Advertisement
০৫ মে ২০২৪

লক্ষ্মী প্রতিমাতেই লাভ লক্ষ্মীদের

তবে গত কয়েক বছরে সরার বিক্রি তলানিতে ঠেকেছে। পিঙ্কু জানান, এক সময়ে লক্ষ্মীর সরা বিক্রি করে লাভ হতো ভালই। তবে বুধবার দুপুরে বার্নপুর বাজারে দাঁড়িয়ে তাঁর আক্ষেপ, ‘‘বছর দশেক আগেও সরার কদর ছিল। এখন তা না থাকায় অন্যের গড়া ঠাকুর এনে বিক্রি করতে হচ্ছে।’’

বিকিকিনি: বুধবার আসানসোলে। ছবি: শৈলেন সরকার

বিকিকিনি: বুধবার আসানসোলে। ছবি: শৈলেন সরকার

সুশান্ত বণিক
আসানসোল শেষ আপডেট: ০৫ অক্টোবর ২০১৭ ০১:০৮
Share: Save:

পুজোর প্রায় এক মাস আগে থেকে শুরু হয় প্রস্তুতি। লক্ষ্মী পুজোর মরসুমে প্রতিমা আর সরার পসরা সাজিয়ে বিক্রি করেন ওঁরা। আর তাতেই লক্ষ্মীলাভ হয় বাড়ির লক্ষ্মীদের। তবে প্রতিমার বিক্রি ভাল হলেও, গত কয়েক বছর ধরে সরার তেমন কদর নেই বলে দাবি আসানসোলের নানা এলাকার বাসিন্দা, নয়নতারা রক্ষিত, সবিতা দে, পিঙ্কু পালদের।

ছাঁচের সাহায্যে প্রতিমা তৈরি, রং করা, কুমোরপাড়া থেকে সরা এনে লক্ষ্মীর ছবি আঁকা— সবটাই একা হাতে সামলান হাটনরোডের নয়নতারা, বার্নপুরের পিঙ্কু, শ্যামবাঁধের সবিতারা। পুজোর আগের দিন, বুধবার শহরের ফুটপাথের ধারে প্রতিমা বিক্রি করতে করতে নিজেদের কথা বলেন তাঁরা। বছর সাতেক আগে কলেজের পড়াশোনায় ইতি নয়নতারার। তত দিনে অবশ্য প্রতিমা তৈরিতে হাতেখড়ি হয়ে গিয়েছে তাঁর, মহীশিলায় বাপের বাড়িতে। এখন তাঁর কাজে সাহায্য করেন স্বামী। নয়নতারা বলেন, ‘‘ছাঁচের লক্ষ্মীর চাহিদা বেশি। ফি বছর বিক্রি বাড়ছে। লাভও বেশ ভাল হয়।’’

তবে গত কয়েক বছরে সরার বিক্রি তলানিতে ঠেকেছে। পিঙ্কু জানান, এক সময়ে লক্ষ্মীর সরা বিক্রি করে লাভ হতো ভালই। তবে বুধবার দুপুরে বার্নপুর বাজারে দাঁড়িয়ে তাঁর আক্ষেপ, ‘‘বছর দশেক আগেও সরার কদর ছিল। এখন তা না থাকায় অন্যের গড়া ঠাকুর এনে বিক্রি করতে হচ্ছে।’’

কিন্তু কেন সরার কদর নেই? শিল্পীদের দাবি, সব খরচ পুষিয়ে একটি সরা কমপক্ষে ৭০ টাকায় বিক্রি হয়। সেখানে ছাঁচের তৈরি প্রতিমা মেলে আরও কুড়ি টাকা অতিরিক্ত দিলেই। তাই ক্রেতারা স্বাভাবিক ভাবেই ঝুঁকছেন প্রতিমার দিকেই।

প্রতিমার বিক্রি এ বার ভাল হলেও লাভের অঙ্ক খানিকটা কমেছে বলেই দাবি সবিতার। পথ দুর্ঘটনায় প্রতিবন্ধী স্বামী ও দুই মেয়েকে নিয়ে তাঁর সংসার। উৎসবের সময়ে প্রতিমা বিক্রি করে বছরের সংসার খরচ তোলেন তিনি। তাঁর আক্ষেপ, ‘‘জিএসটি-র চাপে প্রতিমার দাম বেড়েছে। বেড়েছে প্রতিযোগিতাও। সেই অনুপাতে ক্রেতা বাড়েনি।’’

বিক্রি চলতে চলতেই কপালে হাত ঠেকান পিঙ্কুরা। বলেন, ‘‘এ বার মায়ের কাছে প্রার্থনা, পরের বার বিক্রিটা যেন আরও ভাল হয়। তা হলে সংসারটা টিকবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE