Advertisement
E-Paper

ক্ষুব্ধ ‘ঘরছাড়া’ কর্মীরা, তাতল বিজেপি অফিস

বাড়ি ফেরানো, পরিবারের পাশে থাকা বা ভাল খাবার দিতে ব্যর্থ বর্ধমান শহরের বিজেপি নেতারা। সে কারণেই রাগের বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা 

শেষ আপডেট: ০৩ জুন ২০২১ ০৬:৩৫
বর্ধমানে বিজেপি কার্যালয়ের সামনে পৌঁছল পুলিশ। বুধবার।

বর্ধমানে বিজেপি কার্যালয়ের সামনে পৌঁছল পুলিশ। বুধবার। নিজস্ব চিত্র।

ঘরছাড়াদের বাড়ি ফেরানো নিয়ে বৈঠকের পরেই, দলের জেলা (সদর) কার্যালয়ে কিছু কর্মী-সমর্থকের ঘেরাও-বিক্ষোভের মুখে পড়লেন বিজেপির দুই নেতা। জেলা নেতৃত্বের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। বিক্ষোভকারীদের দাবি, তাঁরা এক মাসের উপরে ঘরছাড়া। তাঁদের বাড়ি ফেরানো, পরিবারের পাশে থাকা বা ভাল খাবার দিতে ব্যর্থ বর্ধমান শহরের নেতারা। সে কারণেই রাগের বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে।

দলের জেলা সাংগঠনিক সহ-সভাপতি প্রবাল রায়ের দাবি, ‘‘প্রায় এক মাস ধরে কর্মী-সমর্থকেরা ঘরছাড়া। লুটপাট থেকে মহিলাদের নির্যাতন, নানা অত্যাচার হয়েছে। তাঁদের ক্ষোভের কথাই আমাদের জানাচ্ছিলেন।’’ বিজেপির একাংশের দাবি, দলের দফতরে এই ঘটনার পিছনে প্রাক্তন এক যুব নেতার হাত রয়েছে। তাঁর উস্কানিতে বর্ধমান দক্ষিণের বিজেপি প্রার্থী সন্দীপ নন্দী ও এই বিধানসভার আহ্বায়ক কল্লোল নন্দনকে বৈঠক শেষে ঘেরাও করা হয়। বিজেপির এক রাজ্য নেতার দাবি, ‘‘ওই যুব নেতার বিরুদ্ধে আগেও দলবিরোধী কাজের রিপোর্ট জমা পড়েছিল। সে জন্য তাঁকে নির্বাচনের কাজ থেকে দূরে রাখা হয়েছিল। জেলা কমিটির কাছে রিপোর্ট চাওয়া হয়েছে।’’

বিজেপি সূত্রে জানা যায়, দলের জেলা (বর্ধমান সদর) সভাপতি অভিজিৎ তা অসুস্থতার জন্য ছুটিতে রয়েছেন। তাঁর বদলে কার্যভার সামলাচ্ছেন সহ-সভাপতি প্রবালবাবু। তিনি মঙ্গলবার সকাল ১১টা নাগাদ বর্ধমানের ঘোরদৌড়চটির কার্যালয়ে ন’টি বিধানসভার প্রার্থী, আহ্বায়ক, সহ-আহ্বায়ক, মণ্ডল সভাপতিদের নিয়ে বৈঠক ডাকেন। ঘরছাড়াদের প্রকৃত অবস্থা জানা ও তাঁদের পরিবার কেমন আছে, সে কথা জানতেই বৈঠক। বিজেপি সূত্রে জানা যায়, এ দিন বৈঠকে থানা এলাকা ধরে একটি করে কমিটি গঠন করা হয়। তারা ঘরছাড়াদের বাড়ি ফেরানো ও তাঁদের বাড়ির লোকজনের সঙ্গে কথা বলে প্রয়োজনীয় সামগ্রী পাঠানোর ব্যবস্থা করবে।

বিজেপির দাবি, সংগঠনের বর্ধমান সদর এলাকায় প্রায় সাড়ে সাতশো মানুষ ঘরছাড়া রয়েছেন। জেলার অন্যতম সম্পাদক শ্যামল রায়ের দাবি, ‘‘বর্ধমান শহরের ২৩, ২৪, ১৯ নম্বরের কয়েকটি ওয়ার্ড থেকে আমাদের কর্মী-সমর্থকেরা ঘরছাড়া। তাঁরা ভীত ও সন্ত্রস্ত।’’ বিজেপি সূত্রের দাবি, দলের কার্যালয়ে প্রায় ১৩০ জন ‘ঘরছাড়া’ রয়েছেন। তাঁদের মধ্যে বর্ধমান শহরের বাসিন্দারাই এ দিন দুপুরে ওই দুই নেতাকে ঘেরাও করেন। বৈঠক শেষ হওয়ার পরেই প্রায় ৩০ জন বিজেপি নেতা সন্দীপবাবু ও কল্লোলবাবুকে একটি ঘরে ঘেরাও করে বিক্ষোভ দেখান। তাঁদের অভিযোগ, দলীয় কার্যালয়ে নিম্নমানের খাবার দেওয়া হচ্ছে। ভাঙা ঘর সারাতে আর্থিক সাহায্য, পরিবারগুলি যাতে খেতে পায় সে ব্যবস্থারও দাবি জানান তাঁরা। ওই দুই নেতা তাঁদের জানান, বাড়ি ফেরানোর জন্য তাঁরা প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ করছেন। অনেকেই বাড়ি ফিরেছেন। বাকিরাও ফিরবেন বলে আশ্বাস দেন। তবে এরই মধ্যে চিৎকার-চেঁচামেচি বেধে যায়। কার্যালয়ের সামনে জিটি রোডে লোকজন জড়ো হয়ে যায়। পুলিশের একটি টহলদার গাড়িও দাঁড়িয়ে পড়ে। প্রবালবাবু বিক্ষোভকারীদের সরিয়ে দেন।

দফতর থেকে বেরিয়ে সন্দীপবাবু বলেন, “এক মাস ধরে কর্মী-সমর্থকেরা ঘরছাড়া। পরিজনদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারছেন না। স্বাভাবিক ভাবেই তাঁদের মধ্যে ক্ষোভ জন্মেছে। তারই বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে। আমরা সহানুভূতির সঙ্গে তাঁদের পাশে রয়েছি।’’

এ দিনই দলের কার্যালয়ের সামনে পাওনাদারদের ‘ক্ষোভে’র মুখে পড়েন খণ্ডঘোষের বিজেপি প্রার্থী বিজন মণ্ডল। নির্বাচন প্রক্রিয়া শেষ হওয়ার পরেও ডেকরেটর-সহ বিভিন্ন পাওনাদারের টাকা মেটানো হয়নি বলে অভিযোগ। বিজনবাবুর দাবি, ‘‘যাঁর মাধ্যমে টাকা দেওয়ার কথা, তিনি দেননি বলে পাওনাদারেরা এসেছিলেন। এখন সব মিটে গিয়েছে।’’

BJP
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy