Advertisement
E-Paper

সর্ষে-মুসুরি ফলিয়ে কৃষকরত্ন

আঠেরো বিঘা জমি। তার কোথাও গ্রিন হাউসে ফুলকপি, বাঁধাকপি ফলছে বছরভর। কোথাও ঘুরিয়ে ফিরিয়ে সর্ষে, মুসুরি, পালং শাকের চাষ হচ্ছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৯ জানুয়ারি ২০১৬ ০১:৩৫
কৃষিমেলা। —নিজস্ব চিত্র।

কৃষিমেলা। —নিজস্ব চিত্র।

আঠেরো বিঘা জমি। তার কোথাও গ্রিন হাউসে ফুলকপি, বাঁধাকপি ফলছে বছরভর। কোথাও ঘুরিয়ে ফিরিয়ে সর্ষে, মুসুরি, পালং শাকের চাষ হচ্ছে। শুধু বেগুন চাষ থেকেই নাকি লাভ মিলেছে ৫০ হাজার টাকা। গতানুগতিক চাষের বাইরে বেরিয়ে এভাবেই জমিতে সোনা ফলিয়েছেন পূর্বস্থলীর কুড়িচা গ্রামের নিমাই পাল। আজ, মঙ্গলবার মাটি উৎসবের মঞ্চে মুখ্যমন্ত্রীর কাছ থেকে জেলার সেরা চাষির সম্মানও পাবেন তিনি।

কুরিচার বাসিন্দারা জানান, প্রায় ১৮ বিঘা জমিতে চাষাবাদ করেন নিমাইবাবু। তার মধ্যে বিঘে চারেক অন্য চাষিদের কাছে চুক্তিতে নেওয়া। বছর চারেক আগে থেকেই ধান, পাটের উপর নির্ভরতা কমিয়ে ১৪ শতক জমির উপর গ্রিন হাউস তৈরি করেন তিনি। সেখানে সারা বছরই ফুলকপি, ধনেপাতা, বাঁধাকপির মতো সব্জি ফলাতে শুরু করেন তিনি। আরও কিছু জমিতে বেগুন, পালংশাক, মুসুরি, সর্ষের মতো ফসল ফলাতে থাকেন। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, জৈব সার দিয়েই জমি চাষ করেন বগপুর পঞ্চায়েতের এই চাষি। এর সঙ্গে জমি লাগোয়া পুকুরে মাছ চাষ ও বাড়িতে প্রাণী পালনও করেন তিনি। সোমবার পূর্বস্থলী ১ ব্লকের লোকসংস্কৃতি মেলায় কৃষক দিবসেও নিমাইবাবুকে সংবর্ধনা দেওয়া হয়। সেখানে তিনি বলেন, ‘‘প্রতিবার পালা করে বিভিন্ন ফসলে লাভ করছি। সব থেকে বেশি লাভ হয়েছে বেগুন চাষে।’’ তাঁর দাবি, ‘‘ঠিকঠাক চাষ করলে এক বিঘে জমি থেকে ৮০ কুইন্ট্যাল বেগুন মেলে। যা থেকে অন্তত ৫০ হাজার টাকা লাভ হয়।’’ নিমাইবাবু আরও জানান, এ বার গ্রিন হাউসে জারবেরা ফুলের চাষ শুরু করেছেন তিনি।

পূর্বস্থলী ১ কৃষি দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, এ বার নিমাই পাল এবং বৈদ্যনাথ বাগ নামে দু’জন চাষির কথা জানানো হয় জেলায়। তার মধ্যে নিমাইবাবুকে জেলার সেরা কৃষক হিসাবে বেছে নেওয়া হয়েছে। শনিবারই জেলা কৃষি দফতর জানিয়ে দিয়েছে সে কথা। কৃষি আধিকারিকদের দাবি, বিকল্প চাষে জোর দিয়ে দৃষ্টান্ত তৈরি করেছেন নিমাইবাবু। নিমাইবাবুর প্রশংসা করেছেন রাজ্যের ক্ষুদ্র, কুটির এবং প্রাণিসম্পদ দফতরের মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ। তিনি জানান, গত তিন বছরের মধ্যে জেলার সেরা কৃষকের শিরোপা পেয়েছেন পূর্বস্থলীর দুই চাষি। বোঝা যাচ্ছে কতটা এগিয়েছে চাষাবাদ। পূর্বস্থলী ১ ব্লকের কৃষি আধিকারিক পরিতোষ হালদারও বলেন, ‘‘প্রত্যেক চাষিরই শস্যে বৈচিত্র্য আনা দরকার। এতে জমির উর্বরতা বৃদ্ধি পায়। নিমাইবাবুর কথা অন্যদের কাছেও তুলে ধরা হবে।’’

জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, মাটি উৎসবের মঞ্চে এ বার রাজ্যের ৬১ জন কৃষক রত্ন পুরস্কার পাবেন। যার মধ্যে উদ্যানপালন বিভাগের ২০ জন চাষি রয়েছেন। তাঁদের সকলকে ধুতি পাঞ্জাবি পরে মঙ্গলবার মাটি উৎসবের মঞ্চে হাজির হতে বলা হয়েছে। জানা গিয়েছে, প্রাণী পালনে এ বার জেলার সেরা হয়েছেন কালনা ২ ব্লকের কল্যাণপুর গ্রামের যুবক কাজল পণ্ডিত। আজ পুরস্কার পাবেন তিনিও। ২০০৬ সালে নিজের এলাকায় শুয়োর পালনের জন্য ফার্ম গড়েন তিনি। পরে তাঁর হাত ধরে আরও কিছু যুবকও ফার্ম খুলে ভাল আয় করেন। কাজলবাবু বলেন, ‘‘দীর্ঘদিন ধরে শুয়োর পালন করছি। ভাল লাভও হয়।’’

krishakratna harvest matiutsav
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy