Advertisement
০৩ মে ২০২৪

কারখানার গ্যাসে শ্বাসকষ্টের নালিশ, বিক্ষোভ পানাগড়ে

গ্রামবাসীদের একাংশ জানান, শুক্রবার কারখানা থেকে গ্যাস বের হয়। এর জেরে এলাকায় কটু গন্ধ ছড়িয়ে পড়ে বলে তাঁদের দাবি। রবিবার দুপুরে ফের বিপত্তি শুরু হয়। গ্রামবাসীদের একাংশের অভিযোগ, এ দিন শ্বাস নিতে সমস্যা হচ্ছিল। কয়েক জন শিশু বমিও করে। জ্যোৎস্না ঠাকুরা নামে এলাকার এক মহিলা বলেন, ‘‘বাড়ি-ঘর ছেড়ে চলে এসেছি।

পণ্ডালি গ্রামে। — নিজস্ব চিত্র।

পণ্ডালি গ্রামে। — নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
দুর্গাপুর শেষ আপডেট: ০২ অক্টোবর ২০১৭ ০১:০২
Share: Save:

কারখানা থেকে গ্যাস বের হওয়ায় শ্বাসকষ্ট হয়েছে। রবিবার এমনই অভিযোগে বেসরকারি ওই কারখানার গেটে বিক্ষোভ দেখালেন পানাগড়ের পণ্ডালি গ্রামের বাসিন্দাদের একাংশ। তাঁদের দাবি, ঘটনায় আতঙ্কিত হয়ে গ্রাম ছেড়ে আত্মীয়দের বাড়ি চলে গিয়েছেন কয়েক জন বাসিন্দা।

গ্রামবাসীদের একাংশ জানান, শুক্রবার কারখানা থেকে গ্যাস বের হয়। এর জেরে এলাকায় কটু গন্ধ ছড়িয়ে পড়ে বলে তাঁদের দাবি। রবিবার দুপুরে ফের বিপত্তি শুরু হয়। গ্রামবাসীদের একাংশের অভিযোগ, এ দিন শ্বাস নিতে সমস্যা হচ্ছিল। কয়েক জন শিশু বমিও করে। জ্যোৎস্না ঠাকুরা নামে এলাকার এক মহিলা বলেন, ‘‘বাড়ি-ঘর ছেড়ে চলে এসেছি। আমাদের দেওয়া জমিতে কারখানা তৈরি হয়েছে। ছেলে-মেয়েরা চাকরি পায়নি। এখন গ্যাসের গন্ধে এলাকা ছাড়তে হবে।’’ তনুশ্রী ঠাকুরা নামে অন্য এক জন বলেন, ‘‘গ্যাসের গন্ধে নাক জ্বালা করছিল। মাথা ঘুরছিল।’’ দুপুরে গ্রামবাসীদের একাংশ কারখানার গেটে বিক্ষোভ দেখান। পরিস্থিতির সামাল দিতে ঘটনাস্থলে আসে পুলিশ। কারখানা কর্তৃপক্ষ দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন।

প্রশাসনের সূত্রে জানা গিয়েছে, পানাগড় শিল্পতালুকে ২০০৮ সালে জমি অধিগ্রহণ শুরু করে রাজ্য সরকার। ২০১০ সালে প্রায় পাঁচশো একর জমিতে বেসরকারি সার কারখানাটির নির্মাণকাজ শুরু হয়। কারখানা কর্তৃপক্ষ জানান, এখানে কোল বেড মিথেন ব্যবহার করে সার উৎপাদন হবে। এ পর্যন্ত বাণিজ্যিক উৎপাদন শুরু না হলেও মাসখানেক ধরে মাঝেসাঝে পরীক্ষামূলক ভাবে উৎপাদন করা হচ্ছে বলে কারখানা কর্তৃপক্ষের দাবি।

কারখানা সূত্রে খবর, তেমনই পরীক্ষামূলক উৎপাদন হচ্ছিল এ দিনও। এক আধিকারিক জানান, মূলত অ্যামোনিয়া গ্যাস নির্গত হওয়াতেই বিপত্তি ঘটে। তবে কারখানার দায়িত্বপ্রাপ্ত আধিকারিক সুবালক সরকার জানান, পরীক্ষামূলক উৎপাদনের জন্য পাইপের মাধ্যমে নানা ধরনের গ্যাস ও বাষ্প এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় বয়ে যায়। সেই সময়ে সামান্য গন্ধ বের হয়। তবে এই পরিস্থিতি আর ক’দিন পরে থাকবে না বলে তাঁর দাবি। এ দিন গ্রামবাসীদের অভিযোগ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘‘সমস্ত আধিকারিক ও কর্মীরা কারখানার ভিতরেই রয়েছেন। কোনও বিপত্তি ঘটলে সবথেকে বেশি বিপাকে পড়বেন তাঁরাই। অথচ তা হয়নি। মাঝেসাঝে হয়তো সামান্য গন্ধ বের হতে পারে। তাতে কারও ক্ষতি হবে না।’’

রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের দুর্গাপুর শাখার এক কর্তাও অবশ্য জানান, কারখানাটি পর্ষদের ‘অনলাইন মনিটরিং সিস্টেমে’র মধ্যে রয়েছে। এ পর্যন্ত উদ্বেগজনক কিছু ধরা পড়েনি। তবে আলাদা ভাবে বিষয়টিতে নজর রাখা হচ্ছে বলে ওই কর্তা জানান। বাসিন্দারা আরও অভিযোগ করেন, এর আগে কারখানায় নির্মাণ সামগ্রী সরবরাহ করেন তাঁরা। কিন্তু তার বকেয়া টাকা মেলেনি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE