শুরু হয়নি বোরো ধানের বীজতলা তৈরির কাজ। কাঁকসায়। নিজস্ব চিত্র
জেলায় এমনিতেই সেচ-ব্যবস্থা তেমন ভাবে গড়ে ওঠেনি। এই পরিস্থিতিতে প্রতি বছরের মতো এ বারেও কাঁকসা-সহ জেলার নানা প্রান্তের চাষিদের প্রশ্ন, বোরো ধান চাষের জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণে জল মিলবে তো। এখনও পর্যন্ত সেচখালে জল না মেলায়, চাষের কাজ শুরুই করা যায়নি বলে দাবি চাষিদের একটা বড় অংশের। যদিও সেচ দফতর জানিয়েছে, জল ছাড়ার বিষয়ে এ পর্যন্ত কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি।
পশ্চিম বর্ধমান জেলায় চাষযোগ্য জমির পরিমাণ প্রায় ৫০ হাজার হেক্টর। আমনের মরসুমে এ বছর চাষ হয়েছে প্রায় ৪৫ হাজার হেক্টর জমিতে। ইতিমধ্যেই বেশির ভাগ জমি থেকে ধান কাটা হয়ে গিয়েছে। চাষিদের একটা বড় অংশ জানান, সেচের জলের অভাবের কারণে রবি মরসুমে চাষের কাজ এখনও শুরুই করা যায়নি জেলায়। অথচ, গত মরসুমে সেচখালে জল মেলায় বোরো ধানের চাষ হয়েছিল প্রায় দু’হাজার হেক্টর জমিতে।
কৃষি দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, জেলায় সেচযোগ্য জমির পরিমাণ মাত্র ন’হাজার হেক্টর। সেচখালের পাশাপাশি, নদী সেচপ্রকল্প, পুকুর, কুয়ো-সহ নানা জায়গা থেকে জল সংগ্রহ করে রবি শস্যের চাষ করেন চাষিরা। তবে বোরো ধানের চাষে জল বেশি দরকার হওয়ায় চাষিরা তাকিয়ে থাকেন মূলত সেচখালের জলের দিকেই। কৃষি দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, বোরো ধানের চাষ সব থেকে বেশি হয় কাঁকসা ব্লকে। এই ব্লকের আমলাজোড়া, ত্রিলোকচন্দ্রপুর পঞ্চায়েত এলাকায় সেচ ব্যবস্থা সব থেকে ভাল। সেচখালের জল না মিললেও সাতশো-আটশো হেক্টর জমিতে নিজেরাই জলের ব্যবস্থা করে চাষ করেন কাঁকসার চাষিরা।
চাষিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গিয়েছে, এ বার আমন ধানের ফলন খুব ভাল হয়নি। তাই অনেকেই বোরো ধানের চাষের দিকে তাকিয়ে রয়েছেন। কিন্তু সেচখালে জল মিলবে কি না, সে বিষয়ে এখনও পর্যন্ত কোনও সিদ্ধান্ত না হওয়ায় এলাকার কোনও চাষিই বোরোর বীজতলা তৈরি করতে পারেননি বলে জানা গিয়েছে। এমনকি, বিক্ষিপ্ত ভাবে যে সর্ষে, তিল, গমের চাষ হয়, সে সবও শুরু করা যাচ্ছে না। কাঁকসার চাষি তাপস মাজি, দেবু ঘোষেরা বলেন, ‘‘সেচের জল না পর্যাপ্ত পরিমাণে না মেলে, এ বার আমাদের খুবই সমস্যা হবে। এখনও পর্যন্ত বোরো চাষের কাজ শুরু করতে পারিনি।’’
তবে সেচ দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, মাইথন ও পাঞ্চেত জলাধারে যথেষ্ট জল মজুত আছে। জল দিতে সমস্যা হওয়ার কথা নয়। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দফতরের এক আধিকারিক জানান, বোরো চাষ নিয়ে এখনও কোনও বৈঠক হয়নি। এ মাসেই বৈঠক হবে। পশ্চিম বর্ধমান জেলা পরিষদের সহ-সভাধিপতি সমীর বিশ্বাস বলেন, ‘‘জলাধার থেকে জল ছাড়া নিয়ে এখনও কোনও বৈঠক হয়নি। দ্রুত এ বিষয়ে যাতে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, সে জন্য সংশ্লিষ্ট জায়গায় তদ্বির করব।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy