Advertisement
২১ মে ২০২৪

স্কুলে ‘আইডিয়া বক্স’ বসিয়ে পড়ুয়া বাড়াচ্ছেন সুভাষবাবু

স্কুলের যে কোনও বিষয়ে যাতে ছাত্রছাত্রীরা মতামত দিতে পারে, সে জন্য ‘আইডিয়া বক্স’ বসিয়েছেন তিনি। তাঁর দেখভালেই শিশুমিত্র, নির্মল বিদ্যালয় পুরস্কার পেয়েছে স্কুল, পড়ুয়াও বেড়েছে প্রতিবছর। এমনকি, ক্যানসার আক্রান্ত হওয়ার পরেও স্কুলের খুঁটিনাটিতে তাঁর নজর কমেনি এতটুকুও।

স্কুলের বাগানে প্রধান শিক্ষক সুভাষবাবু। নিজস্ব চিত্র

স্কুলের বাগানে প্রধান শিক্ষক সুভাষবাবু। নিজস্ব চিত্র

সুপ্রকাশ চৌধুরী
বর্ধমান শেষ আপডেট: ০৪ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০৩:১৯
Share: Save:

স্কুলের যে কোনও বিষয়ে যাতে ছাত্রছাত্রীরা মতামত দিতে পারে, সে জন্য ‘আইডিয়া বক্স’ বসিয়েছেন তিনি। তাঁর দেখভালেই শিশুমিত্র, নির্মল বিদ্যালয় পুরস্কার পেয়েছে স্কুল, পড়ুয়াও বেড়েছে প্রতিবছর। এমনকি, ক্যানসার আক্রান্ত হওয়ার পরেও স্কুলের খুঁটিনাটিতে তাঁর নজর কমেনি এতটুকুও। এ বার বর্ধমান থেকে শিক্ষারত্ন পাচ্ছেন কাঞ্চনগর দীননাথ দাস হাই স্কুলের এই প্রধান শিক্ষক সুভাষচন্দ্র দত্ত। ৩১ অগস্ট স্কুল শিক্ষা দফতরের তরফে তাঁকে চিঠি দিয়ে জানানো হয়েছে এ কথা। ৫ সেপ্টেম্বর কলকাতার নজরুল ওই পুরস্কার পাবেন তিনি।

১৯৯৬ সালে কাঁকসার অযোধ্যা হাইস্কুল দিয়ে যাত্রা শুরু সুভাষবাবুর। ২০০৭ সালে দীননাথ দাস হাইস্কুলে প্রধান শিক্ষক হিসাবে যোগ দেন। শিক্ষকতার পাশাপাশি গবেষণাও করেছেন দীর্ঘদিন। জানা যায়, তিনি যখন দীননাথ দাস হাইস্কুলে যোগ দেন তখন পড়ুয়া ছিল ৪৭৬। ২০১৬ সালে তা দাঁড়ায় ৯৩৮ জনে। তাঁর তত্ত্বাবধানে বাল্যবিবাহ রোধ, তামাক বর্জন, সচেতনতা প্রচারের বিভিন্ন কর্মসূচিতেও এই স্কুল ছাপিয়ে গিয়েছে অন্যদের। স্কুল সূত্রে জানা যায়, বছর ছয়েক আগে একটি কোকিলকে আহত হয়ে স্কুলে পড়ে থাকতে দেখা যায়। সেটিকে সুস্থ করার পরে সুভাষবাবু ঠিক করেন, স্কুলে পাখিদের থাকার ব্যবস্থা করা হবে। এখন স্কুলের বটগাছে মাটির হাঁড়ি ঝোলানে পাখিরালয়ে থাকে দোয়েল, কোকিল, টুনটুনির মতো পাখি। তাঁর উদ্যোগে স্কুলে হয়েছে পুষ্টি বাগান। সেখানে প্রায় ২০ রকমের গাছ রয়েছে। স্কুলের একাদশ শ্রেণির ছাত্রী স্বর্ণা হালদার, দ্বাদশ শ্রেণির পতিতপাবন দত্তরা বলে, ‘‘স্যার পড়াশুনা থেকে শুরু করে প্রতিটি সমস্যায় আমাদের পাশে থাকেন। স্কুল না এলে খোঁজ খবর নেন। অনেক সময় বাড়িও খোঁজ করে চলে যান।’’ স্কুল পরিচালন সমিতির সভাপতি মানিক দাস জানান, সুভাষবাবু সবসময় নতুন নতুন চিন্তা ভাবনা দিয়ে স্কুলকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছেন। এই সাফল্য তাঁর প্রাপ্য ছিল।

২০১৬ সালে সুভাষবাবুর ক্যানসার ধরা পরে। নিয়মিত চিকিৎসা চলছে। তবু স্কুলে না এসে পারেন না তিনি। বাজেপ্রতাপপুরের এই বাসিন্দা বলেন, ‘‘পিছিয়ে পড়া এলাকা থেকে এখানে ছেলেমেয়েরা পড়তে আসে। তাদের কথা চিন্তা করে পড়াশোনাকে আকর্ষণীয় করার দিকে মন দিয়েছিলাম। শিক্ষক, অশিক্ষক কর্মী, পরিচালন সমিতি সবাই সাহায্য করেছেন। এই পুরস্কার আমার নয়, স্কুলের সকলের।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE