Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪
ক্ষোভ দুর্গাপুরে

ডিজিটাল রেশন কার্ড হাতে পাননি অর্ধেক গ্রাহকও

মার্চ থেকে শুধুমাত্র ডিজিটাল রেশন কার্ড থাকা গ্রাহকদের রেশন দেওয়ার নির্দেশ জারি করেছে রাজ্য। অথচ, দুর্গাপুর শহরে অর্ধেকেরও বেশি মানুষের হাতে সেই কার্ড পৌঁছায়নি, এই অভিযোগ তুলে মঙ্গলবার মহকুমাশাসকের কাছে স্মারকলিপি দিল সিপিএম।

নিজস্ব সংবাদদাতা
দুর্গাপুর শেষ আপডেট: ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ ০০:০০
Share: Save:

মার্চ থেকে শুধুমাত্র ডিজিটাল রেশন কার্ড থাকা গ্রাহকদের রেশন দেওয়ার নির্দেশ জারি করেছে রাজ্য। অথচ, দুর্গাপুর শহরে অর্ধেকেরও বেশি মানুষের হাতে সেই কার্ড পৌঁছায়নি, এই অভিযোগ তুলে মঙ্গলবার মহকুমাশাসকের কাছে স্মারকলিপি দিল সিপিএম। মহকুমাশাসক শঙ্খ সাঁতরা অভিযোগ খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন সংশ্লিষ্ট দফতরকে।

খাদ্য ও সরবরাহ দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, জাতীয় খাদ্য সুরক্ষা আইনের আওতার বাইরে থাকা যোগ্য পরিবারগুলির জন্য ২০১৫ সালের অগস্ট থেকে নাম নথিভুক্তিকরণ প্রক্রিয়া হাতে নেওয়া হয়। ২০১৬ সালের প্রথম দিকে গ্রাহকদের হাতে ডিজিটাল রেশন কার্ড আসতে শুরু করে। দুর্গাপুর পুরসভা এলাকায় এখন জনসংখ্যা প্রায় ৬ লক্ষ। সিপিএমের দাবি, দলের তরফে সমীক্ষা চালিয়ে দেখা গিয়েছে, অর্ধেকেরও বেশি মানুষের হাতে এখনও ডিজিটাল রেশন কার্ড পৌঁছয়নি।

এরই মধ্যে খাদ্য দফতরের শেষ নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, ডিজিটাল রেশন কার্ড না থাকলে ১ মার্চ থেকে কেরোসিন ছাড়া আর কোনও রেশন সামগ্রী মিলবে না। ফলে, রেশন বন্ধ হওয়ার আশঙ্কায় রয়েছেন বহু মানুষ। আবার, এলাকার রেশন দোকান বাদ দিয়ে বাসিন্দাদের অনেককেই দূরের কোনও দোকানে রেশন নিতে বলা হয়েছে। এর ফলে সেই সব গ্রাহকদের রেশন সামগ্রী আনতে যাতায়াত বাবদ ২০-২৫ টাকা খরচ করতে হবে।

এ দিন মহকুমাশাসকের কাছে সিপিএমের দুর্গাপুর ২ পূর্ব জোনাল কমিটি স্মারকলিপি দিয়ে দাবি করে, অবিলম্বে সময়সীমা প্রত্যাহার করতে হবে। এ ছাড়া সবথেকে কাছের রেশন দোকানে জিনিস পাওয়ার সুযোগ করে দিতে হবে। নতুন রেশন কার্ডের আবেদনের ফর্ম শুধু পুরসভার মাধ্যমে না দিয়ে পাড়ার রেশন দোকানের মাধ্যমে দেওয়ার দাবিও জানিয়েছে সিপিএম। মহকুমাশাসক বলেন, ‘‘কোনও গ্রাহক যাতে বঞ্চিত না হন সেটাই আমাদের লক্ষ্য। সংশ্লিষ্ট দফতরের আধিকারিকদের ইতিমধ্যে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।’’

ডিজিটাল রেশন কার্ড নিয়ে ইতিমধ্যে আসানসোলেও সরব হয়েছে সিপিএম। সোমবারই সেখানে পুরসভার অদূরে বড় সভা করে দলের তরফে দাবি করা হয়েছে, অধিকাংশ নাগরিকের হাতে এই কার্ড না পৌঁছেই নিয়ম চালু করা হচ্ছে। দুর্গাপুরে সিপিএমের আরও অভিযোগ, ডিজিটাল রেশন কার্ড বিলিতে পক্ষপাত হয়েছে। শাসকদলের ওয়ার্ডের তুলনায় বিরোধীদের হাতে থাকা ওয়ার্ডে‌ গ্রাহকেরা কম কার্ড পেয়েছেন। উদাহরণ হিসেবে দলের নেতারা দাবি করেন, তাঁদের হাতে থাকা ২৪ নম্বর ওয়ার্ডে ভোটার ১২১৯৭ জন। রেশন গ্রাহকের সংখ্যা আরও বেশি। অথচ, মাত্র ৮৯৪ জনের ডিজিটাল রেশন কার্ড তৈরি হয়েছে। একই ভাবে ৩৯ নম্বর ওয়ার্ডে ৫৩১০ ভোটারের মাত্র ৫৬১ জন এবং ৪০ নম্বর ওয়ার্ডে ৫৩০৮ ভোটারের ৮৮৪ জনের নামে ওই কার্ড তৈরি হয়েছে।

সিপিএম নেতা পঙ্কজ রায় সরকার বলেন, ‘‘শুরু থেকে আমরা রাজনৈতিক পক্ষপাতের অভিযোগ জানিয়ে এসেছি। এখন তা প্রমাণ হল।’’ অভিযোগ উড়িয়ে পুরসভার ডেপুটি মেয়র অমিতাভ বন্দ্যোপাধ্যায়ের পাল্টা বক্তব্য, ‘‘সিপিএমের এত দরদ দেখানোর দরকার নেই। দুর্গাপুরের মানুষ জানেন, আমরা তাঁদের পাশে আছি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Digital Ration Card consumers
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE