Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

Kanksa Murder Case: চেয়েছিলাম ভয় দেখাতে, ঈপ্সা মারা যাবে বুঝতে পারিনি, পুলিশি জেরায় বিপ্লবের চোখে জল

ঈপ্সার পরিবারের অভিযোগ, তাঁকে ওড়িশায় ফ্ল্যাট কিনতে টাকা না দেওয়ার জন্যই খুন করেছেন বিপ্লব। যদিও সেই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন তিনি।

পুলিশ হেফাজতে বিপ্লব পারিয়াদ।

পুলিশ হেফাজতে বিপ্লব পারিয়াদ। —নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
দুর্গাপুর শেষ আপডেট: ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২১ ১৫:৩৭
Share: Save:

স্ত্রীকে খুন করলেন কেন? পুলিশি হেফাজতে তদন্তকারীদের এই প্রশ্নের মুখে পড়ে ফুঁপিয়ে কেঁদে উঠছেন দুর্গাপুরের মামরাবাজার এলাকার একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের সহকারী ম্যানেজার বিপ্লব পারিয়াদ। স্ত্রী ঈপ্সা প্রিয়দর্শিনীকে খুনের দায়ে গত সোমবার তাঁকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। রবিবার রাতে স্ত্রীর গলায় কুকুরের বকলস পেঁচিয়ে খুন করেন বিপ্লব। সোমবার সকালে বাইক চালিয়ে কাঁকসা থানায় গিয়ে আত্মসমর্পণ করেন তিনি।

সোমবারই বিপ্লবকে তোলা হয়েছিল আদালতে। তাঁকে পাঁচ দিন পুলিশি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, বিপ্লবকে নিয়ে যেতেই তাঁকে ঘিরে কাঁকসা থানার লক আপে থাকা অন্যান্য বন্দিদের মধ্যে কৌতূহল দেখা দেয়। নতুন কোনও বন্দি গেলে সে কী অপরাধ করেছেন তা অন্যদের জানতে চাওয়াটাই সংশোধনাগার বা পুলিশি হেফাজতের চেনাছবি। বিপ্লবের ক্ষেত্রেও তাই হয়েছে। তবে পেস্তা সবুজ গেঞ্জি পরা, ঝোলানো গোঁফওয়ালা, লম্বাচওড়া, বছর পঁয়ত্রিশের বিপ্লব অন্যান্য বন্দির কাছেও রহস্যের কারণ হয়ে উঠেছেন।

তদন্তকারীদের একাংশ জানিয়েছেন, জেরার মুখে বার বার আবেগবিহ্বল হয়ে পড়েছেন বিপ্লব। স্ত্রীকে মারলেন কেন? এই প্রশ্নের উত্তরে কখনও তিনি জানিয়েছেন ঈপ্সার চাহিদার কথা। আদতে ওড়িশার কটকের বাসিন্দা বিপ্লব। তাঁর স্ত্রী ঈপ্সাও ওড়িশার বাসিন্দা। দেখাশোনা করে বিয়ে হয়েছিল তাঁদের। দেড় থেকে দু’মাস আগে তাঁরা কাঁকসায় ফ্ল্যাট ভাড়া নিয়েছিলেন। পুলিশকে বিপ্লব জানিয়েছেন, স্ত্রীর কথা শুনে তিনি গাড়ি কিনেছিলেন। গাড়ি চালানো শেখার আব্দার করেছিলেন ঈপ্সা। তাঁকে সেই ব্যবস্থাও করে দিয়েছিলেন। জেরায় উঠে এসেছে, বাইরে থেকে খাবার কিনে খাওয়া পছন্দ করতেন ঈপ্সা। তদন্তকারীরা তল্লাশি চালিয়ে জানতে পেরেছেন, ঈপ্সার শাড়ি, গয়না এবং প্রসাধনী সামগ্রীর কোনও কমতি ছিল না। স্ত্রীর নানা বায়নাক্কায় মেজাজ হারানোর কথা যেমন বলেছেন, তেমনই স্ত্রীর প্রতি আবেগও চেপে রাখতে পারেননি তদন্তকারীদের সামনে। জেরার সময় তিনি কেঁদেওছেন। তদন্তকারীদের তিনি বলেছেন, ‘‘ঈপ্সাকে আমি ভয় দেখাতে চেয়েছিলাম। ওকে মারতে চাইনি। কিন্তু এত তাড়াতাড়ি সব কিছু শেষ হয়ে যাবে বুঝতে পারিনি।’’ তদন্তকারীদের একাংশ জানিয়েছেন, বিপ্লবের কথায় স্পষ্ট, তিনি অনুতপ্ত।

আরও পড়ুন:

সোমবার থেকে পুলিশ হেফাজতে বিপ্লব। তাঁকে কয়েক বার জেরা করেছেন তদন্তকারীরা। ঈপ্সার পরিবারের অভিযোগ, তাঁকে ওড়িশায় ফ্ল্যাট কিনতে টাকা না দেওয়ার জন্যই খুন করেছেন বিপ্লব। যদিও সেই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন তিনি। তদন্তকারীদের একাংশের দাবি, জীবন যে আচমকা অন্য খাতে বইতে শুরু করেছেন তা বুঝতে পেরেই মনমরা হয়ে গিয়েছেন বিপ্লব।

এমন কাণ্ডে হতবাক বিপ্লবের সহকর্মীরাও। দুর্গাপুরের মামরাবাজার এলাকার ওই রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের কর্মীদের কাছে মিতবাক এবং কাজের লোক হিসাবেই পরিচিত বিপ্লব। সেই পরিচিত সহকারী ম্যানেজার কী ভাবে খুনি হয়ে গেলেন তা কল্পনাতেও আনতে পারছেন না তাঁরা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE