Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

মিড-ডে মিলের জন্য ‘কিচেন গার্ডেন’

গ্রীষ্মে প্রায় ফি দিন পাতে থেকেছে আমের চাটনি। এ ছাড়া পড়ুয়াদের বাড়িতেও দশটি করে পাকা আম পাঠানো হয়েছিল বলে স্কুল কর্তৃপক্ষ জানান। স্কুল সূত্রে জানা গিয়েছে, এই বাগানের পরিচর্যার দায়িত্বেও রয়েছে পড়ুয়ারাই। প্রতিটি শ্রেণির পড়ুয়াদের এক সপ্তাহ করে দায়িত্ব থাকে।

বাগানের কাজে বিজড়া হাইস্কুলের পড়ুয়ারা। ছবি: বিকাশ মশান

বাগানের কাজে বিজড়া হাইস্কুলের পড়ুয়ারা। ছবি: বিকাশ মশান

অর্পিতা মজুমদার
দুর্গাপুর শেষ আপডেট: ০৯ জুলাই ২০১৭ ১২:৩৫
Share: Save:

এঁচো়ড়ের ডালনা থেকে আমের চাটনি, সবই রয়েছে পাতে। সেই সব আনাজ, ফলের জোগান দিচ্ছে ‘কিচেন গার্ডেন’। আর সেই বাগানই দুর্গাপুর শহর থেকে কয়েক কিলোমিটার দূরের বিজড়া হাইস্কুলের মিড-ডে মিলের মেনুতে রকমারি স্বাদ আনছে।

স্কুলের প্রধান শিক্ষক কাজী নিজামুদ্দিন জানিয়েছেন, পঞ্চম থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত মিডে-ডে মিলের খাবার খায় ৩২০ জন। পড়ুয়াদের নিয়েই তৈরি হয়েছে ‘ইকো ক্লাব।’ তাদেরই হাতে তৈরি হয়েছে এই ‘কিচেন গার্ডেন’। সেখানে কুমড়ো, লাউ, পুঁই শাক, লাল শাক, ঢ্যাঁড়শ, ঝিঙে-সহ নানা আনাজের গাছ রয়েছে। এ ছাড়া কয়েক বছর আগে স্কুল চত্বরেই রোপণ করা হয় দশটি আম ও তিনটি কাঁঠাল গাছ। সেই বাগানের ফলনই মিড-ডে মিলের মেনুতে বৈচিত্র এনেছে বলে দাবি শিক্ষকদের।

এখনও পর্যন্ত, মিড-ডে মিলে সরকারি তালিকা অনুসরণের পাশাপাশি বাড়তি তরকারিও মিলছে। গ্রীষ্মে প্রায় ফি দিন পাতে থেকেছে আমের চাটনি। এ ছাড়া পড়ুয়াদের বাড়িতেও দশটি করে পাকা আম পাঠানো হয়েছিল বলে স্কুল কর্তৃপক্ষ জানান। স্কুল সূত্রে জানা গিয়েছে, এই বাগানের পরিচর্যার দায়িত্বেও রয়েছে পড়ুয়ারাই। প্রতিটি শ্রেণির পড়ুয়াদের এক সপ্তাহ করে দায়িত্ব থাকে।

হঠাৎ এমন বাগান তৈরির পরিকল্পনা কী ভাবে করা হল? স্কুলের এক শিক্ষক জানান, কয়েক বছর আগে স্কুল চত্বরেই নিজে থেকে একটি কুমড়ো গাছ গজিয়ে উঠেছিল। সেই গাছের কুমড়ো রান্নাও করা হতো। তখনই পড়ুয়া ও শিক্ষকদের একাংশ ঠিক করেন, স্কুল চত্বরেই যদি বাগান তৈরি করা যায়। প্রধান শিক্ষক বলেন, ‘‘পড়ুয়াদের পুষ্টির দিকটি যাতে কোনও ভাবেই উপেক্ষিত না হয়, তা নিশ্চিত করতেই এমন বাগান তৈরি হয়েছে। সকলে মিলে পরিচর্যার ফলে পড়ুয়াদের মধ্যে হাতে হাত মিলিয়ে কাজ করার মানসিকতাও তৈরি হচ্ছে।’’ এ ছাড়া পড়ুয়াদের মধ্যে পরিবেশ সচেতনতাও তৈরি হচ্ছে বলে দাবি শিক্ষকদের।

নিজেদের তৈরি বাগানের ফলন দেখে খুশি পড়ুয়ারাও। সপ্তম শ্রেণির কারিবুল, অষ্টম শ্রেণির নাসিরুদ্দিন, সীমা কুণ্ডুরা বলে, ‘‘পড়াশোনার পাশাপাশি বাগান তৈরি করে খুব ভাল লাগছে। নিজের হাতে লাগানো গাছের ফলন দেখলে মন ভরে যায়।’’

পশ্চিম বর্ধমানের অতিরিক্ত জেলাশাসক (উন্নয়ন) তথা দুর্গাপুরের মহকুমাশাসক শঙ্খ সাঁতরা বলেন, ‘‘এটা ভীষণ ভাল উদ্যোগ। অন্য স্কুলের জন্যও একটা উদাহরণ।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE