Advertisement
E-Paper

কলেজের আর্জি খারিজ, অধ্যক্ষ নিয়োগের নির্দেশ

দেড় বছর আগে হাটগোবিন্দপুরের ডঃ ভূপেন্দ্রনাথ দত্ত মহাবিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ নিরঞ্জন মণ্ডলকে রাজ কলেজের অধ্যক্ষ পদে যোগ দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল কলেজ সার্ভিস কমিশন। কিন্তু পরিচালন সমিতি ওই নির্দেশ না মেনে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৪ নভেম্বর ২০১৬ ০০:৫৯

দেড় বছর আগে হাটগোবিন্দপুরের ডঃ ভূপেন্দ্রনাথ দত্ত মহাবিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ নিরঞ্জন মণ্ডলকে রাজ কলেজের অধ্যক্ষ পদে যোগ দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল কলেজ সার্ভিস কমিশন। কিন্তু পরিচালন সমিতি ওই নির্দেশ না মেনে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়। এর মধ্যে রাজ কলেজের পরিচালন সমিতিতে বদল ঘটলেও নিরঞ্জনবাবুর অধ্যক্ষ পদে যোগ দেওয়া হয়নি। কলেজের পরিচালন সমিতির সভাপতি তথা জেলাশাসক সৌমিত্র মোহনও আদালতে জানান, নিরঞ্জনবাবুর অধ্যক্ষ হওয়ার যোগ্যতা নেই। কিন্তু বুধবার হাইকোর্টের বিচারপতি দেবাংশু বসাক জেলাশাসককে নির্দেশ দিয়েছেন, অধ্যক্ষ পদে যোগ দেওয়ার শিক্ষাগত যোগ্যতা রয়েছে নিরঞ্জনবাবুর। তাঁকে চার সপ্তাহের মধ্যে রাজ কলেজে অধ্যক্ষ পদে নিযুক্ত করতে হবে।

নিরঞ্জনবাবুর আইনজীবী এক্রামূল বারি জানান, তাঁর মক্কেলের শিক্ষাগত যোগ্যতা নেই বলে ওই কলেজের পরিচালন সমিতি আদালতের দ্বারস্থ হয়। উচ্চ শিক্ষা দফতরের তৎকালীন ডিপিআই (ডিরেক্টর অব পাবলিক ইনস্ট্রাকশন) নিমাই সাহার নির্দেশে পরিচালন সমিতির সভাপতি হন জেলাশাসক সৌমিত্র মোহন। তিনি নিজে থেকে মামলায় যুক্ত হয়ে পরিচালন সমিতিকে সমর্থন করেন। জেলাশাসক এ দিন বলেন, “আগে থেকেই মামলা চলছিল। আমি স্রেফ এগিয়ে নিয়ে গিয়েছি।” মামলার রায় শুনে তাঁর দাবি, “খুব ভাল খবর। নিরঞ্জনবাবু আগেই অধ্যক্ষ পদে নিযুক্ত হলে ভাল হতো।”

বর্ধমান জেলার ঐতিহ্যবাহী এই কলেজে দীর্ঘ কয়েক বছর স্থায়ী অধ্যক্ষ নেই। ২০১৩ সালে কলেজ সার্ভিস কমিশন গোটা রাজ্যের ১৫০টি কলেজের সঙ্গে রাজ কলেজেও অধ্যক্ষের পদ ফাঁকা আছে জানিয়ে বিজ্ঞপ্তি জারি করে। কলেজ সার্ভিস কমিশনের তালিকায় ১৭ নম্বরে প্রকাশিত হয় বর্ধমানের হাটগোবিন্দপুরের ডঃ ভূপেন্দ্রনাথ দত্ত স্মৃতি মহাবিদ্যালয়ের টিচার ইন চার্জ নিরঞ্জন মণ্ডলের নাম। বর্ধমান শহরের কানাইনাটশালের বাসিন্দা নিরঞ্জনবাবু স্বাভাবিক ভাবেই রাজ কলেজের অধ্যক্ষ পদে যোগ দিতে চান বলে কলেজ সার্ভিস কমিশনকে জানান। সেই মতে ২০১৫ সালের ২২ জুন কলেজ সার্ভিস কমিশনের সচিব রাজ কলেজের পরিচালন সমিতির সভাপতির কাছে নিরঞ্জনবাবুর নাম সুপারিশ করেন। সুপারিশপত্রে ‘বিশেষ দ্রষ্টব্য’ দিয়ে লেখা রয়েছে, আবেদনকারীকে মহামান্য আদালতের নির্দেশ মেনে চলতে হবে।

কিন্তু রাজ কলেজের তৎকালীন পরিচালন সমিতি নানা অজুহাতে নিরঞ্জনবাবুকে কাজে যোগ দিতে বাধা দিচ্ছিলেন বলে অভিযোগ। এরপরেই নিরঞ্জনবাবু রাজ্য প্রশাসন ও উচ্চ শিক্ষা দফতরে চিঠি পাঠান। তাতেও ফল না হওয়ায় তিনি হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন। এক্রামূলবাবু জানান, হাইকোর্ট পরিচালন সমিতির কাছে জানতে চেয়েছিল, কী কারণে নিরঞ্জনবাবুকে অধ্যক্ষ পদে নিয়োগ করা যাচ্ছে না? পরিচালন সমিতির কর্তা আদালতে জানান, অধ্যক্ষ হওয়ার শিক্ষাগত যোগ্যতা নিরঞ্জনবাবুর নেই। উল্টে কলেজ সার্ভিস কমিশনের সুপরিশেরও ব্যাখ্যা চান তাঁরা। ইতিমধ্যে গত বছর ডিরেক্টর অফ পাবলিক ইনস্ট্রাকশন পরিচালন সমিতিকে শো-কজ করে। তার বিরুদ্ধেও আদালতে যায় কলেজ পরিচালন সমিতি। দেড় বছরের মধ্যে জেলাশাসকের হস্তক্ষেপে তারকেশ্বর মণ্ডলের জায়গায় নিরুপমা গোস্বামী ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হন। আবার কলেজের শিক্ষক-শিক্ষাকর্মী, পরিচালন সমিতির সদস্যদের হাতে ‘অপমানিত’ হয়ে সভাপতি থেকে পদত্যাগ করেন সুভাষ সোম। সভাপতি হন জেলাশাসক নিজে। তবে নতুন পরিচালন সমিতিও কমিশনের সুপারিশ মানতে নারাজ ছিল। এক্রামূলবাবু জানান, বিচারপতি পরিচালন সমিতি ও জেলাশাসকের বক্তব্য খারিজ করে দিয়েছেন। ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ নিরুপমা গোস্বামী বলেন, “হাইকোর্টের নির্দেশ মানা হবে।”

High Court Bhupendra Nath Dutta college principal
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy