সাফাইয়ের দাবি ব্যবসায়ীদের। নিজস্ব চিত্র।
রাস্তার পাশে বসেই চলছে বিক্রিবাটা। এর জেরে যে কোনও মুহূর্তে ঘটতে পারে দুর্ঘটনা। আবার নিকাশি বেহাল হওয়ায় এই বাজারে ঢুকলে নাকে রুমাল নিয়ে যাওয়াটাই রোজকার ছবি বুদবুদ বাজারের। ব্যবসায়ীদের অভিযোগ প্রশাসনের বিভিন্ন মহলে বারবার দরবার করেও বাজারের পরিকাঠামো উন্নয়নে পদক্ষেপ করেনি কেউ।
বুদবুদ চেম্বার অফ কমার্সের সভাপতি রতন সাহা জানান, বুদবুদ বাজারে বর্তমানে ছোট-বড় মিলিয়ে প্রায় সাতশো দোকান রয়েছে। এলাকা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাজারও বাড়ছে বলে তাঁর দাবি। বাজার বাড়লেও সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে পরিকাঠানোর কোনও উন্নতি হয়নি বলে অভিযোগ ব্যবসায়ীদের। বাজারের সবথেকে বড় সমস্যা নিকাশি নিয়ে। ফলে অল্প বৃষ্টি পড়লেই সিুঁদুরে মেঘ দেখেন ব্যবসায়ীরা। তাঁরা জানান, সামান্য বৃষ্টিতেই জলে ভাসে দোকানঘর। এর জেরে পুরনো জাতীয় সড়কের উপরেও জল জমে যাতায়াতে সমস্যা তৈরি হয়। ক্রেতারা জানান, বাজারের মধ্যেই রয়েছে অনেকের বসতবাড়ি। বাড়িগুলির নিকাশির জলও বাজারের রাস্তার উপরে চলে আসে। বাজারে বেশ কয়েকটি ছোট নালা থাকলেও তা সমস্যা সমাধানের জন্য যথেষ্ট নয় বলে দাবি ব্যবসায়ীদের। স্থানীয় ব্যবসায়ী বাপি দাস, সেলিম মহম্মদ, কিশোর দে’রা জানান, অনেক সময়েই দোকানে জল ঢুকে বহু টাকার জিনসপত্র নষ্ট হয়ে যায়। ক্রেতাদেরও অভিযোগ, অল্প বৃষ্টি পড়লেই দুর্গন্ধের জেরে বাজারে যাওয়ায় রীতিমতো দায় হয়ে পড়ে। প্রতি বছর বর্ষায় বুদবুদ বাজারের পাশাপাশি থানা চত্বরেও জল ঢুকে বিপত্তি হয় বলে জানা গেল।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেল, এই এলাকার আঞ্চলিক ইতিহাস কিন্তু বেশ পুরনো। সিলামপুর হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক সুকুমার পাল বলেন, ‘‘শেরশাহের আমলের তৈরি হয় এই এলাকাটি। তখন এই বাজার এলাকার নাম ছিল বুদবুদ চটি। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় সেনাছাউনি তৈরি হওয়ার পর ধীরে ধীরে কদর বাড়তে থাকে বুদবুদ বাজারের।’’
কয়েক শতাব্দী প্রাচীন এই বাজার এলাকায় সব্জি বিক্রেতাদের জন্য কোনও স্থায়ী জায়গা না থাকা নিয়েও বাসিন্দাদের মধ্যে ক্ষোভ রয়েছে। বাসিন্দারা জানান, ফি দিন সকালে কসবা, মানা, অমরপুর-সহ বিভিন্ন এলাকা থেকে সব্জি বিক্রেতা ও চাষিরা বাজারে আসেন। বিক্রিবাটা চালানোর জন্য স্থায়ী কোনও জায়গা না থাকায় পুরনো জাতীয় সড়কের পাশে বসেই চলে বিক্রিবাটা। বাসিন্দাদের শঙ্কা, এর ফলে যে কোনও মুহূর্তে দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। মানকরের বাসিন্দা সুকুমার পাল বলেন, ‘‘রাস্তা দিয়ে সবসময়ই গাড়ি যাতায়াত করে। মনে হয় এই বুঝি কোনও বিপদ হল!’’ এই বাজারে মাছ ব্যবসায়ীদের জন্য ছাউনি দেওয়া একটি স্থায়ী জায়গা রয়েছে। কিন্তু সব্জি বিক্রেতাদের তেমনটা না থাকায় ক্ষুব্ধ মাছ ব্যবসায়ীরাও। বাজারের মাছ ব্যবসায়ী মহম্মদ আকবর, সরেশ ধীবরেরা বলেন, ‘‘বাজারে হাল ফেরাতে সব্জি বিক্রেতাদের জন্য ছাউনি দেওয়া স্থায়ী জায়গার দরকার রয়েছে।’’
তবে গলসি ১ পঞ্চায়েত সমিতির তরফে জানানো হয়েছে, বাজারের নিকাশি ব্যবস্থা উন্নত করতে বেশ কয়েকটি পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। গলসির বিধায়ক অলোককুমার মাজি বলেন, ‘‘ব্যবসায়ীরা আমাকে সমস্যার কথা জানিয়েছেন। বাজারের সামগ্রিক উন্নয়নের জন্য যত তাড়াতাড়ি সম্ভব পদক্ষেপ করব।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy