Advertisement
০৪ জুন ২০২৪

স্বাস্থ্যকেন্দ্রের ইটে ক্লাবঘর, নালিশ মারের

বাসিন্দাদের একাংশের অভিযোগ, ওই স্বাস্থ্যকন্দ্রের দেওয়াল ভেঙে এবং সংস্কারের জন্য পড়ে থাকা ইট, পাথর নিয়ে ১৫০ মিটার দূরেই একটি ক্লাবঘর তৈরি হচ্ছে বলে অভিযোগ।

অভিযোগ: ক্লাবঘরের সামনে পড়ে থাকা এই নির্মাণ সামগ্রীগুলিই স্বাস্থ্যকেন্দ্র থেকে আনা হয়েছে বলে নালিশ। —নিজস্ব চিত্র।

অভিযোগ: ক্লাবঘরের সামনে পড়ে থাকা এই নির্মাণ সামগ্রীগুলিই স্বাস্থ্যকেন্দ্র থেকে আনা হয়েছে বলে নালিশ। —নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কাটোয়া শেষ আপডেট: ০৪ নভেম্বর ২০১৭ ০৬:২০
Share: Save:

সংস্কারের কাজ চলা এক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের ইট খুলে তা দিয়ে ক্লাবঘর তৈরি হচ্ছে বলে অভিযোগ। আরও অভিযোগ, সেই কাজে বাধা দিতে গেলে স্থানীয় এক যুবককে মারধর ও তাঁর শিশুকন্যাকে খুনের হুমকি দেওয়া হয়েছে। কাটোয়ার খাসপুরের ঘটনা।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, কাটোয়া ২-এর খাসপুরে একটি মাঠের উল্টো দিকে রয়েছে প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র। বাসিন্দারা জানান, দীর্ঘ দিন ধরেই স্বাস্থ্যকেন্দ্রটি বেহাল। একতলা ভবনের তিনটি ঘরই ভেঙে যেতে বসেছে। অভিযোগ, চিকিৎসকের দেখাও প্রায় মেলেই না। স্বাস্থ্যকর্মীদের উপস্থিতিও অনিয়মিত। বাসিন্দাদের অভিযোগ, ন্যূনতম স্বাস্থ্য পরিষেবাও মেলে না এখান থেকে। দিন সাতেক আগে শুরু হয় স্বাস্থ্যকেন্দ্রের ভবন সংস্কারের কাজ।

তার পরেই বাসিন্দাদের একাংশের অভিযোগ, ওই স্বাস্থ্যকন্দ্রের দেওয়াল ভেঙে এবং সংস্কারের জন্য পড়ে থাকা ইট, পাথর নিয়ে ১৫০ মিটার দূরেই একটি ক্লাবঘর তৈরি হচ্ছে বলে অভিযোগ। স্থানীয় বাসিন্দা সুমিত মণ্ডল, বৈদ্যনাথ ঘোষদের অভিযোগ, ‘‘একটি মাটির ঘরে ক্লাবটি ছিল। ক্লাবটি পাকা করতে রাতের অন্ধকারে স্বাস্থ্যকেন্দ্রের পাথর, ইট নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।’’ এর ফলে এলাকার স্বাস্থ্য পরিষেবার হাল নিয়ে চিন্তায় বাসিন্দারা।

বাসিন্দাদের দাবি, বুধবার রাতে বিষয়টি নজরে আসতেই প্রতিবাদ করেন স্থানীয় যুবক, বছর পঁয়ত্রিশের দেবজ্যোতি মণ্ডল। বৃহস্পতিবার কাটোয়া থানায় অভিযোগ দায়ের করে তিনি জানান, মাঝ রাতে বেশ কয়েক জন বাড়িতে চড়াও হয়ে মারধর করে। দেবজ্যোতির আরও অভিযোগ, ‘‘আট বছরের মেয়েটাকেও খুনের হুমকি দিয়েছে ওরা। ভয়ে চিকিৎসা করাতে পারিনি। ঘর ছেড়ে আত্মীয়ের বাড়িতে রয়েছি।’’ স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, দেবজ্যোতিকে মার খেতে দেখে বাঁচাতে যান তাঁর আত্মীয় কচি মণ্ডল। অভিযোগ তাঁকেও মারধর করা হয়।

এই ঘটনায় পুলিশ-প্রশাসনের ভূমিকা নিয়েও ক্ষুব্ধ গ্রামবাসীরা। তাঁদের ক্ষোভ, এলাকায় ‘চেনা মুখ’ এমন কাজকর্ম করছে দেখেও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। যদিও পুলিশের দাবি, তদন্ত শুরু হয়েছে। স্বাস্থ্যকেন্দ্রটি রক্ষা করার জন্য মহকুমাশাসক (কাটোয়া) সৌমেন পালেরও দ্বারস্থ হয়েছেন বাসিন্দারা। বিষয়টি নিয়ে খোঁজ করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন মহকুমাশাসক।

যদিও কাটোয়া ২ পঞ্চায়েত সমিতির পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ সুব্রত মজুমদারের দাবি, ‘‘ওখানে কোনও ক্লাব ঘর আছে কি না, জানা নেই। ওই স্বাস্থ্যকেন্দ্রে এখনও ইটের গাঁথনির কাজই শুরু হয়নি। তাই ইট চুরির অভিযোগ ঠিক নয়। বাকি কিছু চুরি হলে সংশ্লিষ্ট ‘এজেন্সি’-কে জানাতে বলা হয়েছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Illegal Construction
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE