Advertisement
০৬ মে ২০২৪

বৃষ্টি, জল ছাড়ায় চাষে ক্ষতির আশঙ্কা

এক দিকে নিম্নচাপের জেরে টানা বৃষ্টি, অন্য দিকে ব্যারাজ থেকে জল ছাড়া হচ্ছে। আর এই দুইয়ের ফেরে চিন্তার ভাঁজ বর্ধমানের চাষি ও প্রশাসনের কর্তাদের কপালে। শঙ্কা, বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হলে ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়তে হতে পারে।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কালনা শেষ আপডেট: ২২ অগস্ট ২০১৬ ০০:০০
Share: Save:

এক দিকে নিম্নচাপের জেরে টানা বৃষ্টি, অন্য দিকে ব্যারাজ থেকে জল ছাড়া হচ্ছে। আর এই দুইয়ের ফেরে চিন্তার ভাঁজ বর্ধমানের চাষি ও প্রশাসনের কর্তাদের কপালে। শঙ্কা, বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হলে ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়তে হতে পারে।

শনিবার রাত থেকে টানা বৃষ্টির ফলে এমনিতেই খেতে জল জমতে শুরু করেছে বলে জানান চাষিরা। আবার ব্যারাজ থেকে জল ছাড়ার কারণে ফুলে ফেঁপে উঠছে দামোদর, ভাগিরথী, অজয়, বেহুলা, খড়ি-সহ জেলার নদীগুলি। জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, গত ১১ অগস্ট থেকে জলাধারগুলি থেকে জলছাড়া শুরু হয়েছে। প্রশাসনের দাবি, রবিবার বিকেল ৫টা ফর্যন্ত শুধুমাত্র ডিভিসির দুর্গাপুর ব্যারাজ থেকেই চার দফায় দু’লক্ষ কিউসেকেরও বেশি জল ছাড়া হয়েছে। সকাল ছ’টায় ৫৭৭৯০ কিউসেক এবং আটটা, ন’টা ও বেলা ১২টায় প্রতি দফায় ৬৩ হাজার ২৬ কিউসেক জল ছাড়া হয়েছে। বিকেল ৫টায় জল ছাড়া হয়েছে ৬৭ হাজার ৩৬ কিউসেক জল। মাইথন ও পাঞ্চেত থেকে ৫৪ হাজার কিউসেক এবং অমূল্যঘাট থেকে সাড়ে চার হাজার কিউসেক জল ছাড়া হয়েছে।

জেলার কৃষি দফতেরর শঙ্কা, টানা বৃষ্টিতে সব থেকে বেশি ক্ষতির মুখে পড়তে পারে শীতকালীন জলদি সব্জির চাষ। সেপ্টম্বর মাস নাগাদ যে সব সব্জির বাজারে আসার কথা, সেগুলির চাষের প্রস্তুতি ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে। নীচু এলাকার খেতে জল জমে সব্জি গাছের গোড়ায় পচা রোগের সংক্রমণ দেখা যেতে পারে বলেও শঙ্কা করা হচ্ছে। পূর্বস্থলীর সব্জি চাষি রসিদ শেখ বলেন, ‘‘ফুলকপি,বাঁধাকপি, ঝিঙের মতো সব্জির গাছ জমিতেই পচে নষ্ট যাবে।’’ দ্রুত বৃষ্টি বন্ধ না হলে ক্ষতির শঙ্কা রয়েছে উঁচু এলাকাতেও। জেলার এক সহ কৃষি আধিকারিক পার্থ ঘোষ বলেন, ‘‘এই পরিস্থিতিতে চাষিদের সতর্ক থাকতে হবে। জমি থেকে যতটা সম্ভব জমা জল বাইরে বের করে দিতে হবে।’’ পার্থবাবুর দাবি, এই পরিস্থিতিতে জলাধারগুলি জল ছাড়ায় নদীর জলস্তরও বেড়েছে। বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হলে জেলার ধান চাষেও প্রভাব পড়বে বলে শঙ্কা।

গত বছর অগস্ট মাসে ব্যাপক বৃষ্টিতে জেলায় বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়। সব্জির পাশাপাশি আমন ধানের চাষেও ব্যাপক ক্ষতি হয়। ধান চাষি খোকন মণ্ডল বলেন, ‘‘গত বার খেত নষ্ট হওয়ার পরে ফের জমি তৈরির সময় পেয়েছিলাম। এ বার আমন ধানের চাষ মাস খানেকেরও বেশি অতিক্রান্ত। আর নতুন করে জমি তৈরি করা সম্ভব নয়।’’

এই পরিস্থিতিতে শঙ্কায় রয়েছেন প্রশাসনের কর্তারাও। জেলা সভাধিপতি দেবু টুডু বলেন, ‘‘যে ভাবে ডিভিসি কর্তৃপক্ষ ধারাবাহিক ভাবে জল ছাড়ছেন তাতে বিপদের শঙ্কা রয়েছে। তবে যে কোনও পরিস্থিতির সামাল দিতে প্রশাসন তৈরি।’’ দেবুবাবুর দাবি, জল ছাড়ার কারণ হিসেবে ডিভিসি কর্তৃপক্ষ আপার ক্যাচমেন্টে অধিক বৃষ্টিকেই দায়ী করেছেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Heavy Rain Flood Situation
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE