Advertisement
০২ মে ২০২৪
Date Palm Jaggery

খেজুর গুড়ে সেই স্বাদ কই

আউশগ্রামের শিউলি (যাঁরা খেজুর গাছ থেকে রস নামান) সুলতান কারিগর জানান, এ বারের রসে তেমন জুত নেই। গাছের প্রথম কাট থেকে কোনও রকম হলেও দ্বিতীয় কাটের তেমন স্বাদ নেই।

পরখ করে গুড় কেনা। বর্ধমান শহরে।

পরখ করে গুড় কেনা। বর্ধমান শহরে। —নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
বর্ধমান শেষ আপডেট: ১৩ ডিসেম্বর ২০২৩ ০৭:২০
Share: Save:

স্বাদ মিলছে না খেজুর গুড়ের। বাজারও মন্দা, উৎপাদনও কম, দাবি বিক্রেতাদের। এমনকি, বাজারে যে গুড়ের রসগোল্লা বা মিষ্টি এসেছে তার বেশির ভাগেও কৃত্রিম স্বাদ আর গন্ধ। গুড় প্রস্তুতকারকদের অবশ্য দাবি, এই পরিস্থিতির জন্য দায়ী আবহাওয়া। কনকনে ঠান্ডা না পেলে রসের মান ভাল হয় না। গুড়েও আসা না স্বাদ, গন্ধ।

আউশগ্রামের শিউলি (যাঁরা খেজুর গাছ থেকে রস নামান) সুলতান কারিগর জানান, এ বারের রসে তেমন জুত নেই। গাছের প্রথম কাট থেকে কোনও রকম হলেও দ্বিতীয় কাটের তেমন স্বাদ নেই। গন্ধও নেই আগের মতো। তাঁদের দাবি, ডিসেম্বর পড়ে গেলেও এ বারে শীত তেমন নেই। তাই সাদা হয়ে যাচ্ছে রস। তাঁদের দাবি, নদিয়া থেকে এসে এক লক্ষ টাকা দিয়ে এলাকার বারশো গাছ চুক্তিতে নিয়েছেন তিনি। এখন টাকা তুলবেন কী ভাবে, লাভই বা কী হবে সেটাই চিন্তা। নদিয়ার নাকাশিপাড়ার শেখ আসতাবও হাজির হয়েছেন বর্ধমান ২ ব্লকের গোবিন্দপুর দীঘিরপাড়ে। খেজুর গাছ থেকে রস সংগ্রহ ও তাঁর থেকেই গুড় তৈরি করেন তিনি। পাটালি বা ঝোলা গুড় দুই-ই মেলে তাঁর কাছে। আসতাব জানান, এ বার ২৩০টি গাছ নিয়েছেন তিনি। দুপুর থেকে শুরু হয় গাছে কলসী বাঁধা পরের দিন ভোরে তা সংগ্রহ করে তৈরি করা হয় গুড়। গুড় তৈরিতে সময় লাগে দেড় থেকে দু’ঘণ্টা। ঝোলা গুড় ১০০ টাকা ও পাটালি ১৫০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। যদিও শীত তেমন না পড়ায় রসের পরিমান কম হচ্ছে, দাবি তাঁর।

এলাকার বাসিন্দা রবীন্দ্রনাথ সাঁই বলেন, ‘‘চোখের সামনে গুড় তৈরি দেখে কিনতে ইচ্ছা হচ্ছে। তবে শীতটা জাঁকিয়ে না আসায় গুড়ের স্বাদ, গন্ধ অনেকটাই কম।’’ দেবকুমার বন্দ্যোপাধ্যায় হুগলির ডানকুনি থেকে গুড় কিনতে এসেছেন বর্ধমানে। তিনিও বলেন, ‘‘শুধুমাত্র ভাল মানের আর স্বাদের গুড়ের জন্যই এত দূর ছুটে আসা। তবে এ বারের স্বাদে কিছুটা ফারাক আছে। অন্য বারের তুলনায় মান কিছুটা খারাপ।’’

প্রতি বছরের মতো বর্ধমান শহরের প্রাণকেন্দ্র কার্জন গেটের কাছে গুড় বিক্রি করতে এসেছেন বঙ্কিম হাজরা, মধু হাজরারা। তাঁরা বলেন, ‘‘১২০ টাকা থেকে ২৫০ টাকা কেজি পর্যন্ত খেজুর গুড় রয়েছে। ২৫০ টাকার গুড়ের স্বাদ অনেকটা ভাল। বাকিগুলো নিয়ে ক্রেতাদের মুখে হাসি ফুটছে না।’’ তাঁদের দাবি, শীতের আগে পশ্চিমী ঝঞ্ঝা, নিম্নচাপের কারণ রসের গুণগত মান কমাতেই গুড়েরও মান কমেছে। তবে নতুন যে গুড় বাজারে আসছে, একটু দাম দিয়ে তা কিনলে স্বাদ মিলবে মনের মতো, দাবি তাঁদের।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

jaggery Winter
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE