Advertisement
E-Paper

আগুনে নষ্ট বহু মূল্যের কয়লা, অবৈধ খননকে দুষছে ইসিএল

বেআইনি ভাবে কয়লা কাটার ফলে বৈধ খনি বিপন্ন হয়ে পড়ায় বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল ভূগর্ভে খনন। চালু করা হয় খোলামুখ খনি। কিন্তু বেআইনি খনির সুড়ঙ্গ দিয়ে হাওয়া ঢোকার জেরে আগুন লেগে গিয়েছে ভূগর্ভের কয়লাস্তরে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৩ জানুয়ারি ২০১৭ ০০:১৯
খনির নানা জায়গায় মাটি ফুঁড়ে বেরোচ্ছে ধোঁয়া। নিজস্ব চিত্র।

খনির নানা জায়গায় মাটি ফুঁড়ে বেরোচ্ছে ধোঁয়া। নিজস্ব চিত্র।

বেআইনি ভাবে কয়লা কাটার ফলে বৈধ খনি বিপন্ন হয়ে পড়ায় বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল ভূগর্ভে খনন। চালু করা হয় খোলামুখ খনি। কিন্তু বেআইনি খনির সুড়ঙ্গ দিয়ে হাওয়া ঢোকার জেরে আগুন লেগে গিয়েছে ভূগর্ভের কয়লাস্তরে। তার ফলে নর্থ সিহারসোলে যেমন বহু মূল্যের কয়লা নষ্ট হচ্ছে, লাগোয়া খোলামুখ খনিতে কাজ চালানোও মুশকিল হচ্ছে বলে অভিযোগ ইসিএল কর্তৃপক্ষের।

কুনস্তরিয়া এরিয়ার নর্থ সিহারসোল খোলামুখ খনির তপসি সাইটে প্রায় দশ জায়গায় মাটি ফুঁড়ে ধোঁয়া বেরোচ্ছে বলে খনি কর্তৃপক্ষ জানান। শ্রমিক-কর্মীদের দাবি, কয়লা পোড়া ধোঁয়া বাতাসে মেশায় কাজ করার সময়ে শ্বাসকষ্ট-সহ নানা শারীরিক সমস্যা হচ্ছে। কাছেই কয়লাস্তর পুড়তে থাকায় তাঁদের কাজের জায়গাতেও আগুন ছড়িয়ে পড়তে পারে, এমন আশঙ্কায় ভুগছেন তাঁরা।

ইসিএল সূত্রে জানা গিয়েছে, নর্থ সিহারসোল কোলিয়ারিতে আগে ভূগর্ভস্থ খনি ছিল। তার চার পাশে অবৈধ কুয়ো খাদান চালাচ্ছিল দুষ্কৃতীরা। সেগুলিতে সুড়ঙ্গ করে কয়লা কাটতে কাটতে বৈধ খনির দিকে এগোচ্ছিল তারা। এ ভাবে বেশ কিছু সুড়ঙ্গ পৌঁছে গিয়ছিল একেবারে বৈধ খনির সীমানায়। বছর ছয়েক আগে ওই অবৈধ সুড়ঙ্গে জল ঢুকে যাওয়ায় সমস্যা তৈরি হয় বৈধ খনিতেও। ভূগর্ভস্থ খনি বন্ধ করে দেওয়া হয়। তার পরে ২০১২ সালে তার উপরে খোলামুখ খনি চালু করা হয়। বছর কয়েক আগে বেলবাঁধ প্যাচে আগুনের মধ্যে পড়ে মৃত নিরাপত্তারক্ষী সুভাষ গৌড়ের নামে এই খনির নাম রাখা হয়।

ইসিএলের সিএমডি-র কারিগরি সচিব নীলাদ্রি রায় বলেন, “অবৈধ খননে তৈরি সুড়ঙ্গপথে জমে থাকা কয়লা অক্সিজেনের সংস্পর্শে আসায় আগুন ধরে যাচ্ছে। তা মাটি ফুঁড়ে বেরোচ্ছে। তার সঙ্গে অবৈধ খনন পরিস্থিতি আরও খারাপ করছে।” ইসিএল কর্তৃপক্ষের অভিযোগ, বছর দুয়েক ওই খনিতে রাতে চোরেরা এক দিকের কয়লা কেটে নিচ্ছে। এক আধিকারিক দাবি করেন, “অবৈধ খনিতে আগুন ধরে যাওয়ায় প্রায় প্রায় ৫ কোটি টাকার কয়লা পুড়ে গিয়েছে। মোট কুড়ি কোটি টাকার কয়লা নষ্ট হবে বলে আমাদের আশঙ্কা। পুলিশ-প্রশাসনের সাহায্য ছাড়া চুরি বন্ধ করা প্রায় অসম্ভব।” এডিসিপি (সেন্ট্রাল) জে মার্সি অবশ্য বলেন, ‘‘পুলিশ অভিযোগ পেলেই ব্যবস্থা নেয়। অনেককে গ্রেফতার, কয়লা আটক করা হয়েছে।’’ ওই এলাকায় রাতে আলো-সহ নানা পরিকাঠামো ইসিএলের উন্নত করা উচিত বলে তাঁর মত।

সিটু নেতা মনোজ দত্ত অবশ্য এই পরিস্থিতির জন্য খনি কর্তৃপক্ষকেই দায়ী করেন। তাঁর দাবি, কয়লা খননের আগে কর্তৃপক্ষ ভৌগলিক পরিস্থিতি বিচার না করে মাটি কাটছে। মাটির নীচে জমে থাকা আগুন বেরিয়ে আসছে। তার পরেও আগুন নেভানোর ব্যবস্থা না করে অদূরেই খননকাজ চালানো হচ্ছে। তাঁর আশঙ্কা, ‘‘আর একটা রাজমহলের মতো ঘটনা ঘটলে অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না।’’ আইএনটিইউসি নেতা গৌতম মুখোপাধ্যায়েরও অভিযোগ, “জোর করে খনিটি বিপজ্জনক ঘোষণা করে বেসরকারি হাতে তুলে দেওয়ার চেষ্টা করছেন কর্তৃপক্ষ।”

ECL Mine Coal
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy