফলে, সেই চড়া রোদ মাথায় নিয়েই বাড়ি ফিরতে হচ্ছে পড়ুয়াদের। বহু স্কুলে আবার এখনও আগের মতো সকাল ১০টা ৪০ থেকে ক্লাস শুরু হচ্ছে। বিকেলে যখন স্কুল ছুটি হচ্ছে, রোদের তেজ কমেনি। ফলে, যাওয়া এবং আসা— দুই পথেই ঘেমেনেয়ে একশা হচ্ছে পড়ুয়ারা।
চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, বাচ্চাদের জন্য কিছু সতর্কতা না নিলে তারা অসুস্থ হয়ে পড়তে পারে। কারণ, শরীর থেকে জলীয় অংশ এবং নুন ঘামের সঙ্গে বেরিয়ে যাচ্ছে। ফলে, নেতিয়ে পড়তে পারে খুদেরা। বড়দের ক্ষেত্রে হিট স্ট্রোক বা সান স্ট্রোকের আশঙ্কা থাকে। বাইরে থেকে বাড়িতে ফিরে সোজা শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত ঘরে ঢোকা একেবারে বারণ। ধীরে ধীরে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত যন্ত্রের তাপমাত্রা কমিয়ে শরীরকে সইয়ে নিতে হবে। তা না হলে হঠাৎ ঠান্ডার ধাক্কা সামলাতে পারবে না শরীর। তা ছাড়া, গরমে সংক্রামক ও মশাবাহিত রোগ বেশি হয়। খেয়াল রাখতে হবে সেই দিকেও।
চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, সারা দিনে নিয়ম করে শিশুকে জল খাওয়াতে হবে। বাইরে বেরোনোর সময় ছাতা বা টুপি দিতে হবে বাচ্চাকে। খালি পেটে থাকা যাবে না। তা হলেই গরমে অসুস্থ হওয়ার সম্ভাবনা বাড়ে। কাজেই খেয়াল রাখতে হবে, স্কুলে যেন বাচ্চা টিফিন পুরোটা খায়। তা না হলে সকালের খাওয়া এবং বাড়ি ফিরে দুপুরের খাওয়ার মাঝে লম্বা ফাঁক থেকে যাবে। সেক্ষেত্রে গরমে অসুস্থ হয়ে যেতে পারে বাচ্চা। বাড়ি ফেরার পরে ডাবের জলের ব্যবস্থা করা যেতে পারে। তা না হলে নুন-চিনির জল বা গ্লুকোজের জল দেওয়া যেতে পারে। দুপুর বা রাতের খাবার হাল্কা হওয়া চাই, যাতে হজমে কোনও সমস্যা না হয়। স্কুল থেকে ফিরে দুপুরের খাওয়া সেরে কিছুক্ষণের জন্য বিশ্রাম নেওয়া গেলে ভাল হয়।
দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালের প্রাক্তন সুপার, চিকিৎসক মিহির নন্দী বলেন, ‘‘কম বয়সে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম থাকে। তাই অতিরিক্ত সতর্কতা নেওয়া জরুরি।’’ ত্বকের চিকিৎসক শর্মিষ্ঠা দাস বলেন, ‘‘বাইরে বেরোলে বাচ্চাদের শরীর ঢাকা পোশাক পরানো জরুরি। এর ফলে শরীরে তাপ কম লাগবে। পাশাপাশি ত্বকও রক্ষা পাবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy