Advertisement
০৩ মে ২০২৪

জায়গা নির্দিষ্ট, এ বার হেলিপ্যাড নয় মঞ্চ ঘেঁষে

হেলিকপ্টার থেকে নেমে দু’পা হেঁটে গিয়ে মঞ্চে উঠে ভাষণ দেওয়া এ বার আর হবে না নেতানেত্রীদের। কারণ, হেলিপ্যাড কোথায় হবে, তা নির্দিষ্ট করে দেবে নির্বাচন কমিশন। ভোটের প্রচারে নেতানেত্রীদের আসা-যাওয়ার জন্য আগে থেকে ওই হেলিপ্যাড ব্যবহারের অনুমতি নিয়ে রাখতে হবে রাজনৈতিক দলগুলিকে। তবেই হেলিকপ্টার ব্যবহারের অনুমতি মিলবে বলে জানিয়েছে কমিশন।

এমন দৃশ্য দেখা যাবে না এ বারের প্রচারে। ফাইল চিত্র।

এমন দৃশ্য দেখা যাবে না এ বারের প্রচারে। ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
দুর্গাপুর শেষ আপডেট: ১৭ মার্চ ২০১৬ ০২:০১
Share: Save:

হেলিকপ্টার থেকে নেমে দু’পা হেঁটে গিয়ে মঞ্চে উঠে ভাষণ দেওয়া এ বার আর হবে না নেতানেত্রীদের। কারণ, হেলিপ্যাড কোথায় হবে, তা নির্দিষ্ট করে দেবে নির্বাচন কমিশন। ভোটের প্রচারে নেতানেত্রীদের আসা-যাওয়ার জন্য আগে থেকে ওই হেলিপ্যাড ব্যবহারের অনুমতি নিয়ে রাখতে হবে রাজনৈতিক দলগুলিকে। তবেই হেলিকপ্টার ব্যবহারের অনুমতি মিলবে বলে জানিয়েছে কমিশন।

নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা গিয়েছে, এত দিন পর্যন্ত রাজনৈতিক সভায় সাধারণত সভাস্থলের কাছেই হেলিকপ্টার নামার ব্যবস্থা করত দলগুলি। ফলে, মঞ্চের আশপাশে অস্থায়ী হেলিপ্যাড তৈরি করে দিতে হত প্রশাসনকে। প্রশাসনের কর্তারা জানান, এ ভাবে মঞ্চের আশপাশে তড়িঘড়ি হেলিপ্যাড তৈরির বেশ কিছু সমস্যা থাকে। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, সেই জায়গায় হেলিপ্যাড বানানো যাবে কি না তা পরীক্ষা করা, আশপাশে গাছ থাকলে তার ডালপালা কাটার জন্য বন দফতরের অনুমতি জোগাড়, হেলিপ্যাডের কাছাকাছি উঁচু বাড়ি থাকলে নিরাপত্তার বিশেষ ব্যবস্থা-সহ বেশ কিছু কাজ থাকে। কোনও কারণে মঞ্চের পাশে হেলিপ্যাড তৈরি করা না গেলে সংশ্লিষ্ট রাজনৈতিক দল অসন্তোষ জানায়। আবার সভার ভিড়ে হেলিকপ্টারের সফল অবতরণের জন্যও বিশেষ ব্যবস্থা নিতে হয়। কোনও ভাবে কেউ যাতে হেলিপ্যাডের সীমানার মধ্যে ঢুকে না পড়ে তা দেখতে হয়। হেলিকপ্টার নামার সময়ে পাখার বাতাসে যে ধুলো ঝড় ওঠে তা দর্শকদের সহ্য করতে হয়।

নির্বাচন কমিশনের মতে, ভোট ঘিরে স্থানীয় প্রশাসনের ব্যস্ততা থাকে তুঙ্গে। ফলে, রাজনৈতিক দলের আর্জি মেনে হেলিপ্যাড তৈরি করে দেওয়ার ঝক্কি নিতে সমস্যায় পড়েন প্রশাসনের স্থানীয় আধিকারিকেরাও। সেই সমস্যা মেটাতে এ বার আগে থেকে হেলিপ্যাডের জন্য কয়েকটি জায়গা নির্দিষ্ট করে দেওয়া হয়েছে। তার বাইরে আর কোথাও হেলিকপ্টার নামার অনুমতি দেওয়া হবে না।

বর্ধমান জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, জেলায় মোট বিধানসভা কেন্দ্রের সংখ্যা ২৫টি। প্রতিটি কেন্দ্রের জন্য এক বা একাধিক হেলিপ্যাডের জায়গা নির্দিষ্ট করা হয়েছে। জেলার গ্রামীণ ও শিল্পাঞ্চল মিলিয়ে মোট ৪০টি হেলিপ্যাডের তালিকা তুলে দেওয়া হয়েছে রাজনৈতিক দলগুলির হাতে। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, মেমারি বিধানসভার জন্য চারটি হেলিপ্যাড রাখা হয়েছে, যা জেলায় সর্বোচ্চ। এ ছাড়া কাটোয়া, মঙ্গলকোট, আউশগ্রাম এবং আসানসোল উত্তরের জন্য তিনটি করে হেলিপ্যাড নির্দিষ্ট করা হয়েছে। খণ্ডঘোষ, বর্ধমান দক্ষিণ, কালনা, বর্ধমান উত্তর, কেতুগ্রাম, রানিগঞ্জ ও বারাবনি কেন্দ্রের জন্য দু’টি করে হেলিপ্যাড রাখা হয়েছে। একটি করে হেলিপ্যাড রয়েছে রায়না, জামালপুর, মন্তেশ্বর, ভাতার, পূর্বস্থলী দক্ষিণ, গলসি, পাণ্ডবেশ্বর, জামুড়িয়া, দুর্গাপুর পূর্ব ও আসানসোল দক্ষিণের জন্য। সব দলের হাতেই এই তালিকা তুলে দেওয়া হয়েছে দিন কয়েক আগে।

তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ভোটের সময়ে সাধারণত হেলিকপ্টারে চড়েই প্রচারে যাতায়াত করেন। প্রায় সব জায়গাতেই স্থানীয় নেতারা চেষ্টা করেন মঞ্চের গা ঘেঁষে তাঁর হেলিকপ্টার নামার ব্যবস্থা করতে। কিন্তু হেলিপ্যাড নির্দিষ্ট হয়ে যাওয়ায় এ বার আর তা হবে না। তৃণমূলের এক জেলা নেতার বক্তব্য, ‘‘বাইরে হেলিপ্যাড হলে সেখান থেকে আবার গাড়িতে করে সভার মাঠে পৌঁছতে সময় নষ্ট হবে। ফেরার সময়েও তাই। আগের নিয়মই ভাল ছিল।’’ দলের জেলা শিল্পাঞ্চল সভাপতি উত্তম মুখোপাধ্যায় অবশ্য বলেন, ‘‘নির্বাচন কমিশনের নিয়ম মেনেই ব্যবস্থা করা হবে।’’ বিজেপির হয়ে গত বার এই জেলায় প্রচারে এসেছিলেন হেমামালিনী, রাজনাথ সিংহ, লালকৃষ্ণ আডবাণীরা। হেলিকপ্টারে চড়ে তাঁরা সভার মাঠেই নেমেছিলেন। দলের আসানসোল জেলা অন্যতম সম্পাদক তথা দুর্গাপুর পশ্চিম কেন্দ্রের প্রার্থী কল্যাণ দুবে বলেন, ‘‘ব্যস্ততার মাঝে নেতানেত্রীরা সময় বের করে প্রচারে আসেন। যত সময় বাঁচে তত ভাল। তবে কমিশনের নিয়ম তো মানতেই হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

helipad election assembly election 2016
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE