জেলা খাদ্য নিয়ামকের দফতরের সামনে ক্ষোভ। নিজস্ব চিত্র।
প্রায় মাস চারেক আগে সরকারি সহায়ক মূল্যে ধান বিক্রি করেছিলেন। কিন্তু এখনও তার দাম মেলেনি বলে অভিযোগ করে শুক্রবার বিকেলে জেলা খাদ্য নিয়ামকের দফতরে গলসির প্রায় দশটি গ্রামের চাষিরা বিক্ষোভ দেখালেন। বিক্ষোভে সামিল হন সমবায় সমিতির সদস্যরাও।
বিক্ষোভকারীরা জানান, মাস চারেক আগে স্থানীয় একটি কৃষি সমবায়কে ধান বিক্রি করেছিলেন। কিন্তু এ যাবৎ তার দাম মেলেনি। দাম না পেয়ে চাষের জন্য কেনা সার, কীটনাশক প্রভৃতির দামও মেটাতে পারছেন না বলে দাবি করেন চাষিরা। গলসির চাকতেঁতুল, ভরতপুর, শালডাঙা, বনগ্রাম, গোপমলে, রণডিহা প্রভৃতি গ্রাম থেকে চাষিরা খাদ্য নিয়ামকের দফতরের সামনে জড়ো হন। ভরতপুর এলাকার চাষি অশোক গরাই বলেন, ‘‘ফেব্রুয়ারি মাসে একশো বস্তা ধান ১৪১০ টাকা দরে স্থানীয় সমবায়ের কাছে বিক্রি করেছি। কিন্তু দাম মেলেনি।’’ একই অভিযোগ চাকতেঁতুল এলাকার চাষি বিমল রুইদাসেরও। তাঁর দাবি, প্রায় ৮৪ হাজার টাকা এখনও হাতে আসেনি। এই পরিস্থিতিতে বাজারে চাষের জন্য কেনা বিভিন্ন কৃষি সামগ্রীর দাম মেটানো যাচ্ছে না। তেমনই দিন গুজরান করতে গিয়েও সমস্যায় পড়তে হচ্ছে বলে জানান চাষিরা।
চাষিদের টাকা না মেলার বিষয়টি স্বীকার করে নেওয়া হয়েছে চাকতেঁতুল সমবায় কৃষি উন্নয়ন সমিতির তরফেও। সমিতির সম্পাদক সত্যদুলাল হাজরা বলেন, ‘‘আমাদের বেশি টাকা নেই। খাদ্য দফতরের নিয়মে সরকারি টাকার ভরসায় ধান কিনেছি। চাষিরা প্রায় ২ কোটি ১৩ লাখ টাকা পাবেন আমাদের কাছ থেকে।’’ সমিতির সূত্রেই জানা গিয়েছে গলসির প্রায় ১০টি গ্রামের ৫২৩ জন চাষি ধান এই সমবায়ে ধান বিক্রি করেন। সত্যদুলালবাবুর অভিযোগ, ‘‘বারবার দরবার করেও টাকা মেটানোর ব্যবস্থা করেনি খাদ্য দফতর। তাই চাষিদের সঙ্গে আমরাও বিক্ষোভে যোগ দিয়েছি।’’ সমবায় সমিতির সূত্রে দাবি করা হয়েছে, গত বছর ডিসেম্বরের শেষে টাকা পাওয়ার কথা থাকলেও তা মেলেনি। ফের বলা হয়, চলতি বছরের মার্চ মাসের শেষে টাকা মিলবে। কিন্তু এ যাবৎ তাও মেলেনি। সমবায়ের ম্যানেজার শিশুচরণ মেটে বলেন, ‘‘চাষিদের তাগাদায় গ্রাম ছেড়ে পালিয়ে যাওয়ার মত অবস্থা।’’ বিক্ষোভের সময় দফতরে জেলা খাদ্য নিয়ামক অবশ্য দফতরে ছিলেন না। দায়িত্বপ্রাপ্ত এক আধিকারিক শেষমেশ চাষিদের জানান, আগামী ১৩ এপ্রিল ঊর্ধ্বতন আধিকারিকদের সঙ্গে কথা বলে বিষয়টি নিয়ে বৈঠকের ব্যবস্থা করা হবে। জেলা খাদ্য নিয়মক দেবমাল্য বসুর আশ্বাস, ‘‘ক্রমপর্যায়ে টাকা দেওয়া হচ্ছে। আশা করি মঙ্গল, বুধবারের মধ্যেই টাকা পেয়ে যাবেন চাষিরা।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy