—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
পাঁচ বেকার তরুণ-তরুণী ও স্থানীয় এক অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক দিনের পর দিন বিনা বেতনে পূর্ব বর্ধমানের জামালপুরে সরকার অনুমোদিত একটি জুনিয়র হাইস্কুল চালাচ্ছেন। সম্প্রতি সেই স্কুল সম্পর্কে খোঁজ নিয়েছেন রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোস। ওই শিক্ষকদের দাবি, স্থানীয় ছেলেমেয়েদের শিক্ষিত করার তাগিদে বিনা পারিশ্রমিকে তাঁদের লড়াইয়ের কথা শুনে রাজ্যপাল মুগ্ধ হয়েছেন। এ বার স্কুলের হাল ফিরবে বলে আশা করছেন তাঁরা।
জামালপুর পাড়াতল ১ পঞ্চায়েতের প্রান্তিক গ্রাম বসন্তপুর। কয়েক বছর আগেও গ্রামে শুধু একটি প্রাথমিক স্কুল ছিল। তারপরে পড়তে হলে যেতে হত ছ’কিলোমিটার দূরে জামালপুর বা সেলিমাবাদ হাইস্কুলে। স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, স্রেফ যাতায়াতের জন্য অনেকেই পড়া ছেড়ে দিত। সেই সময়ে গ্রামে স্কুল গড়ার ব্যাপারে এগিয়ে আসেন অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক দ্বিজেন্দ্রনাথ ঘোষ। টানা লড়াইয়ের পরে ২০১০ সালের জুন মাসে জুনিয়র হাইস্কুল তৈরির অনুমোদন দেয় শিক্ষা দফতর। ঘর তৈরির জন্য সাড়ে চার লক্ষ টাকা বরাদ্দ হয়। কিন্তু বরাদ্দের চিঠিতে ‘প্রস্তাবিত’ লেখা থাকায় টাকা আটকে যায়। সেই জটিলতা কাটিয়ে ২০১৪ সালে ঘর তৈরি হয়। ছাত্রছাত্রীদের পড়ানোর জন্য অতিথি শিক্ষকের অনুমোদন মেলে। বর্তমানে ১৩৯ জন পড়ুয়া রয়েছে ওই স্কুলে। দ্বিজেন বলেন, “২০১৮ সালে তিন জন স্থায়ী শিক্ষকের অনুমোদন মিলেছে। কিন্তু নিয়োগ হয়নি। এর মধ্যে অতিথি শিক্ষকরা অবসর নেওয়ায় স্কুল বন্ধ হয়ে যাওয়ার উপক্রম হয়েছিল। এই অবস্থায় এগিয়ে আসেন স্থানীয় পাঁচ তরুণ-তরুণী।’’ বিনা বেতনে তাঁরা বেশ কয়েক বছর ধরে নিয়ম করে স্কুলে পড়াচ্ছেন। ওই শিক্ষক-শিক্ষিকাদের দাবি, “আমরা এগিয়ে না এলে স্কুলে তালা পড়ে যেত। দ্বিজেনবাবুর অনুরোধ ফেলতে না পেরে এগিয়ে এসেছিলাম। এখন পড়ুয়াদের টানে স্কুলে আসি।’’
লক্ষ্মীপুজোর পরে ওই স্কুল সম্পর্কে রাজ্যপালের দফতর থেকে খোঁজ নেওয়া হয়েছে বলে অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক দাবি করেছেন। তাঁর কথায়, “রাজ্যপালের নজরে এসেছে আমাদের স্কুলের দুরাবস্থা। ওই দফতরের এক আধিকারিক ফোন করে স্কুল সম্পর্কে যাবতীয় খুঁটিনাটি জেনেছেন। এমনকি, রাজ্যপাল আমাদের স্কুল পরিদর্শনে আসতে পারেন বলেও ইঙ্গিত দিয়েছেন।’’ তবে স্থায়ী শিক্ষক ছাড়া কত দিন একটা স্কুলকে টিকিয়ে রাখা সম্ভব, তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েই যাচ্ছে।
জেলা শিক্ষা দফতরের সহ-পরিদর্শক (জামালপুর) অনিন্দিতা সাহা বলেন, ‘‘রাজ্যপাল দফতর থেকে ফোন করেছিল বলে শুনেছি। ওই স্কুলের সমস্যা মেটাতে আমরাও সচেষ্ট। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকেজানানো রয়েছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy