Advertisement
৩০ এপ্রিল ২০২৪
Kalna

এক টাকাতেও ফুলকপি, মাথায় হাত চাষিদের

কালনার জিউধারা, ধাত্রীগ্রাম, সমুদ্রগড়, পারুলিয়া, কালেখাঁতলা-সহ বেশ কয়েকটি জায়গায় আনাজের পাইকারি বাজার রয়েছে। ভোর হতেই চাষিরা উৎপাদিত ফসল নিয়ে হাজির হন সেখানে।

কালনার মাঠে ফুলকপি খাচ্ছে ছাগলে। নিজস্ব চিত্র

কালনার মাঠে ফুলকপি খাচ্ছে ছাগলে। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
কালনা শেষ আপডেট: ০৪ জানুয়ারি ২০২৩ ০৬:৫৯
Share: Save:

ফুলকপির দাম দুই থেকে চার টাকা। বাঁধাকপি বড় জোর তিন টাকা। বেগুন, মুলো, টমেটোর দাম কেজিতে ১০ টাকা পেলেও চাষিরা মনে করছেন অনেক। কালনার মহকুমার পাইকারি আনাজ বাজারগুলিতে ঘুরলে দেখা যাচ্ছে এই ছবি। কেউ কেউ বাজারে নিয়ে যাওয়ার খরচ উঠবে না বুঝে জমির টাটকা ফুলকপি খাইয়ে দিচ্ছেন গবাদি পশুদের। মুশকিলে পড়েছেন প্রায় কয়েক হাজার চাষি।

কালনার জিউধারা, ধাত্রীগ্রাম, সমুদ্রগড়, পারুলিয়া, কালেখাঁতলা-সহ বেশ কয়েকটি জায়গায় আনাজের পাইকারি বাজার রয়েছে। ভোর হতেই চাষিরা উৎপাদিত ফসল নিয়ে হাজির হন সেখানে। মোটরভ্যান, সাইকেল ভ্যান, ট্রাক্টরে ডাঁই করে আনা হয় আনাজ। পাইকারি বাজার থেকে আড়ৎদারের মাধ্যমে সেই আনাজ কিনে নিয়ে যান ফড়েরা। চাষিদের দাবি, মঙ্গলবার মহকুমার বিভিন্ন পাইকারি বাজারে ফুলকপি বিক্রি হয়েছে দুই থেরে চার টাকা দরে। চার টাকায় যে ফুলকপি বিকিয়েছে তার ওজন কিলো দেড়েক। বাঁধাকপি বিক্রি হয়েছে দুই থেকে তিন টাকা প্রতিটি। এ ছাড়াও সিম, বেগুন কেজি প্রতি সাত থেকে ১০ টাকা, মটরশুঁটি ২০ থেকে ২৫ টাকা, মুলো ছয় থেকে সাত টাকা, টমেটো আট থেকে ন’টাকা কেজি, বিট, গাজর ১২ থেকে ১৫ টাকা কেজিতে বিক্রি হয়েছে। কালেখাঁতলা পাইকারি বাজারের আড়ৎদার ক্ষুদিরাম মাহাতো বলেন, ‘‘ফুলকপি এক টাকাতেও বিক্রি হচ্ছে। আবার কোনও কোনও দিন ফুলকপির খরিদ্দারই থাকছে না। বাঁধাকপিও মাঝেমধ্যে ৫০ কেজির বস্তা ৫০ থেকে ৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।’’ চড়া দামে সার কিনে চাষ করে চাষিরা খুবই লোকসানে পড়ছেন বলে দাবি করেন তিনি।

এ দিন পূর্বস্থলী ২ ব্লকের হৃষি, মুড়াগাছা এলাকায় অনেকে চাষিকে জমিতেই ফুলকপি গরু, ছাগলকে খাইয়ে দিতে দেখা যায়। ফুলকপি চাষি মিঠুন দাস বলেন, ‘‘জমি থেকে ফসল তুলে বাজারে নিয়ে যেতে যা খরচ হচ্ছে, অনেক সময় সেই টাকাটাও ফুলকপি বিক্রি করে মিলছে না। জমি খালি করার জন্যই গরু ছাগলকে কপি খাইয়ে দেওয়া হচ্ছে।’’ লক্ষ্মীকান্ত দাস, গোলাম দাসেরাও জানান, মাঝ মাঠে যেখানে ট্রাক্টর পৌঁছতে অসুবিধা রয়েছে, অথচ জমি খালি করার প্রয়োজন রয়েছে সেখানে জমি ফাঁকা করতে ফুলকপি খাইয়ে দেওয়া হচ্ছে পশুদের। চাষ করে ঋণের টাকা শোধ করতে পারবেন বলেও আশঙ্কা তাঁদের। জেলার এক সহ কৃষি অধিকর্তা পার্থ ঘোষ বলেন, ‘‘এ বার এখনও পর্যন্ত কোনও প্রাকৃতিক দুর্যোগ নেই। ভাল আবহাওয়ার কারণে রোগপোকার হামলাও তেমন নেই। ফলে আনাজের উৎপাদন হয়েছে প্রচুর। আচমকা বাজারে প্রচুর আনাজ চলে আসায় দাম কমে গিয়েছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Kalna cauliflower
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE